Advertisment

হাফিজ সইদের গ্রেফতারির ইতিহাস

২০০৬ সালের ১১ জুলাই মুম্বইয়ে ট্রেন বিস্ফোরণের পর সে বছরের ৯ অগাস্ট তাকে গ্রেফতার করা হয়, কিন্তু ২৮ অগাস্ট তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই দিনই ফের প্রাদেশিক সরকার তাকে গ্রেফতার করে এবং শেখপুরার ক্যানাল রেস্ট হাউসে তাকে অন্তরীণ রাখা হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Hafiz Saeed

হাফিজ সইদকে মুম্বই হামলার মূল চক্রী বলে সন্দেহ করা হয়

জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদকে বুধবার গ্রেফতার করেছে পাকিস্তানের কাউন্টার-টেররিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি)। সইদকে সন্ত্রাসের জন্য অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠনগুলির উপর পাক সরকার যে ধরপাকড় শুরু করেছে, এই গ্রেফতারি তারই অঙ্গ।

Advertisment

জামাত উদ দাওয়ার এক মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে কেন্দ্রীয় পাকিস্তানের শহর গুরজানওয়ালা যাওয়ার পথে সইদকে পাকড়াও করা হয়।

হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে মামলা

জঙ্গি সংগঠন জামাত উদ দাওয়ার প্রধান হাফিজ সইদ ২৬-১১ মুম্বই হামলার মূল চক্রী ছিল বলে সন্দেহ করা হয়। এই হামলার পরেই মার্কিন যুক্ররাষ্ট্রের তরফ থেকে সইদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি বলে চিহ্নিত করে তার মাথার দাম ১০ মিলিয়ন ডলার ধার্য করা হয়।

আরও পড়ুন, কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড বহাল, না খারিজ? আন্তর্জাতিক আদালতে রায় আজ

এ বছরের জুলাই মাসে পাকিস্তানে সইদ ও তার ১২ সাকরেদের বিরুদ্ধে ২৩টি মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগ ছিল লশকর এ তৈবার জন্য তারা অর্থসাহায্য তুলছিল পাঁচটি ট্রাস্টের মাধ্যমে। আমেরিকার ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স নামের আর্থিক নজরদারি সংস্থা এ খবর জানানোর পর পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। জঙ্গি গোষ্ঠীর আর্থিক জোগান বন্ধে প্রতিশ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আগামী অক্টোবর মাসে পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হতে পারে বলে জানিয়ে দেওয়া হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে।

২০০২ সাল থেকে পাকিস্তানে লশকর নিষিদ্ধ সংগঠন বলে ঘোষিত। তাদের সাহায্য বন্ধ করা হয়েছে গত বছর থেকে। এর আগে বেশ কয়েকবার হাফিজ সইদকে গৃহবন্দি করা হলেও আদালতের আদেশে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

হাফিজের পূর্ববর্তী গ্রেফতারি

সইদকে সম্ভবত প্রথমবার গ্রেফতার করা হয় ২০০১ সালের ডিসেম্বর মাসে, ভারতে সংসদ হানার পর। ১৩ ডিসেম্বরের সংসদ হানার পর সে ঘটনায় সইদের ভূমিকা সম্পর্কে নিশ্চিত ভারত পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টি করার পর ২১ ডিসেম্বর সইদকে হেফাজতে নেয় পাকিস্তান। ২০০২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সইদকে আটক রাখার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ফের তাকে হেফাজতে নেওয়া হয় ১৫ মে। ২০০২ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তাকে গৃহবন্দি রাখা হয়। হাফিজের স্ত্রী মাইমুনা সইদ পাঞ্জাব প্রদেশ ও পাকিস্তানের ফেডেরাল সরকারের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে হেফাজতে রাখার দায়ে অভিযুক্ত করে।

আরও পড়ুন, সামনে এনআরসি, ডুবলেও বাড়ি ছাড়তে চাইছেন না বন্যার্ত আসামবাসী

২০০৬ সালের ১১ জুলাই মুম্বইয়ে ট্রেন বিস্ফোরণের পর সে বছরের ৯ অগাস্ট তাকে গ্রেফতার করা হয়, কিন্তু ২৮ অগাস্ট তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই দিনই ফের প্রাদেশিক সরকার তাকে গ্রেফতার করে এবং শেখপুরার ক্যানাল রেস্ট হাউসে তাকে অন্তরীণ রাখা হয়। ২০০৬ সালের লাহোর হাইকোর্টের নির্দেশে তাকে মুক্ত করা হয়।

২৬-১১র মুম্বই জঙ্গি হামলার পর ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে ফের তাকে গৃহবন্দি করা হয়। ২০০৯ সালের জুন মাসে তাকে ফের ছেড়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন, বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের আস্থা ভোটে বাধ্য করা যাবে না: সুপ্রিম কোর্ট

২০০৯ সালের ২৫ অগাস্ট ইন্টারপোল সইদের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করে। একই সঙ্গে রেড কর্নার নোটিস জারি করা হয় জ়াকি উর রহমান লকভির বিরুদ্ধেও। এই দুজনেরই ভারতে প্রত্যর্পণের দাবির প্রেক্ষিতেই এই নোটিস। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে ফের সইদকে গৃহবন্দি করা হয়। ২০০৯ সালের ১২ অক্টোবর লাহোর হাইকোর্ট সইদের বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ তুলে নিয়ে তাকে মুক্ত করে দেয়।

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে এফএটিএফ যখন পাকিস্তানের সন্ত্রাস বিরোধী রেকর্ড খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করে, তখন ফের একবার গৃহবন্দি করা হয় সইদকে। ২০১৭ সালের ২৪ নভেম্বর পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে লাহোর হাইকোর্ট তার বিরুদ্ধে কিছু না পাওয়ায় এক সপ্তাহ আগে সইদকে মুক্ত করা হয়েছে।

pakistan
Advertisment