/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/28/fssai-action-on-fake-ors-2025-10-28-16-39-29.jpg)
FSSAI action on fake ORS: ওআরএস যুদ্ধে জিতে কোটি কোটি শিশুর প্রাণ বাঁচালেন ডা. শিবরঞ্জনী। (ছবি: ডা. শিবরঞ্জনী সন্তোষ/ইনস্টাগ্রাম এবং ওআরএস)
FSSAI action on fake ORS: আট বছরের নিরন্তর লড়াই, অসংখ্য অভিযোগ, আদালত পর্যন্ত যাওয়া— অবশেষে ফল মিলল। শিশুদের জন্য বিপজ্জনক 'অতিরিক্ত চিনি-যুক্ত ভুয়ো ORS' বিক্রির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করে আসা হায়দরাবাদের শিশু চিকিৎসক ডা. শিবরঞ্জনি সন্তোষ এখন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন।
ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা ও মান সংস্থা (FSSAI) ঘোষণা করেছে— এখন থেকে কোনও সংস্থা, 'Oral Rehydration Salts (ORS)' শব্দটি ব্যবহার করতে পারবে না, যদি তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র নির্ধারিত মান অনুযায়ী তৈরি না হয়।
আরও পড়ুন- ভারতের ব্যাংক কিনতে উঠেপড়ে লেগেছে বিদেশি সংস্থাগুলো, বিনিয়োগের নামে ভয়ংকর অভিসন্ধি?
৮ বছরের লড়াইয়ের গল্প
২০১৬ সাল থেকে শুরু হয় ডা. শিবরঞ্জনির এই আন্দোলন। তিনি লক্ষ্য করেন, বাজারে অনেক কোম্পানি ORS নামে এমন তরল বিক্রি করছে যাতে চিনির পরিমাণ WHO-র মানের প্রায় ১০ গুণ বেশি। এই ধরনের 'হাই সুগার' তরল শিশুদের ডায়রিয়া আরও বাড়িয়ে দিচ্ছিল। ডা. শিবরঞ্জনি বলেন, 'অভিভাবকরা ভাবছেন, তাঁরা বাচ্চাকে ORS দিচ্ছেন, অথচ শিশুর অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। এটা একপ্রকার অপরাধ।'
আরও পড়ুন- কীভাবে, কখন দেখবেন কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজো, জানুন অঞ্জলির সময়সূচি!
আদালত থেকে FSSAI পর্যন্ত লড়াই
২০২২ সালে ডা. শিবরঞ্জনি তেলেঙ্গানা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের করেন। এর পর তদন্তে উঠে আসে, একাধিক বড় কোম্পানি— যার মধ্যে একটি জনসন অ্যান্ড জনসন (Johnson & Johnson)-এর সহযোগী সংস্থা জেএনটিএল (JNTL)— হু (WHO)-এর মান লঙ্ঘন করেছে। ১৫ অক্টোবর ফ্যাসাই (FSSAI) নির্দেশ দেয়— হু রেসিপি অনুযায়ী তৈরি না হলে, কোনও পণ্যকে 'ওআরএস' নামে বিক্রি করা যাবে না।
আরও পড়ুন- ‘খুকু ও খোকা’-র কবি! প্রয়াণদিবসে স্মরণে অন্নদাশঙ্কর, জানেন কবির জীবনের এই দিকগুলোর কথা?
কেন হু-এর মান এত গুরুত্বপূর্ণ?
হু অনুযায়ী, এক লিটার জলে ২.৬ গ্রাম সোডিয়াম ক্লোরাইড থাকা উচিত। ১.৫ গ্রাম পটাশিয়াম ক্লোরাইড থাকা উচিত। ২.৯ গ্রাম সোডিয়াম সাইট্রেট থাকা উচিত। ডেক্সট্রোজ থাকা উচিত ১৩.৫ গ্রাম। এই সংমিশ্রণেই শরীরে জল এবং ইলেক্ট্রোলাইট সঠিকভাবে শোষিত হয়। কিন্তু বাজারের তথাকথিত ওআরএসে ১২০ গ্রাম পর্যন্ত চিনি থাকে, যা শিশুদের জন্য মারাত্মক।
আরও পড়ুন- পাহাড়ের ধারে ঝুলে! বিশ্বের এই ভয়ংকরতম টয়লেট কোথায় আছে?
যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি
ডা. শিবরঞ্জনি বলেন, 'এই নির্দেশ বাস্তবায়ন না হলে কোনও লাভ হবে না। কোম্পানিগুলো এবার লেবেল বদলে একই পণ্য বিক্রি করবে। তাই কড়া নজরদারি প্রয়োজন।' তিনি আরও জানান, ১৭ অক্টোবর দিল্লি হাইকোর্টে জেএনটিএল (JNTL) সাময়িক স্থগিতাদেশ পেয়েছে। ফলে অনেক দোকানে এখনও পুরনো স্টকই বিক্রি হচ্ছে।
অভিভাবকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিরাপদ ওআরএস কেনার আগে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি। সেটা হল, লেবেলে সোডিয়াম ও গ্লুকোজের মান লেখা আছে কি না, এক লিটারে ওআরএস দ্রবীভূত করার নির্দেশ দেওয়া আছে কি না, ওআরএসে অতি মিষ্টি স্বাদ থাকলে সেটি সন্দেহজনক, হু-এর মান উল্লেখ থাকলে তবেই ওআরএস কিনবেন।
কেন এটা সমাজের জন্য বড় জয়?
ডা. শিবরঞ্জনি বলেন, 'এটা শুধু আমার নয়, হাজারো অভিভাবকের জয়। আমরা চাই হু মান অনুযায়ী নিরাপদ ওআরএস-ই বিক্রি হোক।' এই রায় কার্যকর হলে, তা হবে ভারতের শিশুস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। এমনটাই ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us