Quit India Movement: ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে 'ভারত ছাড়' আন্দোলন এক অনন্য অধ্যায়। যার লক্ষ্য ছিল, ব্রিটিশ শাসনের উৎখাত। এই আন্দোলন ছিল মহাত্মা গান্ধীর আইন অমান্য আন্দোলনের অংশ। এই পর্যন্ত অনেকেরই জানা। কিন্তু, ভারত ছাড় আন্দোলনের আরও কিছু দিক ছিল। যেটা অনেকেই জানেন না। চলুন, তার কয়েকটি, দেখে নেওয়া যাক।
'ভারত ছাড়' আন্দোলনের পটভূমি
ক্রিপসের প্রস্থানের পর মহাত্মা গান্ধী ভারত থেকে ব্রিটিশদের প্রত্যাহার এবং জাপানি আক্রমণের বিরুদ্ধে অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব তৈরি করেছিলেন। ১৯৪২ সালের ১৪ জুলাই ওয়ার্ধায় আয়োজিত কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি (সিডব্লিউসি)-র সভায় এই আন্দোলনের ধারণা গৃহীত হয়েছিল। এরপর ১৯৪২ সালের জুলাই মাসে ওয়ার্ধায় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠক করেছিল এবং মহাত্মা গান্ধীকে এই অহিংস গণআন্দোলনের নেতা হিসেব বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
আরও পড়ুন- উৎসবের মাস, এই কায়দায় তৈরি করুন মালপোয়া, লেগে থাকবে মুখে!
এবং
আরও পড়ুন- বাংলার সঙ্গে রক্তের টান ব্রিটিশ লেখিকা ভার্জিনিয়ার! বোমা ফাটালেন নাতি
এই প্রস্তাবটিই 'ভারত ছাড়ো' প্রস্তাব নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। এরপর জওহরলাল নেহেরুর প্রস্তাবে এবং সর্দার প্যাটেলের সমর্থনে আগস্ট মাসে বম্বেতে আয়োজিত সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সভায় এই প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত মহাত্মা গান্ধী মুম্বইয়ের গোয়ালিয়া ট্যাংক ময়দানে 'ভারত ছাড় আন্দোলন' শুরু করেছিলেন। এই ময়দান 'আগস্ট ক্রান্তি ময়দান' নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। এই আন্দোলনের স্লোগান ছিল 'ভারত ছাড়'। গান্ধী ডাক দিয়েছিলেন 'কর অথবা মর'। এই আন্দোলন 'আগস্ট ক্রান্তি' নামেও পরিচিত।
আরও পড়ুন- ঠাকুরবাড়ির দুই রত্ন! রবীন্দ্রনাথ ও অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে চিরকালীন সুতোয় বেঁধে রেখেছে ৭ আগস্ট
'ভারত ছাড়' আন্দোলন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত
১৯৪২ সালের ৮ আগস্ট, বম্বের গোয়ালিয়া ট্যাংকে কংগ্রেসের সভায় 'ভারত ছাড়' প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছিল। সভায় ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবিলম্বে অবসানের দাবি করা হয়েছিল। সব ধরনের ফ্যাসিবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য স্বাধীন ভারতের অঙ্গীকারের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। ব্রিটিশ প্রত্যাহারের পর ভারতে একটি অস্থায়ী সরকার গঠনের কথা বলা হয়েছিল। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আইন অমান্য আন্দোলনে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল গোয়ালিয়া ট্যাংকের সভায়।
আরও পড়ুন- আজ হিরোশিমা দিবস, ভয়ংকর ঐতিহাসিক ঘটনায় জড়িত এই কথাগুলো জানতেন?
মহাত্মা গান্ধীর আহ্বান
মহাত্মা গান্ধী আহ্বান জানিয়েছিলেন, সরকারি কর্মচারীরা পদত্যাগের বদলে কংগ্রেসের আনুগত্য স্বীকার করুক। সৈন্যরা যেন সহযোদ্ধাদের ওপর গুলি না চালায়। জমিদাররা সরকারপন্থী হলে নিয়মমাফিক জমির ভাড়া শোধ করুক। সরকারবিরোধী হলে যেন ভাড়া শোধ না করে। শিক্ষার্থীরা আত্মবিশ্বাসী হলে, লেখাপড়া ছেড়ে দিতে পারে। রাজপুত্রদের জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে। জনগণের সার্বভৌমত্বকে স্বীকার করতে হবে। দেশীয় রাজ্যের বাসিন্দারা যেন রাজা সরকার-বিরোধী হলে তবেই তাঁকে সমর্থন করেন। আর, যেন নিজেদের ভারতের নাগরিক হিসেবে ঘোষণা করেন।