/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/07/nobel-prize-for-medicine-2025-10-07-16-08-23.jpg)
Nobel Prize for Medicine: (বামদিক থেকে তিন নোবেল প্রাপক) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটেলের ইনস্টিটিউট ফর সিস্টেমস বায়োলজির মেরি ই. ব্রঙ্কো (বয়স ৬৪), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর সোনোমা বায়োথেরাপিউটিক্স ফ্রেডেরিক জে. র্যামসডেল (বয়স ৬৪) এবং জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিমন সাকাগুচি (বয়স ৭৪)।
Nobel Prize 2025 Medicine: তাঁদের গবেষণা ক্যানসার এবং অটোইমিউন রোগের চিকিৎসায় আলোড়ন ফেলেছে। আর সেই কারণেই ২০২৫ সালের নোবেল পুরস্কার (Nobel Prize in Physiology or Medicine) দেওয়া হল জাপানি বিজ্ঞানী শিমন সাকাগুচি (Shimon Sakaguchi), মার্কিন বিজ্ঞানী মেরি ব্রঙ্কো (Mary Brunkow) ও ফ্রেডেরিক Frederick Ramsdell-কে। তারা আবিষ্কার করেছেন regulatory T cells এবং peripheral immune tolerance, যা ইমিউন সিস্টেমের কাজ বোঝার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রশ্ন ছিল, কীভাবে ইমিউন সিস্টেম ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা অন্যান্য জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে, কিন্তু নিজের শরীরের কোষকে আক্রমণ করে না? ১৯৮০-এর দশকে গবেষকরা সেন্ট্রাল টলারেন্স (central tolerance) চিনেছিলেন, যেখানে টি সেলগুলো (T cell) নিজের প্রোটিনকে চিনে ফেলে এবং বিপজ্জনক হলে ধ্বংস হয়। কিন্তু পুরো ইমিউন সিস্টেম আরও জটিল। ১৯৯৫ সালে সাকাগুচি (Sakaguchi) প্রমাণ দেন যে একটি নতুন ধরনের টি সেল (T cell) আছে যা অন্যান্য টি সেল (T cell)-কে নিয়ন্ত্রণ করে, যাতে শরীরের কোষে আক্রমণ না হয়। এটিই হল রেগুলেটরি টি সেল (regulatory T cell)। আর এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় পেরিফেরাল টলারেন্স (peripheral tolerance)।
আরও পড়ুন- চশমাকে বিদায় জানান, এই কায়দায় পরিষ্কার দৃষ্টি ফিরে পান সহজেই
সাকাগুচি (Sakaguchi) নবজাতক মাউসের থাইমাস অপসারণ করেন। ধারণা ছিল, এতে কম টি সেল (T cell) তৈরি হবে এবং ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হবে। কিন্তু মাউসগুলো অটোইমিউন রোগে আক্রান্ত হয়। পরবর্তীতে তিনি স্বাস্থ্যবান মাউস থেকে টি সেল (T cell) ইনজেকশন দেন। এই মাউসগুলো রোগে আক্রান্ত হয়নি, যা প্রমাণ করে যে রেগুলেটরি টি সেল (regulatory T cell)-এ 'ইমিউন পুলিশ'-এর কাজ রয়েছে। এরপর মেরি ব্রঙ্কো ও ফ্রেডরিক রামসডেল গবেষণা করেন স্কার্ফি (scurfy) মাউস-এর ওপর। তাঁরা শনাক্ত করেন যে ফক্সপি৩ (FOXP3) জিনের মাধ্যমে এই অটোইমিউন সমস্যা নিয়ন্ত্রিত হয়। ২০০৩ সালে সাকাগুচি (Sakaguchi) প্রমাণ করেন যে ফক্সপি৩ (FOXP3) জিন নিয়ন্ত্রণ করে রেগুলেটরি টি সেলস (regulatory T cells)-এর বিকাশ।
আরও পড়ুন- রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়, ৯৬তম জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি
এই আবিষ্কারের গুরুত্ব
এই আবিষ্কারের বিরাট গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষ করে বেশ কিছু চিকিৎসায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন-
(ক) ক্যানসার থেরাপি
কিছু টিউমার প্রচুর রেগুলেটরি টি সেলস (regulatory T cells) আকর্ষণ করে বা টেনে নেয়। যা অন্যান্য টি সেল (T cell)-কে কাজে বাধা দেয়। এই বাধা কাটানোর জন্য কার-টি থেরাপি (CAR-T therapy) এবং অন্যান্য ইমিউনোথেরাপি ব্যবহৃত হয়। এই থেরাপি রেগুলেটরি টি সেলস (regulatory T cells)-এর কার্যকারিতা কমিয়ে রোগীদের চিকিৎসা কার্যকর এবং সহজ করে।
আরও পড়ুন- সামান্য এই টিপসেই বাজিমাত, দূর করুন আপনার দুর্ভাগ্য!
(খ) অটোইমিউন রোগে প্রয়োগ
অটোইমিউন রোগে রোগীর ইমিউন সিস্টেম অতিসক্রিয় হয়ে যায়। রেগুলেটরি টি সেল (Regulatory T cell) বৃদ্ধি করে এই সময় রোগীর ইমিউন সিস্টেম শান্ত রাখা যায়।
আরও পড়ুন- দিঘার পথেই দুর্গ! পশ্চিম মেদিনীপুরের রহস্যঘেরা কুরুম্বেরা ফোর্টের ইতিহাস শুনলে অবাক হয়ে যাবেন
(গ) অঙ্গ প্রতিস্থাপন
প্রতিস্থাপন (Transplantation)-এ অঙ্গ প্রত্যাখ্যান (organ rejection) প্রতিরোধের জন্য রেগুলেটরি টি সেল (regulatory T cell) বাড়ানোর সম্ভাবনা এই গবেষণার ফলে বাড়ল। এই গবেষণায় কার-টি ও অন্যান্য থেরাপি রোগীরা নতুন আশার আলো দেখলেন। ফক্সপি৩ জিন এবং টি সেল নিয়ন্ত্রণে নতুন গবেষণা এইসব আবিষ্কারের সাহায্যে আরও এগিয়ে যাবে। অটোইমিউন রোগ, ক্যানসার এবং অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে নতুন থেরাপি তৈরি হবে।