/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/17/subal-soren-death-2025-08-17-11-08-48.jpg)
এসএসসি চাকরিহারা সুবল সোরেনের মৃত্যু এনিয়ে মমতাকে নিশানা করলেন প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
Abhijit Gangopadhyay : কেন এত কষ্ট দিলেন? আমার স্বামীকে কেন কেড়ে নিলেন? ছোট বাচ্চাকে নিয়ে কী করে থাকবো? দেহ বাড়িতে পৌঁছাতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন মৃত চাকরিহারা শিক্ষকের স্ত্রী। শুক্রবার সকালে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় এসএসসি চাকরিহারা সুবল সোরেনের। এবার এনিয়ে মমতাকে নিশানা করলেন প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "পরিবার সঠিক অভিযোগ করেছেন, এই চাকরিহারা শিক্ষকের মৃত্যুর দায় মুখ্যমন্ত্রীকেই নিতে হবে। চাকরি দুর্নীতিতে বিপর্যস্ত মমতা। সঠিক সময়ে যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করলে এই মৃত্যু ঠেকানো যেত"।
আরও পড়ুন- ধেয়ে আসছে ভয়ঙ্কর দুর্যোগ! জেলায় জেলায় তুমুল বৃষ্টি, নিন্মচাপের প্রভাবে উত্তর থেকে দক্ষিণে জারি সতর্কতা
যোগ্য শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রাক্তন বিচারপতি বলেন, "কেন যোগ্য অযোগ্য তালিকা প্রকাশ করছেন না? মমতা ব্যানার্জী যে জালিয়াতি করেছেন তা ধরা পড়েছেন। তার শোধ তুলছেন যোগ্য প্রার্থীদের উপর। যিনি মারা গেছেন তিনি একজন আদিবাসী শিক্ষক। তিনি যোগ্য বলেই মনে হচ্ছে। মমতা ব্যানার্জী কী চাইছেন? এভাবেই যোগ্যরা মারা যাক। তার স্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ি করেছেন আমি মনে করি সঠিক ভাবেই মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ি করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী কাছে প্ল্যান A,B, Z অনেক কিছু আছে, আগে যোগ্যদের তালিকাটা প্রকাশ করুন। আপনারা কিছুই করবেন না, মাঝখান থেকে একের পর এক যোগ্য শিক্ষক এভাবে প্রাণ হারাবেন। আমরা কল্পনাই করতে পারি না এভাবে একটা রাজ্য চলছে"।
আরও পড়ুন- মহাকাশে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, ইতিহাস গড়ে দেশে ফিরলেন শুভাংশু, আজই মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ
উল্লেখ্য স্বাধীনতা দিবসের সকালেই মৃত্যু হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার ৩৫ বছরের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক সুবল সোরেনের। গত মঙ্গলবার হঠাৎ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। তাঁকে প্রথমে ডেবরার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে কলকাতার ইএম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করা হয়। শুক্রবার দুপুর নাগাদ তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই সহকর্মীরা হাসপাতালে ভিড় জমান।
অভিযোগ ওঠে, পুলিশ মৃতদেহটি দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্সে করে সরিয়ে নিতে চাইছিল। প্রাক্তন শিক্ষকরা এই অভিযোগে রাস্তা অবরোধ করেন। বিকেল গড়াতেই ইএম বাইপাস জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদী শিক্ষকদের দাবি, “গত বছর আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ধর্ষণ-খুন কাণ্ডের পরও একইভাবে পুলিশ মৃতদেহ সরানোর চেষ্টা করেছিল। আজও তাই করা হল।”
আরও পড়ুন- আবহাওয়ার রুদ্ররূপ! ধেয়ে এল ভয়ঙ্কর দুর্যোগ, মৃত্যুমিছিলে হাহাকার
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে কড়া আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “যদি রাজ্য সরকার হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে তৎকালীন দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থীদের তালিকা জমা দিত, তাহলে আজ এতজন চাকরি হারাত না, সুবল সোরেনেরও মৃত্যু হত না।”রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারও প্রশ্ন তোলেন, “পুলিশ এত তাড়াহুড়ো করছিল কেন? কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা যেত না? রাজ্য সরকার দায় এড়াতে পারে না।”
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসে সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে। এর জেরেই ২৫,৭৫৩ জন চাকরি হারান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, নতুন করে ৪৪,২০৩ পদে নিয়োগ হবে এবং তা ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। কিন্তু চাকরি হারা প্রার্থীরা নতুন পরীক্ষায় বসতে অস্বীকার করে আন্দোলনে নামেন।
আরও পড়ুন-বিরাট দুর্ঘটনা এড়াল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান, অবতরণের সময় একদিকে হেলে পড়লেন যাত্রীরা, তুমুল চাঞ্চল্য
সুবল সোরেন সাত বছর ধরে শিক্ষকতার পেশায় যুক্ত ছিলেন। চাকরি হারানোর পর থেকেই তিনি মানসিক চাপে ভুগছিলেন বলে দাবি করেছেন তাঁর স্ত্রী। তাঁর সহকর্মীরা ক্ষোভ উগরে বলেন, “আমাদের মৃত্যু সার্টিফিকেট লেখা হয়ে গিয়েছে গত ৩ এপ্রিলেই। এখন আমরা একে একে সংগ্রহ করছি। সুবল সোরেন প্রথম শহিদ।”