Glottis IPO: আইপিও মূল্যের চেয়ে ৩৫% কমে নথিভুক্ত শেয়ার, বিরাট ক্ষতি বিনিয়োগকারীদের।

Glottis IPO: গ্লোট্টিস (Glottis)-এর শেয়ার বাজারে নতুন করে তালিকাভুক্ত হল ৮৮ টাকায়। যা IPO মূল্যের থেকে প্রায় ৩৫% কম। ফলে, বড় ধাক্কার মুখে বিনিয়োগকারীরা।

Glottis IPO: গ্লোট্টিস (Glottis)-এর শেয়ার বাজারে নতুন করে তালিকাভুক্ত হল ৮৮ টাকায়। যা IPO মূল্যের থেকে প্রায় ৩৫% কম। ফলে, বড় ধাক্কার মুখে বিনিয়োগকারীরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Glottis IPO

Glottis IPO: ক্ষতির মুখে বিনিয়োগকারীরা।

Share Market Loss: ভারতের শেয়ারবাজার মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর, ২০২৫) এক নতুন কোম্পানি Glottis Limited-এর লিস্টিং নিয়ে সরগরম। বিনিয়োগকারীদের আশা ছিল, এই IPO থেকে ভালো রিটার্ন মিলবে, কিন্তু বাস্তবে হল সম্পূর্ণ উলটো। গ্লোট্টিসের শেয়ার লিস্ট হলো ৩৫% ডিসকাউন্টে! 

Advertisment

Glottis কোম্পানি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিচয়

Glottis Limited হল চেন্নাইয়ের একটি লজিস্টিক্স সলিউশন কোম্পানি। এরা সমুদ্র, আকাশ ও সড়কপথে মাল পরিবহণ করে। কোম্পানিটি ২০২৪ সালের জুন মাসে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই এটি মাল পরিবহণের ক্ষেত্রে নাম করেছে। এই সংস্থা তাদের IPO (Initial Public Offering) চালু করেছিল সেপ্টেম্বরের শেষে। উদ্দেশ্য ছিল প্রায় ৩০৭ কোটি টাকা বাজার থেকে তোলা। এর মধ্যে নতুন শেয়ার ইস্যুর পাশাপাশি বিক্রয় প্রস্তাব (offer-for-sale, OFS)-এর মাধ্যমেও টাকা তোলার পরিকল্পনা ছিল সংস্থার।

আরও পড়ুন- চশমাকে বিদায় জানান, এই কায়দায় পরিষ্কার দৃষ্টি ফিরে পান সহজেই

Advertisment

একনজরে IPO ডিটেইলস

মূল্য ব্যান্ড: প্রতি শেয়ার ১২০ টাকা থেকে ১২৯ টাকা। লট সাইজ ১১৪ শেয়ার। আইপিও (IPO) তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর, মোট সংগ্রহ হয়েছে ৩০৭ কোটি টাকা। সংস্থা সাবস্ক্রিপশন পেয়েছে প্রত্যাশার ২.০৫ গুণ। IPO চলাকালীন সময়ে বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ সংস্থা কোম্পানির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী মন্তব্য করেছিল। কিন্তু বাজারের প্রতিক্রিয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন পথে গেল। ৭ অক্টোবর সকালে যখন Glottis-এর শেয়ার লিস্ট হল, তখনই দেখা গেল যে বাজারের মূল্য IPO মূল্যের তুলনায় ৩৫% কম। NSE তে লিস্টিং মূল্য ছিল ৮৪ টাকা। BSE তে লিস্টিং মূল্য ছিল ৮৮ টাকা। অর্থাৎ, IPO ইস্যু প্রাইস ১২৯ টাকার তুলনায় অনেকটাই পড়ল। যাঁরা ১ লট (১১৪ শেয়ার) কিনেছিলেন, তাদের প্রত্যেকের এতে প্রায় ৫,১৩০ টাকা ক্ষতি হয়েছে প্রথম দিনেই। এই লিস্টিং পারফর্ম্যান্স এতটাই দুর্বল ছিল যে অনেক মার্কেট বিশ্লেষক এটিকে সম্পদ ধ্বংসকারী আইপিও 'Wealth Destroyer IPO' বলে সমালোচনা করেছেন।

আরও পড়ুন- রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়, ৯৬তম জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

এই ধাক্কার কারণ

Glottis-এর IPO-র সময় গ্রে মার্কেট প্রিমিয়াম (GMP) প্রায় ছিল না বললেই চলে। সাধারণত, যদি GMP কম বা শূন্য থাকে, তাহলে বোঝা যায় বাজারে আগ্রহ খুব কম। সেটাই এখানে হয়েছে। বেশিরভাগ বিশ্লেষক মনে করছেন, Glottis তার IPO প্রাইস ১২০–১২৯ টাকা যেটা রেখেছিল, তা কোম্পানির প্রকৃত আয়ের তুলনায় কম। এই অতিমূল্যায়নই বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করেছে। অক্টোবরের শুরুতে ভারতের শেয়ারবাজারে সামগ্রিকভাবে কিছুটা মন্দাভাব চলছিল। এই সময়ে নতুন IPO তে বিনিয়োগকারীরা রিস্ক নিতে চাননি। তার ওপর লজিস্টিকস সেক্টর বর্তমানে প্রতিযোগিতাপূর্ণ। এই পরিস্থিতিতে মার্জিন কমে যাওয়া বিনিয়োগকারীদের কাছে একটি বড় সমস্যা।

আরও পড়ুন- সামান্য এই টিপসেই বাজিমাত, দূর করুন আপনার দুর্ভাগ্য!

বিনিয়োগকারীরা Glottis IPO থেকে কী শিখলেন?

এই ঘটনা থেকে বিনিয়োগকারীরা বেশ কিছু বাস্তব শিক্ষা পেলেন। তা হল, IPO মানেই লাভ নয়। নতুন শেয়ার ইস্যু মানে সর্বদা লাভের নিশ্চয়তা নেই। অনেক সময় লিস্টিং-এ ক্ষতির মুখেও পড়তে হয়। GMP সবসময় গুরুত্বপূর্ণ সূচক। লিস্টিংয়ের আগে যদি GMP কম থাকে, তাহলে সাবধান হওয়াই ভালো। মূল্যায়ন বিশ্লেষণ দরকার। কোম্পানির আয়, ঋণ, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ইত্যাদি আগে দেখে নেওয়া উচিত। বাজারের মেজাজ বোঝা জরুরি। IPO লঞ্চের সময় বাজারের মনোভাব ইতিবাচক না হলে, লিস্টিং গেইন পাওয়া কঠিন। Diversification অপরিহার্য। সব টাকা এক IPO তে না ঢেলে, বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

আরও পড়ুন- দিঘার পথেই দুর্গ! পশ্চিম মেদিনীপুরের রহস্যঘেরা কুরুম্বেরা ফোর্টের ইতিহাস শুনলে অবাক হয়ে যাবেন

বিশ্লেষকদের ধারণা

Glottis যদিও এখনও বাজারে চাপের মুখে, তবে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন যে সংস্থাটি medium to long term-এ কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারে, যদি তারা তাদের অপারেশনাল খরচ কমাতে ও বাজার সম্প্রসারণে মন দেয়। কোম্পানির এখন লক্ষ্য হওয়া উচিত – লজিস্টিক সেক্টরে প্রযুক্তি ও দক্ষতার মাধ্যমে নিজেদের শক্তিশালীভাবে প্রতিষ্ঠা করা। এই সব কারণেই আপাতত বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ধরারই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, Panic selling না করাই উচিত। Fundamental রিভিউ করা, কোম্পানির আর্থিক অবস্থা যাচাই করা উচিত। প্রয়োজনে স্টপ লস সেট করা উচিত। যাতে ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে থাকে। ভবিষ্যতের উন্নতির দিকে নজর রাখা উচিত। 

মোট কথা

Glottis IPO ভারতের সাম্প্রতিক শেয়ারবাজারের ইতিহাসকে এক স্পষ্ট শিক্ষা দিয়ে গেল। সেই শিক্ষা হল, বাজারের আশাবাদ যতই থাকুক না কেন, IPO বিনিয়োগ সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ।  

loss Share Market