Darjeeling Rain Landslide: দার্জিলিং, ডুয়ার্সে ভয়াবহ বৃষ্টি ও ভূমিধসে মৃত্যু, ভারতে ধস কেন এত বেশি হচ্ছে?

Darjeeling Rain Landslide: দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে টানা বৃষ্টিতে ভয়াবহ ভূমিধস, মৃত কমপক্ষে ১৪। কেন এত ভয়ংকর ভারতের পাহাড়ি ভূমিধস, কীভাবে তৈরি হচ্ছে ঝুঁকি—জেনে নিন বিস্তারিত।

Darjeeling Rain Landslide: দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে টানা বৃষ্টিতে ভয়াবহ ভূমিধস, মৃত কমপক্ষে ১৪। কেন এত ভয়ংকর ভারতের পাহাড়ি ভূমিধস, কীভাবে তৈরি হচ্ছে ঝুঁকি—জেনে নিন বিস্তারিত।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Flood Landslide

Rain Landslide: ধস নেমে ডুয়ার্সে নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে আস্ত ঘরবাড়ি।

Darjeeling Rain Landslide: দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে টানা বৃষ্টিতে ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১৪ জনের। শনিবার (৪ অক্টোবর) রাতের দিকে লাগাতার বৃষ্টিতে পাহাড়ের মাটি সরে বহু ঘরবাড়ি, সড়ক ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উদ্ধারকাজে নেমেছে প্রশাসন, তবে প্রবল বৃষ্টিপাত ও দুর্গম পাহাড়ি রাস্তা উদ্ধারকাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

Advertisment

ভয়ংকর বিপর্যয়ের মুখে উত্তরবঙ্গ

কালিম্পং জেলার তিস্তা বাজারের কাছে লোহার সেতু ভেঙে যাওয়ায় সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। টানা ভারী বৃষ্টিতে এলাকায় বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বিপদগ্রস্ত এলাকাগুলি থেকে মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন- কেন সরাতে হয় লক্ষ্মীপুজো? জানেন লক্ষ্মী পুজোর কতরকম সরা আছে?

‘ল্যান্ডস্লাইড’ বা ভূমিধস মানে পাহাড়ি ঢাল থেকে মাটি, পাথর, ধ্বংসাবশেষ ইত্যাদির নীচের দিকে সরে যাওয়া। এটি ঘটে যখন মাটিকে ধরে রাখার 'আঠা' — যেমন গাছের শিকড়, ঢালের কোণ, বা মাটির ঘনত্ব — দুর্বল হয়ে পড়ে। ভারী বৃষ্টির সময় জল মাটির ওজন বাড়িয়ে দেয় এবং ঘর্ষণ কমিয়ে দেয়, ফলে মাটি সহজেই নীচের দিকে সরে যায়।

Advertisment

আরও পড়ুন- বৃহস্পতিবারের লক্ষ্মীপুজো থেকে কোজাগরী পূজা কেন আলাদা? জানুন তাৎপর্য

ভারত আবহাওয়া দপ্তর (IMD) আগেই জানিয়েছিল এই বৃষ্টিপাতটি একটি নিম্নচাপজনিত কারণে হচ্ছে, যা বিহারের দিক থেকে আসছে। কিন্তু ঠিক কখন বৃষ্টি ভূমিধসে রূপ নেবে, তা নির্ভুলভাবে অনুমান করা এখনও সম্ভব হয়নি। ভারতের মোট ভূমির প্রায় ১৩% বা ০.৪২ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার এলাকা ভূমিধস-প্রবণ। এর মধ্যে প্রায় ৪২% অংশই উত্তর-পূর্ব ভারতে, যেখানে পাহাড়ি এলাকা বেশি।

আরও পড়ুন- কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় মানুন এই ১০ টোটকা, ঘরে উথলে উঠবে সুখ

পাহাড়ে নির্মাণকাজ বা সড়ক নির্মাণের সময় প্রায়ই ঢালের ভারসাম্য বিবেচনা করা হয় না। অপরিকল্পিত নির্মাণ এবং জলনিকাশি ব্যবস্থার অভাব ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়ায়। সমতলে বৃষ্টির জল সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে, কিন্তু পাহাড়ে সেই পথ থাকে না।

আরও পড়ুন- কার্নিভাল বাড়িয়েছে পুজোর রেশ! দশমী নয়, আজই কলকাতায় এবারের দুর্গাপূজার ইতি

ঝড় বা ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা বেশ উন্নত হলেও, ভূমিধসের ক্ষেত্রে তা এখনও সীমিত। কিছু রাজ্যে যেমন কেরালা, সিকিম ও উত্তরাখণ্ডে পরীক্ষামূলকভাবে ভূমিধসে আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা চালু হয়েছে, কিন্তু তা এখনও পূর্ণতা পায়নি।

ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (NDMA) এবং জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (GSI) একসঙ্গে কাজ করছে একটি পূর্ণাঙ্গ National Landslide Risk Management Strategy (2019) বাস্তবায়নের জন্য। এর মধ্যে রয়েছে— ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানচিত্র তৈরি, আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা গঠন, পাহাড়ি অঞ্চলের জন্য নির্মাণবিধি তৈরি, তবে এই প্রকল্পগুলির বড় অংশ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। 

গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে বর্ষার ধরন বদলে যাচ্ছে। একটানা অল্প সময়ের মধ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যা পাহাড়ের মাটি নরম করে দেয়। সেইসঙ্গে জনবসতি ও পরিকাঠামোগত চাপ এই বিপদ আরও বাড়াচ্ছে। দার্জিলিংয়ের সাম্প্রতিক বিপর্যয় আবারও মনে করিয়ে দিল যে, ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলগুলি এখনও প্রকৃতিগত ঝুঁকির মুখে। আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা, টেকসই পরিকাঠামো এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করেই কেবল ভবিষ্যতের ভূমিধস বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব।

darjeeling Landslide