Murshidabad Gokarna Kali Puja: দেবী হতাশ করেন না, বিশ্বাস গোকর্ণের শ্যামারায় কালীর ভক্তদের!

Murshidabad Gokarna Kali Puja: মুর্শিদাবাদের ঐতিহ্যবাহী গ্রাম গোকর্ণের কালীপুজো আজও বাঙালির ভক্তির প্রতীক। শতাব্দী প্রাচীন মা শ্যামারায় কালীর মন্দিরে আজও শোনা যায় অলৌকিক কাহিনি।

Murshidabad Gokarna Kali Puja: মুর্শিদাবাদের ঐতিহ্যবাহী গ্রাম গোকর্ণের কালীপুজো আজও বাঙালির ভক্তির প্রতীক। শতাব্দী প্রাচীন মা শ্যামারায় কালীর মন্দিরে আজও শোনা যায় অলৌকিক কাহিনি।

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Murshidabad Gokarna Kali: এই পুজোর রয়েছে এক বিরাট ইতিহাস।

Murshidabad Gokarna Kali: এই পুজোর রয়েছে এক বিরাট ইতিহাস।

Murshidabad Gokarna Kali Puja: বাংলার প্রত্যেকটি জেলার মতো মুর্শিদাবাদও তার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের জন্য প্রসিদ্ধ। এই জেলার এক প্রাচীন গ্রাম গোকর্ণ, যেখানে কালীপূজা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং কয়েক শতাব্দীর ঐতিহ্য আর ভক্তির প্রতিচ্ছবি। 

Advertisment

গোকর্ণ গ্রামটি গঙ্গার পুরোনো ধারার তীরে অবস্থিত। চারদিকে বিশাল জলভূমি, তারই মধ্যে পাটনের বিল বা কালীদহের তীরে গড়ে উঠেছে এই ঐতিহাসিক বসতি। প্রাচীন গৌড়ের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ এখান থেকে খুব কাছেই। ইতিহাসবিদদের মতে, সম্রাট শশাঙ্কদেব বা রাজা কর্ণসেন-এর আমলেই গোকর্ণের গোশালাগুলি গড়ে উঠেছিল। সেই থেকেই গ্রামের নাম 'গোকর্ণ'।

আরও পড়ুন- ভাই-বোনের মন্দির! ভারতের এই মন্দিরগুলিতে ভাই-বোন একসঙ্গে পূজা দিলে, দূর হয় বিভেদ!

Advertisment

আজও এই গ্রাম তার দেড় হাজার বছরের ইতিহাস বহন করে চলেছে। এখানে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫৩টি কালীপূজা হয়। তার মধ্যে বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ হল বারাহী কালী, ছোট রায় কালী, বড় রায় কালী, শ্যামাকালী, গঙ্গাময়ী কালী এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় শ্যামারায় কালী। 

আরও পড়ুন- ভাইফোঁটার ডিনার! সু্স্বাদু এই প্রন হাক্কা নুডলসে রাতটা করুন সেরা স্মৃতি

প্রায় তিন-চারশো বছর আগে গোকর্ণের বাসিন্দা হটেশ্বর রায় শ্মশানে এক কালী প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করে পূজা শুরু করেন। সেই সময় একে বলা হত 'হাটু রায় কালী'। পরে মধ্যযুগে পাঠান সৈন্যদের আক্রমণে দেবীর রত্নবেদী নষ্ট হয়। স্বপ্নাদেশে গোকর্ণের আরেক বাসিন্দা শ্যামাচরণ রায় নিজের বাড়িতে নতুন বেদী স্থাপন করে ওই দেবীর পূজা শুরু করেন। সেই থেকেই দেবীর নাম হয় 'শ্যামা রায় কালী'। এই মন্দিরের বিশেষত্ব হল— এখানে দেবীর প্রতিমা দক্ষিণা কালী রূপী। বেদীতেও দেবীর মুখ খোদাই করা। তাঁর দুই পাশে অধিষ্ঠিত আছেন রাধাকৃষ্ণ ও মহাদেব। 

আরও পড়ুন- ভাইফোঁটায় এই নিয়মগুলো মানছেন কি, মানলে কী হবে জানেন?

বামদেব ও কুকুরদাসের অলৌকিক কাহিনি

গোকর্ণের কালীপূজার ইতিহাসে জড়িয়ে আছে এক আশ্চর্য গল্প। শ্যামাচরণ রায়ের বংশের এক দম্পতির বারবার সন্তানহানি ঘটছিল। তাঁরা তারাপীঠের মহাসাধক বামদেবের বা বামাক্ষ্যাপার শরণাপন্ন হন। বামদেব তাঁদের নির্দেশ দেন, কুকুরের উচ্ছিষ্ট দিয়ে সন্তানের অন্নপ্রাশন করতে। সেই সন্তান দীর্ঘজীবী হন, এবং পরে তিনি তান্ত্রিক 'কুকুরদাস' নামে পরিচিত হন। তিনি হয়ে ওঠেন অঞ্চলের এক প্রসিদ্ধ মাতৃসাধক।

আরও পড়ুন- তিলক নয়, কেন ভাইকে ফোঁটাই দেওয়া হয়, বোন না থাকলে নেবেন কার থেকে?

কার্তিক মাসের অমাবস্যায় গোকর্ণে কালীপূজা উপলক্ষে অসংখ্য ভক্ত এসেছিলেন। এছাড়াও প্রত্যেক শনি ও মঙ্গলবারে বিশেষ ভিড় হয়। বছরের বাকি সময়ও দেবীর নিত্যপূজায় আট রকম ভাজা ও ময়দা দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়। এই মন্দিরে প্রতিমার বিসর্জন হয় না, যা বাংলার অন্যত্র বিরল। কথিত আছে এই দেবী নাকি অত্যন্ত জাগ্রত। তিনি ভক্তদের ফেরান না।

Kali Murshidabad