Youth arrested for cheating in mangalkot: চানাচুর কারখানার মালিকের ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিতে 'গল্প' ফেঁদেছিলেন কর্মচারী। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশ তদন্তে নামতেই ওই কর্মচারীর রচিত গল্পের পর্দা ফাঁস হয়ে যায়। টাকা হাতানোর দায়ে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট থানার পুলিশ ওই কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম গৌতম রায়। বছর ৩০-এর ওই যুবকের বাড়ি কাটোয়ার সুড্ডা গ্রামে। পুলিশের দাবি, ধৃতের বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ ধৃতকে পেশ করে কাটোয়া মহকুমা আদালতে। বিচারক তাকে ২ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চানাচুর কারখানায় 'ডেলিভারি বয়' হিসেবে কর্মরত ছিলেন গৌতম রায়।
প্রায় ৯ বছর ধরে তিনিই কারখানার মালপত্র মোটরভ্যানে করে বিভিন্ন দোকানে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে আসছিলেন। মালিকের পাওনা টাকা দোকানগুলি থোকে তিনিই সংগ্রহ করতেন।
কারখানায় পৌঁছে সেই টাকা তিনিই মালিকের হাতে তুলে দিতেন। এভাবেই এতদিন চলে আসছিল। কিন্তু দিন কয়েক আগেই ছন্দপতন ঘটে।
কাটোয়ার চানাচুর কারখানা থেকে নেওয়া মালপত্র ডেলিভারি দিয়ে তিনটি দোকান থেকে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করে মোটরভ্যান চালিয়ে গৌতম কারখানা মালিকের কাছে ফিরে আসছিলেন। পথে তিনি ওই লক্ষাধিক টাকা হাতানোর পরিকল্পনা এঁটে ফেলেন। সেই মতো পুরো টাকাটা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য গৌতম 'গল্প' ফেঁদে ফেলে। মোটর ভ্যান নিয়ে খালি হাতে চানাচুর কারখানার মালিকের কাছে ফিরে গিয়ে সেই গল্পের কথাই গৌতম তাঁর মালিককে শোনায়।
আরও পড়ুন- বাংলাদেশে লাগাতার হামলা হিন্দু মহল্লায়, দিকে দিকে গ্রেফতার সাধু-সন্ন্যাসীরা
তবে শেষ রক্ষা হয়নি। চানাচুর কারখানার মালিক পুলিশের দ্বারস্থ হতেই গৌতম রায়ের ফাঁদা গল্পের পর্দা ফাঁস হয়ে যায়। পুলিশের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়ে গৌতম রায় তার রচিত গল্পের কথা স্বীকার করে নেয়। তার পর গৌতম রায়ের বাড়ি থেকে পুলিশ ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার করে।
কাটোয়া শহরের পাবনা কলোনির বাসিন্দা ওই চানাচুর কারখানার মালিক সঞ্জয় ভাস্করের কথা অনুযায়ী,
তিনি মঙ্গলকোট, ভাতার প্রভৃতি এলাকার দোকানে চানাচুর সরবরাহ করেন। গৌতম শুক্রবার ভাতারের কয়েকটি দোকান থেকে পাওনা ১ লক্ষ টাকা, মঙ্গলকোটের সাঁওতার এক দোকানদারের কাছ থেকে ১৫,৬৬০ টাকা এবং মঙ্গলকোটের নিগনের এক দোকানদারের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা পেমেন্ট নিয়ে ফিরছিলেন।
আরও পড়ুন- Aparajita Bill: এ কী বললেন তৃণমূল নেত্রী? প্রকাশ্যে অপরাজিতা বিলের বিরোধিতা, তুমুল শোরগোল
সঞ্জয় ভাস্কর বলেন, "ওই দিন সন্ধ্যা ৬.৩৫ মিনিট নাগাদ তাঁকে ফোন করে মোটরভ্যানের চালক গৌতম। ফোন করে গৌতম জানায়, মঙ্গলকোটের শীতলগ্রাম ও যজ্ঞেশ্বরডিহি গ্রামের মাঝামাঝি এলাকায় বর্ধমান কাটোয়া রোডে তিনজন অপরিচিত দুস্কৃতী তাঁর কাছ থেকে টাকা ভর্তি ব্যাগ ছিনতাই করে নিয়ে পালিয়েছে।" গৌতমকে তিনি কারখানায় ফিরে আসতে বলেন।
আরও পড়ুন- PM Awas Yojana: আবাসের তালিকায় নাম রেশন ডিলারের, জানাজানি হতেই যা হল...
এরপর গৌতমকে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলকোট থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ তদন্তে নামে। যে এলাকায় ছিনতাই হয়েছিল বলে গৌতম জানিয়েছিল সেখানকার CCTV ফুটেজ পুলিশ পরীক্ষা করে দেখে। কিন্তু সেই ধরনের কোনও ঘটনা ফুটেজে ধরা পড়েনি। এরপর পুলিশ গৌতমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করে। পুলিশের ম্যারথন জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়ে গৌতম স্বীকার করে নেয়, কেউ তার কাছ থেকে টাকা ছিনতাই করেনি, টাকা তিনি নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। পুলিশ গৌতমের বাড়ি থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার করে।