চন্দ্রযান-২ মিশনে চাঁদের মাটিতে 'হার্ড ল্যান্ডিং' করেছে বিক্রম ল্যান্ডার, প্রায় আড়াই মাস পর অবশেষে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) প্রকাশ্যে স্বীকার করল এ কথা। বুধবার লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন চন্দ্রযান-২ এর বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হলে প্রধানমন্ত্রী র কার্যালয়ের প্রতিমন্ত্রী জীতেন্দ্র সিং লিখিত জবাবে জানান যে, চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করার সময় যে বেগ থাকার কথা তার চেয়ে অনেক তীব্র ছিল বিক্রমের বেগ। যার ফলে চন্দ্রপৃষ্ঠের ৫০০ মিটারের মধ্যেই হার্ড ল্যান্ডিং করে বিক্রম। যদিও হার্ড ল্যান্ডিংয়ের কারণেই ইসরোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে বিক্রমের, এ কথা আগেই জানিয়েছিল মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে
আরও পড়ুন: দাম বাড়াতে পারে জিও, এয়ারটেল ভোডাফোনের পথেই মুকেশ আম্বানির সংস্থা
প্রসঙ্গত, ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১.৩০ (অবাদে ৬ সেপ্টেম্বর রাত) থেকে দুশ্চিন্তার মুহূর্তের চিত্র ফুটে ওঠে ইসরোর অন্দরে। ‘সফট ল্যান্ডিং’ এর জন্য চন্দ্রপৃষ্ঠের ১০০ কিলোমিটার উচ্চতা থেকেই চতূর্ভুজ আকৃতির ল্যান্ডারের চারটি ইঞ্জিন চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে গতি ব্যর্থ হওয়ার পরই ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল চন্দ্রযানের। বিক্রমের 'হার্ড ল্যান্ডিং' প্রসঙ্গে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা বিবৃতি দিলেও, ইসরোর তরফে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি।
ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবম জানান মাত্র চাঁদ থেকে মাত্র ২.১ কিলোমিটার দূরত্বে পৌঁছে ছিটকে গিয়েছে ল্যান্ডার। টানা ১৪ দিন ধরে চেষ্টা চালিয়েও বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বিক্রমের অবতরণ সফল না হলেও চন্দ্রযান-২ অরবিটার কিন্তু সফল ভাবেই কাজ করে চলেছে। তাই চন্দ্রযান-২ নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্তে আসতে নারাজ ইসরো। তবে ঠিক কী কারণে বিক্রমের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হল, তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি বিশেষ কমিটি কাজ করছে। কমিটির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: কলকাতায় হঠাৎ টাকাবৃষ্টি, উড়ছে দু’হাজার-পাঁচশোর আসল নোট! দেখুন ভিডিও
তবে লোকসভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিমন্ত্রী লিখিতভাবে জানান, "প্রাথমিকভাবে চন্দ্রপৃষ্ঠর ৩০কিমি থেকে ৭.৪ কিমি পর্যন্ত ঠিকমতোই কাজ করছিল বিক্রম। এমনকি ১৬৮৩ মিটার/ সেকেন্ড থেকে গতিবেগ কমে আসে ১৪৬ মিটার/সেকেন্ড। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে গতিবেগ কমাতে ব্যর্থ হয়। যে মূহুর্তটিকে ফাইন বেকিং ফেজ বলা হচ্ছিল সেই মূহুর্তেই নিজের কক্ষপথ থেকে সরে যায় বিক্রম। ফলস্বরূপ, ৫০০ মিটারের মধ্যেই হার্ড ল্যান্ডিং করতে বাধ্য হয় বিক্রম।" জীতেন্দ্র সিং বলেন, 'অবতরণ ছাড়া, চন্দ্রায়ণ -২ মিশনের বেশিরভাগ লক্ষ্য সফল হয়েছে।'
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিমন্ত্রী জীতেন্দ্র সিং বলেন, "লঞ্চ, কক্ষপথ পরিবর্তন কৌশল, ল্যান্ডার সেপারেশন, ডি-বুস্ট এবং রাফ ব্রেকিং ফেস-সহ বেশিরভাগ প্রযুক্তিই সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। চাঁদের কক্ষ পথে এখনও ১ বছর থাকবে চন্দ্রযান-২ অরবিটার। এখনও পর্যন্ত ঠিকঠাকভাবেই কাজ করছে সে। বর্তমানে চাঁদের কক্ষপথে ঘুরে বেড়াচ্ছে চন্দ্রযান-২। সেখান থেকেই চাঁদের মাটির রঙিন ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে সে। সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে আয়োজিত সর্বভারতীয় সভায় বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয়েছে।"
Read the full story in English