Skincare Lifestyle: ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার এখনকার ট্রেন্ড। সেই তালিকায় বাদাম একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বাদাম খেলে শরীর যেমন ভালো থাকে, তেমনই এটি ব্যবহার করলে ত্বকও হয় ঝকঝকে এবং উজ্জ্বল। বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন ই, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে আর বয়সের ছাপ কমায়। জেনে নিন বাদাম দিয়ে কীভাবে আপনি ঘরেই ত্বকের যত্ন নিতে পারেন:
১. বাদামের উপকারিতা (Benefits of Almond for Skin)
বাদামের খোসা ছাড়িয়ে কষিয়ে নিন এবং এতে এক চা চামচ লেবুর রস, দুই টেবিল চামচ দুধ ও সামান্য ক্রিম মিশিয়ে মুখে লাগান। ১০ মিনিট রেখে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের গভীর থেকে ময়লা তুলে দেয়। বাদামে রয়েছে ভিটামিন E, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্যাটি অ্যাসিড
আরও পড়ুন- হাত গরম না ঠান্ডা? তাপমাত্রাই জানিয়ে দেবে আপনার অন্ত্র ঠিকঠাক কাজ করছে কি না!
২. বাদামের ফেসপ্যাক বানানোর রেসিপি
রাতে বাদাম ভিজিয়ে রেখে সকালে পিষে নিন। এতে যোগ করুন ওটস পাউডার ও কাঁচা দুধ। ভালো করে মিশিয়ে মুখে লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা বাড়বে। এই সব ব্যবস্থাই পুরোপুরি ঘরোয়া এবং প্রাকৃতিক। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে কাচের মতো স্বচ্ছ, উজ্জ্বল এবং ব্রণ আর দাগমুক্ত।
আরও পড়ুন- জিমে ছুটতে হবে না, শুধু এই ক'টা কাজ করুন, ঘরেই ঝরঝর করে কমবে ওজন
৩. বাদামের স্ক্রাব কীভাবে কাজ করে
বাদাম পিষে নিন এবং এতে যোগ করুন কোকো পাউডার, অ্যালোভেরা জেল এবং সামান্য লেবুর রস। এটি আপনার মুখে লাগিয়ে হালকা করে হাতে ৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন। ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেললে মৃত কোষ সরে যাবে এবং ত্বক হবে মসৃণ।
আরও পড়ুন- মাত্র ২টি বাদামে কমান থাইরয়েড!
৪. বাদাম তেল ম্যাসাজের উপকারিতা, নিয়মিত ব্যবহারে কী ফল পাওয়া যায়?
রাতে ঘুমানোর আগে মুখে কয়েক ফোঁটা বাদাম তেল নিয়ে আলতো ম্যাসাজ করুন। এটি ত্বকের হাইড্রেশন ধরে রাখে ও ব্রণ প্রতিরোধ করে।
আরও পড়ুন- বাজারি হেয়ার ডাই লাগবে না, একমুঠো কারিপাতা দিয়েই চুল করুন মুহূর্তের মধ্যে ঘন কালো
৫. বাদাম ময়েশ্চারাইজার
এক চা চামচ অ্যালোভেরা জেল, এক চা চামচ গ্লিসারিন এবং ১০ ফোঁটা বাদাম তেল মিশিয়ে একটি ঘরোয়া ময়েশ্চারাইজার তৈরি করুন। এটি প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন।
কতবার ব্যবহার করা উচিত?
ঘরোয়া স্কিনকেয়ারে বাদামের তৈরি ফেসপ্যাক, স্ক্রাব বা তেল ব্যবহার করা হলে তা সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বারই যথেষ্ট।
অতিরিক্ত ব্যবহারে ত্বকে অতিরিক্ত তেল জমে গিয়ে ব্রণ বা র্যাশ হতে পারে। বিশেষ করে সংবেদনশীল ত্বকে নিয়মিত ব্যবহার শুরু করার আগে patch test জরুরি।
কাদের জন্য বাদাম ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে? কারা বাদাম ব্যবহার এড়াবেন?
-
বাদামের অ্যালার্জি আছে যাদের: বাদামে থাকা প্রোটিন বা ফ্যাটি অ্যাসিডে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। চুলকানি, ফোলা বা র্যাশ হতে পারে।
-
সংবেদনশীল বা ব্রণপ্রবণ ত্বক: বাদামের তেল কখন কখন মুখের লোমকূপ আটকে দিতে পারে (comedogenic)। এতে ব্রণ বাড়তে পারে।
-
ত্বকে এক্সফোলিয়েশন চলাকালীন: যদি আপনি রেটিনল বা অ্যাসিড বেসড স্কিনকেয়ার ব্যবহার করছেন, তখন বাদামের স্ক্রাব বা প্যাক ব্যবহার না করাই ভালো।
-
অপারেশনের পরে বা ত্বকের ইনফেকশন থাকলে: এই সময় স্কিনের উপরে কোনো ধরনের ফেসপ্যাক বা তেল ব্যবহার করলে ইনফেকশন বেড়ে যেতে পারে।
সতর্কতা ও টিপস
Patch Test করুন: ব্যবহারের আগে হাতের পেছনে বা কানের নীচে পেস্ট বা তেল লাগিয়ে দেখে নিন কোনও প্রতিক্রিয়া হয় কি না।
সঠিক উপাদান ব্যবহার করুন: বাদাম বাটা হলে তা যেন খুব খসখসে না হয়, না হলে স্কিনে র্যাশ বা ক্ষত হতে পারে।
অরগ্যানিক বাদাম তেল বেছে নিন: বাজারের কেমিক্যালযুক্ত বা সুগন্ধি বাদাম তেল ব্যবহার না করাই ভালো।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন: বাদাম প্যাক বা তেল ব্যবহারের পরে রোদে বেরোলে ত্বক পুড়ে যেতে পারে। তাই রোদে বেরোনোর আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
চোখের চারপাশে লাগাবেন না: বাদাম তেল বা পেস্ট কখনোই চোখের চারপাশে ব্যবহার করবেন না। এতে জ্বালাভাব বা অ্যালার্জি হতে পারে।
সংরক্ষণ: ফ্রেশ বাটা বাদাম বা পেস্ট তৈরি করে ১ দিনের বেশি ফ্রিজে রাখবেন না। তেল হলে শুকনো ঠান্ডা জায়গায় রাখুন।