National Doctors Day 2025: ভারতে প্রতি বছর ১ জুলাই জাতীয় চিকিৎসক দিবস (National Doctor’s Day) পালন করা হয় দেশের চিকিৎসকদের শ্রদ্ধা জানানোর উদ্দেশ্যে। এই দিনে আমরা শুধুমাত্র চিকিৎসকদের পেশাগত দক্ষতাই নয়, তাঁদের মানবিকতার জন্যও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। চিকিৎসক হলেন এমন এক ব্যক্তি যিনি শুধুমাত্র রোগ নিরাময় করেন না, বরং দুঃসময়ে মানুষের মনে সাহস ও ভরসা জোগান।
১ জুলাই তারিখেই কেন চিকিৎসক দিবস?
এই তারিখটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ভারতের প্রখ্যাত চিকিৎসক, স্বাধীনতা সংগ্রামী ও পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ডা. বিধান চন্দ্র রায় (Dr. Bidhan Chandra Roy)-এর জন্ম এবং মৃত্যুদিন। ১ জুলাই ১৮৮২ সালে জন্ম নেওয়া ডা. রায় প্রয়াত হন ১ জুলাই ১৯৬২ সালে। এই দিনেই তাঁর স্মৃতিতে এবং ভারতের চিকিৎসা জগতে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯১ সাল থেকে কেন্দ্রীয় সরকার এই দিনটি জাতীয় চিকিৎসক দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
আরও পড়ুন- বাঘ বনাম চিতা! মরণবাঁচন লড়াই হলে প্রকৃতির দুই ভয়ংকর যোদ্ধার মধ্যে কে জিতবে?
কে ছিলেন ডা. বিধান চন্দ্র রায়?
ডা. রায় শুধুমাত্র একজন চিকিৎসক ছিলেন না, তিনি ছিলেন শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং একজন দুরদর্শী চিন্তাবিদ। তিনি ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করার পর মাত্র ২ বছর ৩ মাসের মধ্যেই ইংল্যান্ড থেকে FRCS ডিগ্রি অর্জন করেন, যা এক যুগান্তকারী কৃতিত্ব।
আরও পড়ুন- মাত্র একবার টমেটোর সঙ্গে এই গুঁড়োটি লাগালেই ত্বক হবে উজ্জ্বল! জানুন সামুদ্রিক শৈবালের ৬টি রূপচর্চার প্যাক
শিক্ষা ও প্রাতিষ্ঠানিক অবদান
ডা. রায়ের চিকিৎসাক্ষেত্রে অবদানের পাশাপাশি তাঁর শিক্ষাক্ষেত্রেও অসাধারণ অবদান রয়েছে। তাঁর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে:
-
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (IMA)
-
মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (MCI)
-
কলকাতা পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল কলেজ
-
ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ
-
ইনফেকশাস ডিজিজ হাসপাতাল
-
এমনকী আইআইটি খড়গপুর তৈরির পিছনে ছিল তাঁর উদ্যোগ।
আরও পড়ুন- প্রকৃতির সবচেয়ে রঙিন ১০টি পোকা, যাদের দেখে মনে হবে শিল্পীর তুলিতে আঁকা
সর্বোচ্চ সম্মান
১৯৬১ সালে তাঁকে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন প্রদান করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- উপবাসে ওজন কমলেও বাড়ে গ্যাস, মাথাব্যথা! কোন ভুলে হয় বিপদ, জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ
২০২৫ সালের থিম:
'Behind the Mask: Who Heals the Healers'-এই থিমটির মাধ্যমে ২০২৫ সালে চিকিৎসকদের মানসিক ও শারীরিক চাপের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। অতিমারি পরবর্তী যুগে চিকিৎসকরাও এক মানবিক যন্ত্রের মতো টানা কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁদের মন, আবেগ, ক্লান্তির জায়গাগুলি নিয়েও ভাবার সময় এসেছে।
কেন এই দিনটি গুরুত্বপূর্ণ?
-
চিকিৎসকদের অবদানকে সম্মানিত করে সমাজে তাঁদের মর্যাদা বাড়ায় এই দিন
-
স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে
-
তরুণ প্রজন্মকে চিকিৎসা পেশায় উৎসাহিত করে
-
চিকিৎসকের জীবনের মানবিক গল্পগুলোকে তুলে ধরে।
চিকিৎসক দিবস কেবল একটি আনুষ্ঠানিক দিন নয়। এটি একজন রোগীর বিশ্বাস, একজন ছাত্রের অনুপ্রেরণা, একজন গবেষকের সংগ্রাম এবং একজন মানুষের সহমর্মিতা আর সাহসের প্রতীক। ডা. বিধান চন্দ্র রায়ের জীবনই এর প্রকৃত উদাহরণ। আর, সেই কারণেই, ১ জুলাই শুধু একটি দিন নয়— এটি একজন 'হেলারের' প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর বিশেষ মুহূর্ত, বিশেষ দিন।