Tmc organizes Iftar party in school during school hours: একদিকে চলছে স্কুল। সেই স্কুল চত্বরেই চলছে তৃণমূলের ‘ইফতার মাহফিল’র রান্না। স্কুল চত্বরে ম্যারাপ বেঁধে চলছে ইফতারের আয়োজন। দুপুর থেকেই একে একে আসতে শুরু করেছেন আমন্ত্রিত সদস্য থেকে ধর্মগুরুরা। বিরিয়ানির গন্ধে গোটা স্কুল মম করছে। ছাত্রীদের পঠন-পাঠনও শিকেয় ওঠার জোগাড়। এমনই ছবি দেখা গিয়েছে বীরভূমের রামপুরহাটে। এই স্কুলটি রামপুরহাটের বিধায়ক তথা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী কেন্দ্রের আওতাধীন।
রামপুরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আবার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদও বটে। সেই স্কুলেই স্কুল চলাকালীন চলছে ইফতারের রান্না। ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিল রামপুরহাট শহর তৃণমূল সংখ্যালঘু সেল। তবে স্কুল চলাকালীন এলাহি রান্নার আয়োজনের জেরে ছাত্রীদের পঠন-পাঠনের সমস্যা হয়েছে ছাত্রীদের। বিরিয়ানির গন্ধের স্বাদ পেয়ে পড়াশোনায় মন বসেনি পড়ুয়াদের। এছাড়াও মহিলাদের স্কুলে বহিরাগতদের আনাগোনা চলেছে অবাধে। বিষয়টি নিয়ে যারপরনাই ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের একাংশ।
তাঁদের দাবি, স্কুল চলাকালীন রাজনৈতিক দলকে কীভাবে স্কুলে ইফতারের অনুমতি দেওয়া হল? স্কুল চলাকালীন বড় বড় হাঁড়ি হুন্ডি, গ্যাস নিয়ে কীভাবে রান্নার কাজ হল? ক্ষোভ থাকলেও ভয়ে কিছু বলতে পারছেন না স্কুলের সহকারি শিক্ষকা। কবিতা সাহানা নামে ওই শিক্ষিকার কথায়, “আজকে আমি দায়িত্বে রয়েছি। আমি কোনও অনুমতি দিইনি। রান্না হচ্ছে দেখছি। শুনেছি ইফতার হবে সন্ধ্যায়। খেলাধুলোয় ছাত্রীদের কিছুটা সমস্যা হতে পারে।”
আরও পড়ুন- West Bengal News Live: 'খড়গপুরে ঠিকই করেছেন দিলীপ ঘোষ', BJP নেতার প্রশংসায় তৃণমূলের হুমায়ুন
স্কুল পরিদর্শক দেবব্রত ঘোষ বলেন, “সোমবার আমি ওই স্কুলে গিয়েছিলাম। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে স্কুলের কেউ কিছু আমাকে বলেননি। এমনটা হওয়ার কথা নয়। খোঁজ নিয়ে দেখছি”। রামপুরহাটের মহকুমা শাসক সৌরভ পাণ্ডে বলেন, “স্কুলের বিষয়টা পরিচালন সমিতি দেখেন। এনিয়ে কোনও অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
স্কুলের সভাপতি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সন্ধ্যায় একটা অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। কিন্তু রান্নার তো কোনও কথা ছিল না। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
আরও পড়ুুন- Unique Story: মাছ ব্যবসায়ী যখন প্রধান শিক্ষক, একাত্তরের 'যুবকে'র 'জানকবুল লড়াই' যেন রূপকথার গল্প
রামপুরহাট পুরসভার কাউন্সিলর সিপিএমের সঞ্জীব মল্লিক বলেন, “স্কুল চলাকালীন এইরকম অনুষ্ঠান মারাত্মক অপরাধ। ছাত্রীরা পড়াশোনায় মনোযোগ দেবে না রান্নার ঘ্রাণ নেবে সেটাই বুঝতে পারছি না। তারপরও ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা কীভাবে বলেন পঠনপাঠনে কোনও সমস্যা হয়নি? আসলে শাসকদলের ভয়ে সবাই জড়োসড়ো। এই সরকারের আমলে শিক্ষার দশা বেহাল হয়ে পড়েছে। পড়াশোনার মান তলানিতে ঠেকেছে।”
আরও পড়ুন- West Bengal News: জীবিত স্ত্রীর 'শ্রাদ্ধ' সেরে প্রতিবেশীদের 'এলাহি ভোজ' খাওয়ালেন স্বামী, কারণ জানলে তাজ্জব হবেন!
BJP-র বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “এখন রাজ্যে সার্কাস পার্টি চলছে। এখানে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। থাকলে স্কুল চলাকালীন একটি রাজনৈতিক দলকে এভাবে ইফতার করার জন্য জায়গা ছেড়ে দিত না। শুধুমাত্র সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কের স্বার্থে স্কুলের পঠনপাঠন শিকেয় তুলে ইফতার চলছে। আমরা এই ঘটনার নিন্দা করছি। সেই সঙ্গে নিরপেক্ষ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”