গত ২০০৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে, নৈমিত্তিক মজুরির ভিত্তিতে কর্মসংস্থানে নিয়োজিত পিতার সন্তানদের আর্থিক গতিশীলতায় একটি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। কারণ, তারা এখন নৈমিত্তিক মজুরির চাকরির সম্ভাবনা কমেছে। পরিবর্তে, নৈমিত্তিক মজুরি শ্রমিকদের ছেলেরা এখন ক্রমবর্ধমান অনানুষ্ঠানিক, আধা-আনুষ্ঠানিক এবং আনুষ্ঠানিক নিয়মিত মজুরির কাজের দিকে হাঁটছেন। তবে, সাধারণ বর্ণের তুলনায় এক্ষেত্রে তফসিলি জাতিভুক্ত (এসসি) কর্মীর সন্তানদের এমন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দুর্বল।
একজন চাকুরীজীবী শাশুড়ির উপস্থিতি বিবাহিত মহিলারা কর্মক্ষেত্রে যোগদান করবেন কি না, তার অন্যতম প্রধান নির্ধারক। একই বাড়িতে বেকার শাশুড়ির উপস্থিতি বিবাহিত মহিলাদের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে। যেখানে কর্মে নিযুক্ত শাশুড়ির উপস্থিতি সম্ভাবনাকে কিছুটা কমিয়ে দেয়। আর, যে পরিবারে শাশুড়ি নেই, সেই পরিবারে বিবাহিত মহিলাদের কর্মসংস্থানে কোনও বাধা থাকে না।
আজিম প্রেমজি ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সাসটেইনেবল এমপ্লয়মেন্ট বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) এই ‘স্টেট অফ ওয়ার্কিং ইন্ডিয়া, ২০২৩’ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এটি কর্মসংস্থান-বেকারত্ব সমীক্ষা, পর্যায়ক্রমিক শ্রমশক্তি সমীক্ষা-সহ জাতীয় পরিসংখ্যান অফিসের মত বিভিন্ন তথ্যের উত্স ব্যবহার করে, ভারতের শ্রমবাজারের প্রবণতাকে প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত নথিতে, আন্তঃপ্রজন্মগত গতিশীলতা এবং মহিলাদের কর্মশক্তিতে অংশগ্রহণের হার সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, মহিলা নন, এমন সাধারণ বেকারদের বিচারে ১৯৮৩ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে, তফসিলি জাতিভুক্ত নিয়মিত মজুরি কর্মীর অনুপাত বেড়েছে। যদিও সাধারণ জাতি বিভাগের নিয়মিত মজুরি শ্রমিকের অনুপাত তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। অনুপাত কমলেও ২০২১ সালে ২২% তফসিলি জাতির কর্মীর তুলনায় ৩২% সাধারণ বর্ণের কর্মী নিয়মিত মজুরিতে নিযুক্ত ছিলেন। পালটা, তফসিলি জাতির কর্মীদের তুলনায় সাধারণ জাতির কর্মীদের মধ্যে স্বনিযুক্তি এবং কর্মসংস্থানের হার বেড়েছে। আর, বৃহৎ উদ্যোগে সাধারণ জাতির কর্মীদের সংখ্যা তফসিলি জাতির কর্মীর তুলনায় বেশ বেশি।
২০১৮ সালে নৈমিত্তিক মজুরিতে কর্মরত তফসিলি জাতি অথবা উপজাতি পিতাদের মধ্যে ৭৫.৬%-র ছেলেরা নিজেরাই নৈমিত্তিক মজুরির কর্মী হয়ে উঠেছিলেন। যা ২০০৪ সালে ৮৬.৫%-এর চেয়ে বেশ কম। সাধারণ জাতির ছেলেদের নৈমিত্তিক মজুরির ক্ষেত্রে পতন লক্ষ্য করা গেছে। ২০০৪ সালে তা ছিল ৮৩.২%। সেটাই ২০১৮ সালে কমে হয়েছে ৫৩%। কিন্তু, পরবর্তীতে সংখ্যাটা বেড়েছে। যার ফলে, তফসিলি জাতি অথবা উপজাতিদের তুলনায় সাধারণ বর্ণের নৈমিত্তিক মজুরির কর্মীদের অর্থনৈতিক আন্তঃপ্রজন্মগত গতিশীলতা বেশি স্পষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন- মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে চারিদিকে ব্যাপক নাচানাচি! কিন্তু, বাস্তবটা কী বলছে?
আরও পড়ুন- কংগ্রেস কেন বলছে মহিলা সংরক্ষণ বিল আসলে তাদেরই, কী করেছিলেন রাজীব গান্ধী?
আবার, ২০০৪ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে, নৈমিত্তিক মজুরি শ্রমিকদের ছেলেরা নৈমিত্তিক মজুরির কাজ থেকে অনানুষ্ঠানিক, আধা-আনুষ্ঠানিক এবং আনুষ্ঠানিক নিয়মিত মজুরির কাজে বেশি যুক্ত হয়েছে। ২০০৪ সালে নৈমিত্তিক মজুরির কাজে শুধুমাত্র তফসিলি জাতি ও উপজাতি পিতাদের মাত্র ০.২% ছেলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়মিত মজুরি-সংক্রান্ত কাজে যুক্ত ছিল। ২০১৮ সালে সেই সংখ্যা লাফিয়ে বেড়ে ২% হয়েছে। নৈমিত্তিক মজুরির কাজে সাধারণ জাতির পিতার সন্তানদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটাই ০% থেকে বেড়ে ৪.৭% হয়েছে।