ট্রাম্পের 'ফার্মা ট্যারিফ বোমা'র বিরাট 'বিস্ফোরণ',ধস শেয়ার বাজারে, কয়েক মিনিটের মধ্যেই ৪ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি

এবার আমেরিকায় আমদানি করা ওষুধের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, “যে সব সংস্থা আমেরিকায় ইতিমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে বা কোম্পানি নির্মাণের পর্যায়ে রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এই কর আরোপ হবে না।

এবার আমেরিকায় আমদানি করা ওষুধের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, “যে সব সংস্থা আমেরিকায় ইতিমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে বা কোম্পানি নির্মাণের পর্যায়ে রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এই কর আরোপ হবে না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
"Donald Trump, Nobel Peace Prize 2025, Trump Nobel Peace Prize 2025, Israel Iran ceasefire, Buddy Carter Trump nomination, Trump diplomacy, Trump Iran Israel peace, Nobel Peace Prize nominees, Trump Middle East peace, Trump foreign policy success, Trump international diplomacy"

ট্রাম্পের 'ফার্মা ট্যারিফ বোমা'র বিরাট 'বিস্ফোরণ'

এবার আমেরিকায় আমদানি করা ওষুধের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, “যে সব সংস্থা আমেরিকায় ইতিমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে বা কোম্পানি নির্মাণের পর্যায়ে রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এই কর আরোপ হবে না। বাকি সব ব্র্যান্ডেড ওষুধ আমদানিতে ১০০% শুল্ক কার্যকর হবে।” আগামী ১ অক্টোবর থেকেই নয়া এই শুল্ক কার্যকর হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

Advertisment

ভারতের উপর বড় প্রভাব

ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম 'জেনেরিক ওষুধ' রপ্তানিকারক দেশ। ভারতের ওষুধ রপ্তানির ৩১% যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ২০২৪ সালে ভারত প্রায় ৮.৭৩ বিলিয়ন ডলার (৭৭,০০০ কোটি টাকা) মূল্যের ওষুধ আমেরিকায় রপ্তানি করেছে। শুধু ২০২৫ সালের প্রথম ছ’মাসেই রপ্তানি হয়েছে ৩.৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ভারতের ডক্টর রেড্ডিজ, সান ফার্মা, লুপিন, জাইডাস, অরবিন্দ ফার্মার মতো সংস্থাগুলি শুধু জেনেরিক নয়, কিছু ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডেড ওষুধও মার্কিন বাজারে সরবরাহ করে। নতুন শুল্ক আরোপ হলে ভারতীয় সংস্থাগুলি চাপে পড়বে, কারণ মার্কিন বাজার থেকেই তারা রাজস্বের ৩০-৫০% আয় করে থাকে। 

আরও পড়ুন-পুজোর মুখেই বিরাট অভিযান, গ্রেফতার পাক গুপ্তচর, কীভাবে তথ্য পাচার জানলে চমকে যাবেন

Advertisment

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১০০% ওষুধ শুল্কের ঘোষণার প্রভাব স্পষ্টভাবে পড়তে শুরু করেছে ভারতীয় শেয়ার বাজারে। টানা ষষ্ঠ দিনের মতো বাজারে পতন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছে ফার্মাসিউটিক্যাল শেয়ারে। সান ফার্মা থেকে ডক্টর রেড্ডি’স—প্রায় সব বড় সংস্থার শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

বাজার খোলার পর থেকেই ধস নামে সেনসেক্স ও নিফটিতে। বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক সেনসেক্স ৩৮০ পয়েন্টের বেশি কমে দাঁড়িয়েছে ৮০,৭৭৮.০২–এ। এক পর্যায়ে সূচক ৪৫১ পয়েন্ট নেমে পৌঁছায় ৮০,৭০৮.৩৪–এ। একই সময়ে  ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিফটি ৫০ সূচক ১১০ পয়েন্ট পড়ে যায় ২৪,৭৭৯.৬৫–এ। ট্রেডিং সেশনে নিফটি নেমে গিয়েছিল সর্বনিম্ন ২৪,৭৫৯ পয়েন্টে, যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় ১৩২ পয়েন্ট কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, সেশনের মধ্যে সূচকের পতন আরও গভীর হতে পারে।

ফার্মা স্টকের পতন আরও বেশি। বিএসই হেলথকেয়ার সূচক ১,০৪৩ পয়েন্ট বা ২.৩৭% কমে লেনদেন করছে ৪২,৯৪৪.১৭–এ। সান ফার্মার শেয়ারদর নেমেছে ২%–এর বেশি, ডক্টর রেড্ডি’স–এর শেয়ার কমেছে ১%–এরও বেশি। বায়োকন ২.৩৭% নেমেছে। বাজার পতনে  বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির পরিমাণটাও বিশাল। বিএসই–র তথ্য অনুযায়ী, আগের দিনে যেখানে বাজার মূলধন ছিল ৪৫৭.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা, সেখানে এদিন ট্রেডিং সেশনের মধ্যে তা নেমে আসে ৪৫৩.৪৪ লক্ষ কোটির নিচে। অর্থাৎ, একদিনেই প্রায় ৪ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রেডিং সেশন চলাকালীন এই ক্ষতি আরও বাড়তে পারে।

আরও পড়ুন-নিয়োগ দুর্নীতির সব মামলায় জামিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের, পুজোর আগে জেলমুক্তি?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি নিয়ে সরব হলেন শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী) নেত্রী ও  রাজ্যসভার সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী। প্রিয়াঙ্কার ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্যে স্পষ্ট বার্তা, বৈশ্বিক বাণিজ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তুতি নেই। তাঁর পোস্ট ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ তাঁর বক্তব্যের সমর্থন করেছেন, আবার অনেকেই জেনেরিক ওষুধ ও ভারতীয় রপ্তানির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, আগামী ১ অক্টোবর, ২০২৫ থেকে ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্টকৃত ওষুধের আমদানিতে ১০০% শুল্ক আরোপ করা হবে। তবে আমেরিকায় নতুন উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করছে এমন সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে এই কর প্রযোজ্য হবে না। এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য দেশিয় উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজেট ঘাটতি কমানো বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প।

ভারতীয় ওষুধ শিল্পের উপর এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে। বর্তমানে ভারতের মোট ওষুধ রপ্তানির প্রায় ৩০–৩৫% যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, যার মূল্য প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার। সান ফার্মা, সিপলা, ডক্টর রেড্ডি’স, লুপিন ও বায়োকনের মতো বড় কোম্পানিগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

আরও পড়ুন-আজও বৃষ্টির দাপট দেখবে বাংলা! ষষ্ঠী থেকে দশমী, কেমন থাকবে আবহাওয়া? জানুন লেটেস্ট আপডেট

ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডা বিদেশি সংস্থাগুলিকে আমেরিকার মাটিতে বিনিয়োগে বাধ্য করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় ওষুধ শিল্পের জন্য এটি এক বড় সংকেত—বাজার টিকিয়ে রাখতে হলে দ্রুত কৌশলগত পরিবর্তন আনা জরুরি। এই প্রেক্ষাপটেই প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীর মতো সাংসদরা বিষয়টি তুলে ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছেন। 

Donald Trump Trump