Monday Fasting: শ্রাবণ সোমবারের উপবাস ও ব্রতকথা, কী করলে মিলবে শিবের কৃপা?

Monday Fasting: শ্রাবণ মাসের সোমবার ভগবান শিবের আরাধনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে উপবাস ও শিব ব্রতকথা পাঠ করলে সকল মনোবাসনা পূর্ণ হয় বলে বিশ্বাস।

Monday Fasting: শ্রাবণ মাসের সোমবার ভগবান শিবের আরাধনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে উপবাস ও শিব ব্রতকথা পাঠ করলে সকল মনোবাসনা পূর্ণ হয় বলে বিশ্বাস।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Mahashivratri 2025

Monday Fasting: ভগবান শিবের কৃপা লাভের উপায়।

Monday Fasting: হিন্দু ধর্মে শ্রাবণ মাসের সোমবারের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ২৮ জুলাই শ্রাবণ মাসের সোমবার। এই মাস ভগবান শিবের প্রিয় মাস হিসেবে পরিচিত। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, যে ব্যক্তি শ্রাবণ সোমবারে উপবাস করেন এবং শিবের পূজা করেন, তাঁর সমস্ত ইচ্ছা পূরণ হয়। শুধু তাই নয়, এই সময় পূজা করলে ভগবান শিব এবং মাতা পার্বতীর আশীর্বাদ পাওয়া যায়। তবে, এই দিনের বিশেষত্ব হল- একটি উপবাসের গল্প পাঠ করাই বিধেয়। ভক্তদের বিশ্বাস, এই গল্প পাঠ ছাড়া উপবাসের ফল পাওয়া যায় না। 

Advertisment

শ্রাবণ সোমবারের উপবাসের গল্প

এক শহরে এক মহাজন থাকতেন। তাঁর টাকার অভাব ছিল না। কিন্তু, তাঁর কোনও সন্তান ছিল না। সেই কারণে তিনি মানসিক অশান্তিতে ভুগতেন। পুত্রলাভের আকাঙ্ক্ষায় প্রতি সোমবার উপবাস করতেন। শিব মন্দিরে যেতেন। ভগবান শিব এবং দেবী পার্বতীর পূজা করতেন। এই পূজায় সন্তুষ্ট হয়ে দেবী পার্বতী ভগবান শিবকে সেই মহাজনের পূজা করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। দেবী পার্বতীর ইচ্ছা শুনে ভগবান শিব বলেছিলেন, প্রতিটি প্রাণী তাঁর কর্মফল ভোগ করে। ওই মহাজনের ভাগ্যে যা আছে, তাঁকে সেটা ভোগ করতে হবে।' কিন্তু, তারপরও দেবী পার্বতী ওই মহাজনের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য ভগবান শিবকে অনুরোধ করেছিলেন। 

Advertisment

আরও পড়ুন- এই মশলামাখানো কলাভাজা গরম ভাতের সঙ্গে খেয়ে দেখুন, হাত চাটবেন!

দেবী পার্বতীর অনুরোধে ভগবান শিব ওই মহাজনকে এক পুত্র সন্তানের আশীর্বাদ দিয়েছিলেন। কিন্তু, একইসঙ্গে বলেছিলেন যে ওই সন্তান মাত্র ১২ বছর বেঁচে থাকবে। একথা শোনার পর ওই মহাজন খুশিও হননি এবং দুঃখও পাননি। তিনি আগের মতই ভগবান শিবের উপাসনা করে যাচ্ছিলেন। এরপর মহাজনের একটি ছেলে হয়। ছেলেটির যখন ১১ বছর বয়স, সেই সময় তাঁকে পড়তে কাশীতে পাঠানো হয়। মহাজন তাঁর শ্যালককে ডেকে প্রচুর টাকা দিয়ে বলেছিলেন যে, তাঁর ছেলেকে কাশীতে নিয়ে গিয়ে লেখাপড়া এবং যজ্ঞ করানোর জন্য। একইসঙ্গে বলে দিয়েছিলেন, যজ্ঞ করানোর সঙ্গে যেন ব্রাহ্মণদের খাওয়ানো হয় এবং তাঁদের দক্ষিণা দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী মামা ও ভাগ্নে যজ্ঞ করেছিলেন, ব্রাহ্মণদের খাইয়েছিলেন এবং দক্ষিণা দিয়ে কাশীর পথে রওনা দিয়েছিলেন। 

আরও পড়ুন- ঝলমলে চুলের জন্য ব্যবহার করুন ঘরোয়া জিনিস, ফলো করুন ৫ দুর্দান্ত টিপস

পথে তাঁরা একটি শহরে পৌঁছন। সেই শহরে তখন শহরের রাজার মেয়ের বিয়ে হচ্ছিল। কিন্তু, ওই রাজকন্যার যে রাজপুত্রের সঙ্গে বিয়ে করার কথা ছিল, তাঁর একচোখ অন্ধ ছিল। মেয়েটি এবং তাঁর পরিবার সেই ব্যাপারে জানতেন না। রাজপুত্রের বাবা তাঁর ছেলের অন্ধত্ব গোপন করার জন্য একটি ফন্দি এঁটেছিলেন। তিনি মহাজনের ছেলেকে বর সাজিয়ে নিয়ে গেলেন। ঠিক করেছিলেন, বিয়ের পর মহাজনের ছেলেকে টাকা দিয়ে বিদায় করে দেবেন। আর, রাজকন্যাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে চলে আসবেন। কিন্তু, মহাজনের ছেলে সততার কারণে রাজকন্যার দোপাট্টায় লিখে দিয়েছিলেন, 'তুমি আমার সঙ্গে বিবাহিত। কিন্তু, যে রাজপুত্রের সঙ্গে তোমাকে পাঠানো হল, তার একচোখ অন্ধ। আমি লেখাপড়া করতে কাশী যাচ্ছি।' 

আরও পড়ুন- চুল ৪০-এও শক্তপোক্ত, ভক্তদের জন্য সিক্রেট ফাঁস বলিউডের রানি করিনার

রাজকন্যা তাঁর দোপাট্টায় যা লেখা ছিল, সেকথা তাঁর বাবাকে জানান। রাজা সেকথা জেনে তাঁর বাবাকে বিদায় দেননি। আর, ওই মহাজনের ছেলে ও তাঁর মামা কাশীতে পৌঁছে সেখানে যজ্ঞ করেন। মহাজনের ছেলের বয়স ১২ বছর পূর্ণ হওয়ার দিনই যজ্ঞ আয়োজিত হয়েছিল। ছেলেটি তাঁর মামাকে সেই সময় জানিয়েছিলেন যে তাঁর শরীর ভালো লাগছে না। যা শুনে তাঁর মামা বলেছিলেন, 'তুমি ভিতরে গিয়ে ঘুমাও।' কিন্তু, ভগবান শিবের আশীর্বাদে ছেলেটি কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান। কাকতালীয়ভাবে, ভগবান শিব এবং মাতা পার্বতী ওই জায়গা দিয়ে যাচ্ছিলেন। দেবী পার্বতী ভগবান শিবকে সেই সময় বলেন, 'স্বামী ওই লোকটির কান্নার শব্দ সহ্য করতে পারছি না। আপনি ওই ব্যক্তির যন্ত্রণা দূর করুন।'

আরও পড়ুন- চুল পড়ছে? সপ্তাহে একবার লাগান অ্যালোভেরা হেয়ার মাস্ক, মিলবে দুর্দান্ত ফল

যা শুনে ভগবান শিব মৃত ছেলেটির কাছে যান। আর পার্বতীকে বলেন, 'এই সেই মহাজনের ছেলে। আমি বর দিয়েছিলাম যে এ ১২ বছর বাঁচবে। এখন তার বরদানের সময়সীমা পূর্ণ হয়েছে।' যা শুনে মাতৃত্ববোধে আচ্ছন্ন দেবী পার্বতী বলেন, 'হে মহাদেব! দয়া করে এই ছেলেটিকে জীবন দান করুন। না-হলে তার মা-বাবাও বিচ্ছেদের যন্ত্রণায় মারা যাবেন।' এরপর দেবী পার্বতীর অনুরোধে ভগবান শিব মহাজনের ছেলেটিকে জীবনদান করেন। শিবের কৃপায় শেষ পর্যন্ত ছেলেটি বেঁচে ওঠে। কাশীতে শিক্ষাগ্রহণের পর মহাজনের ছেলে তাঁর মামার সঙ্গে যান সেই শহরে, যেখানে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। সেখানে তাঁরা একটি যজ্ঞেরও আয়োজন করেছিলেন। ছেলেটির শ্বশুর তাঁকে চিনতে পেরে প্রাসাদে নিয়ে যান। যত্ন-আত্তি করেন এবং মহাজনের ছেলের সঙ্গে নিজের মেয়েকে বিদায় দেন। 

এই গোটা সময়কালে মহাজন ও তাঁর স্ত্রী ছেলের ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত অবস্থায় ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিলেন। তাঁরা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, যদি তাঁদের ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পান, তবে জীবন ত্যাগ করবেন। শেষ পর্যন্ত তাঁরা তাঁদের ছেলে বেঁচে আছে জেনে খুব খুশি হন। সেই রাতে ভগবান শিব ওই মহাজনকে স্বপ্নে দেখা দেন। তাঁকে বলেন, 'সোমবারে তোমার উপবাস এবং ব্রতকথা শুনে আমি সন্তুষ্ট। তোমার ছেলেকে দীর্ঘায়ু দান করছি। একইভাবে যে কেউ সোমবারের উপবাস করবে বা ব্রতকথা শুনবে, তাঁর সমস্ত দুঃখ দূর হবে।'     

Fasting Monday