/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/27/66806313_1420103088136949_7555932640101007360_n-2025-10-27-18-54-12.jpg)
টেলিভিশন আর থিয়েটারের মাঝে বাধ সাধল তারিখ: শঙ্কর চক্রবর্তী
থিয়েটারে কাজের জন্য ডেইলি সোপ থেকে বাদ? বাধ সাধল তারিখ নাকি অন্য কোনও সমস্যা?
শঙ্কর চক্রবর্তী: শো নেমে গেলে সমস্যা হয় না। কিন্তু, নতুন নাটকের যখন প্রস্তুতি শুরু হয় তখন একটু অসুবিধা হয়। একটানা মহড়া চলতে থাকে। শেষ নাটক দেবাশিষ রায়ের সঙ্গে করেছি। ২৫ অক্টোবর একটা শো নেমে গিয়েছে। আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে অনেকগুলো নাটক রয়েছে, কয়েকটা আবার বাইরে শুট হবে। তাই ধারাবাহিকের কাজে সমস্যা তৈরি হয়। একটা সিরিয়াল যখন শুরু হয় তখন কাজের চাপ থাকে। আমার যে ধারাবাহিকে কাজের কথা চূড়ান্ত হয়েছিল সেটার সঙ্গে শোয়ের ডেট নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। আমার তো লুক সেটও হয়ে গিয়েছিল। ওঁরা বলল এতগুলো রিহার্সলের সঙ্গে সিরিয়ালের ডেট অ্যাডজাস্ট করা সম্ভব নয়। আমি থিয়েটার অন্তপ্রাণ, তাই ছেড়ে দিতে পারি না। টেলিভিশন আর থিয়েটারের মাঝে বাধ সাধল তারিখ।
আজকাল মেগার চরিত্ররা বড় পর্দায় ব্রেক পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে তো তারিখ বাধ সাধে না বরং গল্পের প্লট বদলে যায়...
শঙ্কর চক্রবর্তী: ওদের বক্তব্য মেগার শুরুতে অসুবিধা। পরের দিকে হলেও হয়ত সম্ভব হত। আমার ট্র্যাক দিয়েই যেহেতু গল্পের শুরু তাই কোনওভাবেই এতগুলো দিন ম্যানেজ করা সম্ভব নয়। তবে আমি জানি সিনেমা-সিরিজে কাজের জন্য ধারাবাহিকের তারিখ বা প্লটে বদল আসে, আসলে এই অঙ্কটা ঠিক মেলাতে পারিনি। আমি খুবই সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে এসেছি। আমার মেয়ে সবসময় সাহস জুগিয়েছে। ও বলে, বাবা তুমি ইন্ডাস্ট্রি থেকে অনেক কিছু পেয়েছ, আপশোস করো না। আমিও ভেবেছি, সত্যিই তো ইন্ডাস্ট্রি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে।
এই ধরনের সমস্যা শুধু চরিত্র অভিনেতারাই ভোগ করেন?
শঙ্কর চক্রবর্তী: আমি এই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। তাই আমি নিজেরটুকু বলতে পারি। আমি শুনেছি, আমাদের মতো যাঁরা চরিত্র অভিনেতা তাঁরা কোনও সিরিজ, সিনেমা আর থিয়েটার করলে ১০ হাজার টাকার বেশি দেওয়া হবে না। যদিও এমন কথা আমাকে কেউ সরাসরি বলেনি, সবটাই তৃতীয় ব্যক্তির থেকে শোনা।
আরও পড়ুন সোনাদানা বন্ধক-কাঁধে ঋণের বোঝা! সস্তার চাল-ডাল খেয়ে দিন গুজরান জগদ্ধাত্রীর 'সাধু দা' সত্যমের
কাজের সমস্যার জন্যই অর্থসংকট দেখা দিয়েছে?
শঙ্কর চক্রবর্তী: হ্যাঁ, অর্থনৈতিক একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। আসলে গাড়ির প্রতি আমার একটা অদ্ভুত নেশা ছিল। তিন বছরের বেশি একটা গাড়ি রাখতাম না। সেটা বিক্রি করে আবার একটা নতুন গাড়ি কিনতাম। ফলে EMI-য়ের চাপ বেড়েছে। অনেকবার বাড়ি পরিবর্তন হয়েছে। ২০০৬-এ অভিসিক্তায় যে ফ্ল্যাট কিনেছিলাম সেটা দারুণ ছিল। মেয়ে আর স্ত্রী দুজনে সুন্দর করে সাজিয়েছিল। ২০০৯- এ ওই ফ্ল্যাটটা বিক্রি করে দিতে হয়েছিল। কারণ সেই সময় একটানা নয়-দশমাস কোনও কাজ ছিল না। বিক্রি করার পর কয়েকবার ভাড়া বাড়িতে থেকেছি। যতদিন যাচ্ছে ফ্ল্যাটের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এখন যেখানে থাকি সেটা অনেকটাই চড়া দামে কিনতে হয়েছিল। তখন আমার কাছে ৭৫ লাখ টাকা নগদ ছিল। বাকিটা আবার লোন করতে হয়। এখন একসঙ্গে তিনটে লোন চলছে। আগামী বছর অক্টোবরে পরিশোধ হবে। মেয়েই এখন অনেকটা ব্যাকআপ দিচ্ছে। আমার পোষ্য, রান্নার লোক, ড্রাইভারের একটা খরচ বহন করতে হয়। আমি যদিও মেট্রো, রিক্সায় মাঝেমধ্যে যাতায়াত করি। মজার বিষয়, আমি এমনও শুনেছি লোকে বলছে, সিরিয়াল করে আর কত টাকা পায়! এগুলো শুনলে একটু অস্বস্তি হয়।
আরও পড়ুন কর্মহীন জীবন-চরম অর্থাভাবে দিন গুজরান, সত্য প্রকাশ্যে আনতেই সত্যমের জীবনে আশার আলো!
মেয়ে মুম্বইয়ে প্রতিষ্ঠিত। ওখানে কাজের চেষ্টা করেন না?
শঙ্কর চক্রবর্তী: আমাকে ঋতুপর্ণ ঘোষ একটা কথা বলেছিলেন। অনেকদিন আগে মুম্বইয়ে নিতিশ রায়ের বাড়িতে অনেক বড় বড় পরিচালকের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন। ওঁর প্রযোজনা সংস্থায় 'তবু মনে রেখো' নামে একটি ছবিতে কাজ করেছিলাম। মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অরুণা ইরানি। আমি ছিলাম ভিলেনের ভূমিকায়। আমি ওখানে থাকার প্রস্তাব পেয়েছিলাম। তখন ঋতুপর্ণ ঘোষ বলেছিলেন, কলকাতায় একটা স্টারডম এনজয় করছো, মুম্বইয়ে থাকলে শূন্য থেকে শুরু করতে হবে। তখন আমি বিবাহিত, সন্তানও ছিল। তাই আর রিস্ক নিইনি। এখন গেলেও তো অনিশ্চয়তার মধ্যেই থাকতে হবে। তবে অডিশনের সুযোগ পেলে দিই। রাজ চক্রবর্তী পরিনীতার হিন্দি সিরিজ বানিয়েছে। সেখানে আমি মেয়ের বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছি। এর আগেও একটা হিন্দি সিরিজে কাজ করেছিলাম কিন্তু, সেভাবে হিট হয়নি। উজান গঙ্গোপাধ্যায়ের ডেবিউ মুভিতে কাজ করলাম। আমি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি টেলিফিল্মে উজানের সঙ্গে কাজ করেছিলাম। তখন ওঁর বয়স মাত্র চার বছর। এখনই ওঁরই নির্দেশনায় কাজ করে দারুণ লাগল।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)

Follow Us