/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/07/chinmoy-chattopadhyay-2025-10-07-03-11-31.jpg)
Chinmoy Chattopadhyay: রবীন্দ্রসংগীতের অমর শিল্পী চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়।
Rabindra Sangeet Singer: রবীন্দ্রসংগীতের আকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র—চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় (৭ অক্টোবর ১৯৩০ – ২৬ জুলাই ১৯৮৭)। তিনি নিজের কণ্ঠস্বর, আবেগ এবং সংগীত দক্ষতার মাধ্যমে রবীন্দ্রসংগীত শ্রোতাদের মধ্যে এমন এক আবেশ তৈরি করতেন, যা আজও সংগীতপ্রেমীদের মুগ্ধ করে রাখে। তাঁর গানে মিশে ছিল কবিগুরুর ভাব, বোধ, দর্শন এবং জীবনের গভীরতা।
জন্ম পানিহাটিতে
আরও পড়ুন- কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো কেন রাতেই করা হয়? কারণ জানলে আশ্চর্য হবেন!
১৯৩০ সালের ৭ অক্টোবর, উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে জন্মগ্রহণ করেন চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়। পিতা নরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সংগীতপ্রেমী। ছোটবেলা থেকেই চিন্ময়ের মনে সংগীতের প্রতি অগাধ টান ছিল। তিনি কলকাতার তীর্থপতি ইনস্টিটিউশন থেকে ম্যাট্রিক এবং আশুতোষ কলেজ থেকে স্নাতক হন। ছাত্রাবস্থাতেই সংগীত ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী।
আরও পড়ুন- দুর্গা নয়, একটা সময় লক্ষ্মীপুজোই ছিল বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব
তাঁর সংগীতজীবন শুরু হয় আকাশবাণীতে। তিনি ছিলেন আকাশবাণীর নিয়মিত শিল্পী। পরবর্তীতে রাজ্য সংগীত আকাদেমির সহ-সভাপতি হয়েছিলেন। তিনি রেকর্ড করেছিলেন ১৫০-রও বেশি রবীন্দ্রসংগীত। যা আজও বাংলা গানের ইতিহাসে এক অনন্য সম্পদ। তাঁর গলায়, 'আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ', 'তবু মনে রেখো', 'আমারও পরাণ যাহা চায়'—এর মত গান আজও অমর হয়ে আছে।
আরও পড়ুন- কোজাগরী কি শুধুই বাঙালদের? ঘটিরা অলক্ষ্মী তাড়ান দীপাবলির সন্ধ্যায়!
চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের গায়কী ছিল বিশুদ্ধ, সংযত এবং হৃদয়স্পর্শী। তাঁর গানে শোনা যেত রাগের নিখুঁত ব্যবহার এবং রবীন্দ্রসংগীতের ব্যাকরণ মেনে আবেগের সূক্ষ্ম প্রকাশ। তাঁর কণ্ঠের বিশেষত্বগুলো হল— রাবীন্দ্রিক ভাবের গভীর প্রকাশ, শব্দের স্পষ্ট উচ্চারণ, রাগসংগত সুরের সূক্ষ্মতা, আবেগ ও বুদ্ধিমত্তার নিখুঁত সংমিশ্রণ। চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের বড় ভাই জ্যোতির্ময় চট্টোপাধ্যায় ছিলেন কলকাতার এক খ্যাতনামা চিকিৎসক। শিল্পীর নিজ বাসভবন ৪৮ রসা রোড, কলকাতা ছিল সংগীতসাধকদের এক তীর্থস্থান। বহু ছাত্র-ছাত্রী ও সংগীতপ্রেমী তাঁর কাছ থেকে রবীন্দ্রসংগীতের পাঠ নিয়েছেন।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীপুজোয় দেবীর এই প্রিয় মিষ্টি ভোগে রাখছেন তো? চটপট বানান এভাবে!
রবীন্দ্রসংগীতের পাশাপাশি তিনি কিছু আধুনিক গানও রেকর্ড করেছিলেন, যা তাঁর বহুমুখী প্রতিভার প্রমাণ। তাঁর গলায় প্রতিটি গানে থাকত আবেগ, বোধ ও সংগীতের প্রতি গভীর নিষ্ঠা। মাত্র ৫৬ বছর বয়সে, ১৯৮৭ সালের ২৬ জুলাই, লিভারে রক্তক্ষরণজনিত কারণে তিনি প্রয়াত হন। কিন্তু রেখে গেছেন এক অমর উত্তরাধিকার।