গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে কোটি কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ রয়েছে রাজ্যের এই মন্ত্রী বিরুদ্ধে। কিন্তু, আপাতত দলের এই শীর্ষ পদাধিকারীর পাশেই থাকছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে, আইন ও আদালতেই ভরসা রাখছে দল। কোনওভাবেই এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে জোড়া-ফুল শিবির পথে নামছে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
পার্থবাবুর গ্রেফতারিতে অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের শাসক দল। বিরোধী বিজেপি, বাম, কংগ্রেস কেলেঙ্কারি দায় চাপাচ্ছে মমতা সরকার ও তৃণমূলের উপর। যার বিরুদ্ধে শনিবার তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, জতায়ী কর্মসমিতির সদস্য ফিরহাদ হাকিম ও দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও অরূপ বিশ্বাস সাংবাদিক বৈঠক করে পার্থ ইস্যুতে তৃণমূলের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তার আগে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের অফিসে বৈঠক করেন এই চার নেতা।
আরও পড়ুন- পার্থর পর গ্রেফতার অর্পিতা, ‘আমি অন্যায় করিনি-বিজেপির চাল’, দাবি ‘মন্ত্রী-সাথী’র
তৃণমূলের অবস্থান জানাতে গিয়ে কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'এক মহিলার ফ্ল্যাট থেকে টাকা উদ্ধার হয়ছে। যার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। যার বাড়ি থেকে ওই টাকা উদ্ধার হয়েছে তিনি তৃণমূলের কেউ নন, দলের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই।'
তৃণমূলের রাজ্য সাদারণ সম্পাদকের সংযোজন, 'তৃণমূল কংগ্রেস আইন ও আদালতের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখে। আদালতে বিষয়টি গিয়েছে। এর আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি সিবিআই ইডির তদন্ত দীর্ঘমেয়াদী হয়। এই টাকার উৎস কী যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, পারলে ১-২ মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে আদালতকে জানাতে হবে। এছাড়া, নোটবন্দির পরও এত কালো টাকা কীকরে এল সেটা দেখা দরকার। বিচারে যদি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে সেগুলো সত্যি হলে তৃণমূল কংগ্রেস দলগত ভাবে ও তৃণমূল সরকার যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।'
আরও পড়ুন- পার্থর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে দিলীপের প্রশ্ন, মুখ খুললেন মোনালিসা
বিরোধীদেরও নিশানা করেন কুণাল। বলেন, 'সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেসের কোনও কথা বলা সাজে না। ভুরিভুরি অভিযোগ এদের বিরুদ্ধে রয়েছে। তৃণমূলের সমস্ত কর্মী-সমর্থক শুভানুধ্যায়ীদের বলছি, তৃণমূল অটুট থাকবে। বিজেপি চক্রান্তের রাজনীতি করছে। সিপিএম ও কংগ্রেস তাদের হয়ে প্রচার করছে।'
এরপর মুখ খোলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেছেন, '২ মাস আগে কোর্ট তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছে। যদি এই ২ মাসের মধ্যে পার্থদা ওয়াশিং মেশিনে ঢুকে যেত তাহলে তদন্ত হত না। তৃণমূলে ছিল তাই তার বিরুদ্ধে কুৎসা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমি তৃণমূলে ছিলাম বলে আমাকে জেলে যেতে হয়েছিল। বিজেপিতে ঢুকে গেল তাকে তদন্তের মুখোমুখি হতে হয়নি। বিজেপিতে গেলে সাধু, তৃণমূলে থাকলে চোর। এজেন্সিগুলোকে বিজেপি কাজে লাগাচ্ছে। অন্যায় হলে শাস্তি, কিন্তু ষড়যন্ত্র হলে প্রতিরধ হবে।'
আরও পড়ুন- কোটি কোটি টাকার উৎস কী? কীভাবে হত লেনদেন? জেরায় বিস্ফোরক অর্পিতা
'২১ জুলাইয়ের ঐতিহাসিক সাফল্যকে বিজেপি ভয় পেয়েছে। কারও সঙ্গে কারও ছবি দেখিয়ে জুড়ে দেওয়া এটা ঠিক হচ্ছে না।' এই ইস্যুতে বিজেপিকে বিঁধতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে নীরব মোদীর ছবিও দেখান তৃণমূলের চার শীর্ষ নেতৃত্ব।