রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার (১৯ নভেম্বর) ছট পূজার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বিহার, পূর্ব উত্তর প্রদেশের কিছু অংশ এবং নেপালে ছটপুজো উদযাপিত হচ্ছে। গত এক দশকে দেশে ছট পুজোর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। প্রতি বছর, টিভি চ্যানেলগুলি টেমস বা প্রশান্ত মহাসাগরের তীরেও ছট উদযাপন করে।
কেন পালিত হয় ছটপুজো?
সূর্যদেবের সম্মানে ছটপুজো পালিত হয়। চার দিন এই পুজো চলে। ভক্তেরা নিরম্বু (জল ছাড়া) উপবাস করেন। জলাশয়ে দাঁড়িয়ে উষা ও প্রত্যুষার উপাসনা করেন। যেখানে উদীয়মান ও অস্তগামী সূর্যকে অর্ঘ্য দেওয়া হয়। কেন ছট পুজো করা হয়, তা নিয়ে বেশ কিছু বিশ্বাস প্রচলিত আছে। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে মানুষ যখন প্রকৃতির উপাসনা করা শুরু করেন, তখন থেকেই ছটপুজো চলে আসছে। আবার, ভগবান রাম বিজয়ী হয়ে দেবী সীতাকে লঙ্কা থেকে অযোধ্যায় নিয়ে ফেরার পর, তাঁরা উপবাস করেছিলেন। সেই সময় তাঁরা সূর্য দেবতার জন্য একটি যজ্ঞ করেছিলেন বলে কথিত আছে। মহাভারতে, যখন পাণ্ডবরা নির্বাসনে ছিলেন, দ্রৌপদী সাহায্যের জন্য ধৌম্য ঋষির কাছে গিয়েছিলেন। তিনি তাঁকে উপবাস করতে এবং সূর্যের কাছে প্রার্থনা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই সব রীতি পালনের পর অবশেষে দ্রৌপদীর সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। আবার মহাভারতেই আছে, কর্ণ তাঁর পিতা সূর্যের (সূর্য) সম্মানে একটি পুজোপাঠের আয়োজন করেছিলেন।
ছটের সঙ্গে বিহারের নাম জড়িয়ে গিয়েছে
আজ, ছট হল এমন একটি উৎসব, যা বিহারে ধর্মীয়তার প্রতীক হয়ে উঠেছে। এই উৎসবে অগণিত ভক্ত সূর্যের রশ্মি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রণাম করেন। সূর্যের দেবত্বের প্রতি ভক্তি প্রদর্শন করেন। তবে, শুধুমাত্র কিছু লোক উপবাস পালন করেন। সবাই করেন না। কিন্তু, গোটা সম্প্রদায় এই ছট উত্সবকে সফল করার চেষ্টা চালান। নদীর তীরে যাওয়ার রাস্তাগুলি পরিষ্কার করেন। আচার অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ছোট জিনিস সংগ্রহ করেন। ঠেকুয়া, প্রসাদ তৈরি করা হয়। এই অনুষ্ঠান এখন বিহারি উৎসবের সমার্থক হয়ে উঠেছে। তবে, বিশেষ কিছু রীতি আছে, যা ছটকে অন্যান্য উত্সব থেকে আলাদা করে তুলেছে।
আরও পড়ুন- ভোটের আগে হাইকোর্টে বড় স্বস্তি, জামিন পেলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
কী এই ছট?
সাধারণত কার্তিক (অক্টোবর-নভেম্বর) মাসের ষষ্ঠ দিনে ছটপুজো শুরু হয়। অনেকে চৈত্র বা এপ্রিল মাসেও তা পালন করেন। যাকে চৈতি ছট বলা হয়। ছঠি মাইয়া বা মা ছাঠি হলেন সূর্যের বোন। বলা হয় তিনি খুব উদার দেবী। তবে, চার দিনের উৎসবে খুব কঠোর নিয়ম পালন করা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, এতে প্রচুর আধ্যাত্মিক লাভ হয়।