Strange News: বাংলার গ্রামগঞ্জে এমন এমন রীতিনীতি বা প্রথা রয়েছে যা শুনলে আজব মনে হবে। পূর্ব মেদিনীপুরের নানা জায়গায় অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার "বড়ির বিয়ে" অনুষ্ঠানে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন মানুষজন। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বাইরে কাজে থাকা লোকজন বাড়ি ফিরে এসে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আনন্দোৎসবে সামিল হন। যুগ-যুগ ধরে এই অনুষ্ঠান চলে আসছে।
প্রথা অনুযায়ী সকাল থেকে উপোস থেকে বাড়ির কূল দেবী লক্ষ্মীপুজো করার পর দেওয়া হয় "বড়ির বিয়ে"। পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের বিশ্বাস, অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার বড়ির বিয়ে দিলে সংসারে মঙ্গল হয়। পাশাপাশি বড়ির বিয়ে দেওয়ার পর বাড়ির ছেলে, মেয়েদের বিয়ে ঠিক করলে তাদের বিবাহিত জীবনও নাকি সুখের হয়।
মহিষাদলের বাসিন্দা মণিকা মল্লিক বিগত ৫০ বছর ধরে বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান করে চলেছেন। মণিকা মল্লিক বলেন, "অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার নতুন বিউলির ডাল বেটে বড়ি দিতে হয়। সেই বড়ি দিয়ে তৈরি বর-কনের বিয়ে দিতে হয়। তারপর বড়ি দেওয়া শুরু করতে হয়। আগে শাশুড়ি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন, এখন আমি করি। বড়ি দিয়ে বর-কনে সাজিয়ে বিয়েতে বরযাত্রী, কনে যাত্রীর দল থাকে। সেগুলিও করা হয় বড়ি দিয়ে। বিয়ের অনুষ্ঠানের মতো এখানে ধান, দুর্বা, তুলসি পাতা, সিঁদুর, প্রদীপ জ্বালানো, শঙ্খ বাজনোর রীতি আছে। আমি ৫০ বছর ধরে এই প্রথা মেনে আসছি। তার বহু আগে থেকেই পরিবারে এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে।" বৈদ্যনাথ মল্লিক বলেন, "বড়ি আমাদের কাছে শুভ। তাই বড়ি দিয়েই এই বিয়ের অনুষ্ঠান করা হয়। সংসারের উন্নতি, সংসারের মঙ্গল কামনায় এই বড়ির বিয়ে দেওয়া হয়। পূর্ব পুরুষ ধরে এই অনুষ্ঠান চলে আসছে।"
সাধারণত পূর্ব মেদিনীপুরকে বড়ির জেলা বলা হয়। এখানকার মহিষাদল, তমলুক, হলদিয়ার নকশা বড়ির খুবই খ্যাতি আছে। সেই বড়ির জেলায় মহিষাদলের তেরপেখ্যা, ঘাগরা, রামবাগ সহ কয়েকটি গ্রামে অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার বড়ির বিয়ে দেওয়ার রীতি রয়েছে। মানুষদের বিশ্বাস অগ্রহায়ন মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার বড়ির বিয়ে দিলে সংসারে মঙ্গল হয়। তাছাড়া বড়ির বিয়ে দেওয়ার পর বাড়ির ছেলে মেয়েদের বিয়ে ঠিক করলে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হয়। পূর্ব পুরুষদের সেই রীতি আজও পালন করে আসছে এই সব গ্রামের বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন- spoiled paddy: অতিবৃষ্টির জের, পচন রোগে ২ হাজার একর জমির ধান নষ্ট