Kojagori Laxmi Puja: বৃহস্পতিবারের লক্ষ্মীপুজো থেকে কোজাগরী পূজা কেন আলাদা? জানুন তাৎপর্য

Kojagori Laxmi Puja 2025: আশ্বিন পূর্ণিমার এই দিনে কেন কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোকে এত বিশেষ মনে করা হয়? জানুন এই পূজোর মাহাত্ম্য, আধ্যাত্মিক তথা ধর্মীয় তাৎপর্য!

Kojagori Laxmi Puja 2025: আশ্বিন পূর্ণিমার এই দিনে কেন কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোকে এত বিশেষ মনে করা হয়? জানুন এই পূজোর মাহাত্ম্য, আধ্যাত্মিক তথা ধর্মীয় তাৎপর্য!

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Laxmi Puja

Laxmi Puja: লক্ষ্মীপূজা।

Kojagori Laxmi Puja 2025: কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো বাঙালির ঘরে ঘরে হয়। দুর্গাপুজোর পর এ হল এক বিশেষ আনন্দ ও শ্রদ্ধার উৎসব। যদিও প্রতি বৃহস্পতিবারে মা লক্ষ্মীর পুজো অনেক গৃহস্থ বাড়িতে নিয়মিতভাবে হয়, কোজাগরী পূর্ণিমার পুজো কিন্তু সেই সাধারণ পুজো থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আশ্বিন মাসের এই পূর্ণিমা তিথিতে মা লক্ষ্মীকে আহ্বান জানানো হয় ধন, সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্যের আশীর্বাদ লাভের জন্য।

Advertisment

‘কোজাগরী’ শব্দের উৎস

‘কোজাগরী’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দবন্ধ 'কঃ জাগর' বা 'কে জাগতি' থেকে। যার অর্থ— 'কে জেগে আছ?' বিশ্বাস করা হয়, এই রাতে মা লক্ষ্মী মর্ত্যে নেমে আসেন এবং দেখেন কোন ভক্ত তাঁর আরাধনায় রাত জেগে রয়েছেন। যিনি নিষ্ঠাভরে জাগরণ করে পুজো করেন, দেবী তাঁর ঘরে বিরাজ করেন এবং তাঁকে ধন, ধান, ঐশ্বর্য এবং সৌভাগ্যের আশীর্বাদ দেন। 

আরও পড়ুন- কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় মানুন এই ১০ টোটকা, ঘরে উথলে উঠবে সুখ

বৃহস্পতিবারের লক্ষ্মীপুজো গৃহস্থালির নিয়মিত দেবী পূজা— ঘরের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অন্নবস্ত্রের প্রাচুর্যের জন্য করা হয়। কিন্তু, কোজাগরী পূর্ণিমার পুজো হল বছরে একবারের বিশেষ আয়োজন। এই দিনে মা লক্ষ্মীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানানো হয় সারা বছরের প্রাচুর্যের জন্য এবং নতুন আশীর্বাদের কামনায় তাঁকে আহ্বান করা হয়। বৃহস্পতিবারের পুজো সাধারণত নিয়ম মেনে সন্ধ্যায় হয়, কিন্তু কোজাগরী পূর্ণিমায় সারা রাত জেগে দেবীর আরাধনা করা হয়— এটিই এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।

Advertisment

আরও পড়ুন- কার্নিভাল বাড়িয়েছে পুজোর রেশ! দশমী নয়, আজই কলকাতায় এবারের দুর্গাপূজার ইতি

কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো কৃষিভিত্তিক সমাজের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। লক্ষ্মী দেবীকে শস্য, ধন-সম্পদ ও প্রাচুর্যের দেবী হিসেবে মানা হয়। কৃষকরা এই দিনে ভালো ফসল ও গোলা ভরে ওঠার আশীর্বাদ কামনায় দেবীর পুজো করেন। অনেক গ্রামীণ এলাকায় এই সময় নতুন ধান ওঠার আনন্দ ও উৎসব পালিত হয়। 

আরও পড়ুন- কাজে লাগান জ্যোতিষীর এই টিপস, দিনকে করুন সফল!

বাঙালির ঘরে লক্ষ্মীপুজো মানেই চালের গুঁড়ো দিয়ে আঁকা আল্পনা। পদ্মফুল, পায়ের চিহ্ন ও শঙ্খ-আকৃতির নকশা দিয়ে দেবীকে আহ্বান জানানো হয়। এটি শুধু শোভা নয়, ভক্তির প্রতীকও বটে। ঘর পরিষ্কার, প্রদীপ জ্বালানো, ফুল ও ফলের নিবেদন— সবই দেবীর আগমনকে স্বাগত জানানোর অংশ। বিশ্বাস করা হয়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ঘরেই দেবী লক্ষ্মী আসতে ভালোবাসেন।

আরও পড়ুন- কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো কেন রাতেই করা হয়? কারণ জানলে আশ্চর্য হবেন!

কোজাগরী পূর্ণিমাকে শরৎ পূর্ণিমা বলেও ডাকা হয়। প্রাচীন বিশ্বাস অনুযায়ী, এই রাতে চাঁদের আলোয় থাকে অমৃততুল্য শক্তি ও নিরাময়ের আশীর্বাদ। তাই অনেকেই চাঁদের আলোয় ক্ষীর বা পায়েস রেখে দেন এবং পরের দিন সেটি প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করেন। এই প্রথা স্বাস্থ্য ও মানসিক শান্তির প্রতীক হিসেবেও দেখা হয়।

'কে জাগর' বা 'কে জেগে আছ'— এই প্রশ্ন কেবল শারীরিক জাগরণ নয়, মানসিক সচেতনতারও প্রতীক। দেবী লক্ষ্মীর পূজো আমাদের শেখায় জীবনের প্রতি সততা, নৈতিকতা ও কর্মনিষ্ঠা বজায় রাখা। সত্যিকার অর্থে ‘জাগরণ’ মানে নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সজাগ থাকা। ২০২৫ সালে ৬ অক্টোবর তারিখে পড়ছে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। এই দিনে ভক্তরা ঘরে ঘরে দেবীর আরাধনা করবেন, আল্পনা আঁকবেন, প্রদীপ জ্বালাবেন এবং সারারাত ভক্তিগানে মাতবেন। ভক্তি, আনন্দ ও ঐশ্বর্যের এই মিলনেই কোজাগরী পূর্ণিমা বাঙালির অন্যতম প্রিয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। 

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এই প্রতিবেদনটি জ্যোতিষশাস্ত্র ও পুরাণের ব্যাখ্যার ভিত্তিতে রচিত। এখানে বর্ণিত সব তথ্য ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী। ব্যক্তিগত সমস্যা বা সিদ্ধান্তের জন্য পেশাদার পুরোহিতের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

2025 Laxmi Puja