/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/24/atmaram-kouto-1-2025-10-24-21-54-59.jpg)
Belur-math-atmaramer-kouto-swami-vivekananda: আত্মারামের কৌটো।
Belur Math: বেলুড় মঠের পবিত্র পরিবেশে এমন একটি জায়গা আছে, যেখানে আজও প্রতিদিন নিত্যপূজা করা হয় এক রহস্যময় কৌটোকে। এই কৌটো সন্ন্যাসীদের কাছে আত্মারামের কৌটো (Atmaramer Kouto) নামে পরিচিত। এই পিতলের কৌটোকে রামকৃষ্ণ মঠ এবং মিশনের সদর কার্যালয় বেলুড় মঠে বিশেষ শ্রদ্ধার প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। এই কৌটোকে ঘিরে রয়েছে বহু অলৌকিক কাহিনি। স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ (Swami Vivekananda) পর্যন্ত এই কৌটোর অলৌকিক ক্ষমতার সাক্ষী হয়েছেন।
ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণদেব শরীরত্যাগের পর তাঁর দেহের ভস্মাবশেষ একটি কৌটোতে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে যখন বেলুড় মঠ প্রতিষ্ঠিত হয়, সেই কৌটো অতি সযত্নে মঠের মূল গর্ভমন্দিরের ওপরতলায় রাখা হয়েছিল। এই কৌটোকে স্বামীজী নিজে নাম দিয়েছিলেন— 'Atmaramer Kouto'। অর্থাৎ, 'ঠাকুরের আত্মা।'
আরও পড়ুন- দেবী হতাশ করেন না, বিশ্বাস গোকর্ণের শ্যামারায় কালীর ভক্তদের!
বিশেষ তিথিতে সর্বসমক্ষে
প্রতিবছর এই কৌটো তিনটি বিশেষ তিথিতে সর্বসমক্ষে আনা হয়। সেই তিনটি বিশেষ তিথি হল— জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা, দুর্গাপূজার মহাষ্টমী স্নান, শ্রীরামকৃষ্ণদেবের জন্মতিথি পূজা। এই তিন দিনেই মঠের সাধু ও ভক্তরা বিশেষভাবে এই কৌটোর পূজা (Pujo) করেন।
আরও পড়ুন- ভুলেও খাবার টেবিলে রাখবেন না এই ৫টি জিনিস, হবে ঘোর অমঙ্গল!
একবার স্বামী বিবেকানন্দের শিষ্য স্বামী নির্ভয়ানন্দ (Swami Nirvayananda) প্রবল জ্বরে আক্রান্ত হন। তাঁর শরীরের তাপমাত্রা ১০৭ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছে যায় এবং প্রলাপ দেখা দেয়। চিকিৎসায় ফল না মেলায় স্বামীজি গভীর উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তখন তিনি ঠাকুরঘরে প্রবেশ করে আত্মারামের কৌটো ‘Atmaramer Kouto’ গঙ্গাজলে ধুয়ে সেই পবিত্র জল নির্ভয়ানন্দকে পান করান। অল্প সময়ের মধ্যেই জ্বর কমে যায়, এবং আশ্চর্যভাবে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন। তখন স্বামীজি উপস্থিত সকলকে বলেছিলেন, 'দেখ ঠাকুরের শক্তি দেখ! তিনি কী না করতে পারেন।' এই ঘটনার পর থেকেই বেলুড় মঠে কৌটোটি আরও বেশি শ্রদ্ধার সঙ্গে পূজিত হতে থাকে।
আরও পড়ুন- ভাই-বোনের মন্দির! ভারতের এই মন্দিরগুলিতে ভাই-বোন একসঙ্গে পূজা দিলে, দূর হয় বিভেদ!
স্বামীজীর স্বভাব ছিল— কোনও কিছু অন্ধভাবে গ্রহণ করা নয়, বরং বিচার করে তবেই বিশ্বাস করা। একদিন তিনি প্রণাম করে মনে মনে ভাবলেন, সত্যিই কি এই কৌটোতে ঠাকুরের উপস্থিতি আছে? তখন তিনি মনে মনে প্রার্থনা করেন, 'ঠাকুর, যদি তুমি সত্যিই এখানে থাকো, তবে তিন দিনের মধ্যে গোয়ালিয়রের মহারাজকে মঠে পাঠাও।' সেই সময় মহারাজ কলকাতায় থাকলেও বেলুড় মঠে আসার কোনও সম্ভাবনাই ছিল না। কিন্তু, আশ্চর্যজনকভাবে পরের দিনই মহারাজ বেলুড় মঠের পথ ধরেন এবং স্বামীজীর খোঁজ নেন। এই খবর শুনে স্বামীজি গভীর আবেগে কৌটার সামনে এসে বারবার প্রণাম করে বলেন, 'তুমি সত্যি! তুমি সত্যি! তুমি সত্যি!' এরপর থেকে তিনি সকলকে নির্দেশ দেন, আত্মারামের কৌটোকে যেন সর্বদা বিশেষ যত্ন এবং ভক্তির সঙ্গে পূজা করা হয়।
আরও পড়ুন- ভাইফোঁটার ডিনার! সু্স্বাদু এই প্রন হাক্কা নুডলসে রাতটা করুন সেরা স্মৃতি
বেলুড় মঠে আজও এই পবিত্র কৌটো বিশেষভাবে সংরক্ষিত আছে। ঠাকুরঘরের প্রতিদিনের পূজায় এই কৌটোকে প্রণাম করা হয়। তার আরাধনা করা হয়। সাধু ও ভক্তদের বিশ্বাস, এই কৌটোতে আজও ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের ঈশ্বরিক উপস্থিতি রয়েছে। অনেকে বলেন, মঠে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে যে গভীর শান্তি অনুভূত হয়, তা যেন ‘আত্মারামের কৌটো’-র শক্তির প্রতিফলন। কারণ, এই কৌটোতেই রয়েছে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের ভস্মাবশেষ।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us