হাসপাতালেই মহিলা চিকিৎসককে সরাসরি ধর্ষণের হুমকি, শোরগোল কাণ্ডে উত্তাল বাংলা, পুলিশের জালে কে? জানলে চমকে যাবেন

চিকিৎসকের স্বামীর দাবি, অভিযুক্ত বাবুলাল নামে এক ট্র্যাফিক হোমগার্ড চিকিৎসকের হাত মুচড়ে দেয় এবং নিজেকে সিনিয়র পুলিশ অফিসার বলে পরিচয় দেয়।

চিকিৎসকের স্বামীর দাবি, অভিযুক্ত বাবুলাল নামে এক ট্র্যাফিক হোমগার্ড চিকিৎসকের হাত মুচড়ে দেয় এবং নিজেকে সিনিয়র পুলিশ অফিসার বলে পরিচয় দেয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
uluberia-junior-doctor-assault-rape-threat-howrah-hospital-security

কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণের হুমকি হাসপাতালেই, কে গ্রেফতার জানেন?

উলুবেড়িয়ায় এক জুনিয়র মহিলা চিকিৎসককে হেনস্থা ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে তোলপাড় বাংলা। অভিযুক্ত ট্র্যাফিক হোমগার্ড বাবুলাল ও তার দুই সহযোগীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন ওই চিকিৎসক।  

Advertisment

আরও পড়ুন- দীপাবলির পর দিল্লির বাতাসের মান “অত্যন্ত খারাপ”, NCR-এও বিপজ্জনক পরিস্থিতি

উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে হুমকির ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। ঘটনা প্রসঙ্গে চিকিৎসকের এক আত্মীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, সোমবার রাতে উলুবেড়িয়া শংকরপুরের একটি সরকারি হাসপাতালে প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন এক রোগী। পরীক্ষা চলাকালীন রোগী আচমকা চিকিৎসককে লাথি মারেন। তবুও কর্তব্যে অটল থেকে চিকিৎসক রোগীর চিকিৎসা চালিয়ে যান। কিন্তু পরে হাসপাতালে উপস্থিত রোগীর আত্মীয়দের একটি দল চিকিৎসকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন চিকিৎসককে ঘিরে হুমকি দিতে শুরু করে — “বাইরে বেরোলেই দেখে নেওয়া হবে”, এমনকি ধর্ষণের হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ।

Advertisment

আরও পড়ুন- বারাসাতের কালী পুজো: মাতৃ প্রতিমার সোনার গহনার ঝলক দেখেছেন সবাই

চিকিৎসকের পরিবারের দাবি, অভিযুক্ত শেখ বাবুলাল নামে এক ট্র্যাফিক হোমগার্ড চিকিৎসকের হাত মুচড়ে দেয় এবং নিজেকে সিনিয়র পুলিশ অফিসার বলে পরিচয় দেয়। সে দাবি করে, “আমায় কেউ ধরতে পারবে না”, এমনকি রাজনৈতিক যোগের কথাও তোলেন।  চিকিৎসকের স্বামী আরও জানান, “ওই সময় হাসপাতালে কোনও নিরাপত্তাকর্মী ছিল না। সহকর্মীরা এগিয়ে এসে আমার স্ত্রীকে বাঁচিয়েছেন। এখনো তিনি আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।”অভিযোগ, বাবুলাল ওই সময় চিকিৎসককে অশ্লীল মন্তব্যও করে। এদিকে এই ঘটনার জেরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্যজুড়ে। চিকিৎসক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ফের। সম্প্রতি আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদের ঢেউ ওঠার পর এই ঘটনায় ফের চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।চিকিৎসকের স্বামীর কথায়, “কেউ যেন আমার স্ত্রীর মতো পরিস্থিতির মুখে না পড়ে।”

আরও পড়ুন- আরজিকর কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নির রহস্যমৃত্যু, নতুন জটে পুলিশ

আক্রান্ত চিকিৎসক জানান, “ওয়ার্ডের বাইরে মহিলা নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। কিন্তু ওরা তাদেরও হুমকি দেয়।” অভিযুক্তদের মধ্যে এক ট্র্যাফিক হোমগার্ডকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় মোট দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এদিকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে চিকিৎসক মহল। সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই ঘটনায় অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবায় চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দিনে দিনে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। উলুবেড়িয়া ঘটনার অপরাধীরা যদি শাস্তি না পায়, তা হলে ভবিষ্যতে অপরাধীরা আরও সাহস পাবে।”

আরও পড়ুন-ফের সাগরে ফণা তুলছে গভীর নিন্মচাপ, কলকাতাতে ঘূর্ণিঝড়? জানুন লেটেস্ট ওয়েদার আপডেট

আরজি কর মেডিকেলের ২০২৪ সালের আগস্টে তরুণী চিকিৎসককে  ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের পর রাজ্যজুড়ে চিকিৎসক নিরাপত্তা ইস্যুতে ব্যাপক প্রতিবাদ হয় রাজ্য জুড়ে। কিন্তু উলুবেড়িয়ার এই ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠছে — এক বছরেরও বেশি সময় পরে কেন এখনও সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা নিরাপত্তাহীন? এই ঘটনায় আক্রান্ত চিকিৎসক বলেন, “আমাকে মারার পর দলের মহিলারাই ওদের পালাতে সাহায্য করে। একজন নিজেকে রাজনৈতিক দলের নেতা ও পুলিশ অফিসার বলে দাবি করে।”

আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখ অনিকেত মহাতো বলেন, “এই ঘটনায় স্পষ্ট, রাজ্য সরকার এখনও চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। অভিযুক্তদের সঙ্গে শাসকদলের ঘনিষ্ঠতা থাকলে বিচার কতদূর এগোবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।”

আরও পড়ুন- তৃণমূলের প্রবল আপত্তি উড়িয়ে বাংলায় কার্যকর হওয়ার পথে SIR, দিল্লিতে জরুরি বৈঠকে কমিশন

উলুবেড়িয়ার হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহ কাণ্ডে আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই নিয়ে মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ। ধৃত যুবকের নাম শেখ সম্রাট।

news of west bengal RGKar medical college & hospital Doctor Uluberia