/indian-express-bangla/media/media_files/2025/04/12/gtEotFVGLLduQek0Niz7.jpg)
Purba Bardhaman News: তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ।
Tmc Panchayat member accused of extortion in Raina East Burdwan: তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের হতে হবে নম্র, মানবিক এবং সহানুভূতিশীল। খোদ দলের প্রধান 'সেনাপতি' অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন এই বার্তা। তারপরেও তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। এবার পূর্ব বর্ধমানের রায়নার নাড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের বহরমপুর গ্রামের তৃণমূল সদস্যের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে বেলাগাম তোলাবাজি চালানো সহ নানা অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে মুখ্যমন্ত্রী সহ জেলার পুলিশ কর্তাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রায়নায়। অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
রায়না ১ ব্লকের নাড়ুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এক প্রত্যন্ত গ্রাম বহরমপুর।এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই পেশায় কৃষিজীবী। এমন এক গ্রামের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য হলেন খোন্দকার সফিকুল আলম ওরফে আনন্দ সরকার। এই পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দা যে সব অভিযোগ এনেছেন তা চমকে দেওয়ারই মতো। অভিযোগকারীরা গত ৪ এপ্রিল তাঁদের স্বাক্ষর সম্বলিত সেই অভিযোগপত্র জেলাশাসক ও জেলার পুলিশ সুপারের দফতরে দাখিল করেছেন। একই অভিযোগপত্র তাঁরা ডাক যোগে দলের সুপ্রিমো সহ দলীয় নানা মহলেও পাঠিয়েছেন।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গ্রামে লাগামছাড়া তোলাবাজি চালাচ্ছেন পঞ্চায়েত সদস্য খোন্দকার সফিকুল আলম। গ্রামে উন্নয়ন কাজ করতে আসা ঠিকাদাররাও পঞ্চায়েত সদস্য খোন্দকার সফিকুল আলমের তোলাবাজির শিকার হচ্ছেন। সেই কারণে ঠিকাদাররা গ্রামে যে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজগুলি করছে, সেগুলি অতীব নিম্নমানের হচ্ছে। নিম্নমানের কাজ কেন হচ্ছে তা ঠিকাদারের কাছে জানতে চাওয়া হলে ঠিকাদাররা পঞ্চায়েত সদস্যের দিকেই আঙুল তুলছেন। ঠিকাদাররা পরিস্কার জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েত সদস্যরা জোর করে মোটা অঙ্কের টাকা চাইছেন, তাই কাজের গুণগত মান খারাপ হচ্ছে।
গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্য শুধু ঠিকাদারের কাছ থেকেই মোটা টাকা তোলা আদায় করেন, এমন নয়। গ্রামের কোনও গরিব বা সাধারণ মানুষ কোনও প্রয়োজনে পঞ্চায়েত সদস্য খোন্দকার সফিকুল আলমের কাছে গেলেও পঞ্চায়েত সদস্য ৫০০ -১০০০ টাকা দাবি করেন। এই পঞ্চায়েত সদস্য বহরমপুর গ্রামের গরিব মানুষের জমি কেড়ে নিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তিকে দখল করিয়ে দেন, এমন অভিযোগও করেছেন গ্রামবাসীরা। সারাদিন মদ্যপান করে থাকা পঞ্চায়েত সদস্য খোন্দকার সফিকুল আলম সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে রেখেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীরা।
আরও পড়ুন- Kolkata Weather Today: তুমুল বৃষ্টির দোসর দমকা হাওয়া! জেলায়-জেলায় ঝড়-জলের পূর্বাভাস
যদিও গ্রামবাসীদের আনা সব অভিযোগই মিথ্যা বলে দাবি করেছেন পঞ্চায়েত সদস্য খোন্দকার সফিকুল আলম। উল্টে তিনি বলেন, "এলাকায় থাকা মূল্যবান গাছ কেটে পাচার নিয়ে তিনি সরব হয়েছিলেন বলেই তাঁর নামে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমি একটা ভালো বাড়িও তৈরি করতে পারিনি। ত্রিপলের ছাউনির ঘরে পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটাই। আমি যদি অবৈধ উপায়ে মোটা টাকা কামাতাম, তাহলে আমিতো বিলাসিতা করে দিন কাটাতে পারতাম। আমি কোনও অসৎ পথে পা বাড়ায়নি বলেই বহরমপুর গ্রামের মানুষ এইনিয়ে দু’বার আমায় পঞ্চায়েত সদস্য হিসাবে নির্বাচিত করেছেন।" তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সফিকুল আলম দাবি করেছেন ।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের রায়না ১ ব্লকের সভাপতি বামদেব মণ্ডল বলেন, “বহরমপুর গ্রামের বাসিন্দারা প্রশাসনের দফতরে যে অভিযোগ দাখিল করেছেন, তার কপি আমাকেও দিয়েছে। ওই অভিযোগ পত্র আমি দলের উচ্চ মহলে পাঠিয়ে দিয়েছি। দলের উচ্চ নেতৃত্ব এ নিয়ে যা পদক্ষেপ করার করবে।" এদিকে গ্রামবাসীদের আনা এমন অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি BJP নেতৃত্ব। জেলা বিজেপি সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “জল ছাড়া মাছ যেমন বাঁচতে পারে না তেমনই অবৈধ উপায়ে টাকা না কামিয়ে তৃণমূলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরাও থাকতে পারেন না।"