Loknath Brahmachari: রণে-বনে-জলে-জঙ্গলে, বিপদে-আপদে তিনিই বাঙালির ভগবান!

Loknath Brahmachari: লোকনাথ ব্রহ্মচারী (বাবা লোকনাথ) ছিলেন হিন্দু বাঙালি সিদ্ধপুরুষ। জন্ম ১৭৩০ সালে কচুয়া গ্রামে। কঠোর সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে তিনি পূজনীয় হয়ে ওঠেন।

Loknath Brahmachari: লোকনাথ ব্রহ্মচারী (বাবা লোকনাথ) ছিলেন হিন্দু বাঙালি সিদ্ধপুরুষ। জন্ম ১৭৩০ সালে কচুয়া গ্রামে। কঠোর সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে তিনি পূজনীয় হয়ে ওঠেন।

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Loknath Brahmachari

Loknath Brahmachari: লোকনাথ ব্রহ্মচারী।

Joy Baba Loknath: লোকনাথ ব্রহ্মচারী (৩১ আগস্ট ১৭৩০ – ১ জুন ১৮৯০) ছিলেন এক মহান হিন্দু সাধক ও সিদ্ধপুরুষ। ভক্তদের কাছে তিনি 'বাবা লোকনাথ' নামেই পরিচিত। বাংলার গ্রামবাংলা থেকে শুরু করে সারা দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য ভক্ত ছড়িয়ে রয়েছে।

জন্মাষ্টমীর দিন জন্ম

Advertisment

১৭৩০ খ্রিস্টাব্দের ৩১শে আগস্ট, জন্মাষ্টমীর দিন, তৎকালীন ২৪ পরগণা জেলার কচুয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা রামনারায়ণ ঘোষাল ও মাতা কমলাদেবী ছিলেন ব্রাহ্মণ পরিবারভুক্ত। লোকনাথ ছিলেন তাঁদের চতুর্থ সন্তান। জন্ম থেকেই তিনি ছিলেন ভক্তিময় ও ধর্মপরায়ণ।

আরও পড়ুন- যেন পথের দাবীর সব্যসাচী! জনতার 'ডাক্তার' যাদুগোপালই বিপ্লবীদের মাথা

Advertisment

মাত্র ১১ বছর বয়সেই লোকনাথ তাঁর গুরু ভগবান গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। তাঁর বাল্যবন্ধু বেণীমাধব চক্রবর্তীও এই পথচলায় সঙ্গী হন। গুরুদেবের নির্দেশে তাঁরা কালীঘাট থেকে হিমালয়ের বরফাবৃত অঞ্চলে চলে যান এবং দীর্ঘ ৫০ বছর কঠোর সাধনা করেন। এই সাধনার মধ্য দিয়ে লোকনাথ সিদ্ধিলাভ করেন।

আরও পড়ুন- সেপ্টেম্বরে ১৫ দিন বন্ধ থাকবে ব্যাংক, কোন দিনগুলোয়? দেখুন বিস্তারিত তালিকা

লোকনাথ ব্রহ্মচারী অণিমা, লঘিমা, ঈশিতা, বশিতা প্রভৃতি অষ্টাদশ সিদ্ধি লাভ করেন বলে ভক্তরা বিশ্বাস করেন। তাঁর ভক্তরা তাঁকে স্বয়ং মহাদেবের অবতার হিসেবে মানেন। কথিত আছে, যাঁরা তাঁর নাম নেন, তাঁদের দুঃসময় কেটে যায় এবং রক্ষা পান বিপদ থেকে। 

আরও পড়ুন- শাস্ত্রমতে এই তিথিতেই গণেশের বিসর্জন, ৬ না ৭ সেপ্টেম্বর, কবে অনন্ত চতুর্দশী?

সিদ্ধিলাভের পর লোকনাথ বাবা পায়ে হেঁটে বহু দেশ ভ্রমণ করেন। তিনি মক্কা, কাবুল, পারস্য ও ইসরায়েল পর্যন্ত পৌঁছন। ভক্তকথায় জানা যায়, তিনি আবদুল গফুর নামে এক ৪০০ বছরের ফকিরের সঙ্গে এবং কাবুলের মোল্লা সাদির সঙ্গে আধ্যাত্মিক আলাপ করেছিলেন।

আরও পড়ুন- ৩০ নাকি ৩১ আগস্ট, কবে রাধাষ্টমী? জানুন শুভ মুহূর্ত ও ব্রতের মাহাত্ম্য

১৮৬৬ সালে তিনি বাংলায় ফিরে আসেন এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার বারদী গ্রামে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেন। এখানেই তিনি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন, যা আজও ভক্তদের অন্যতম তীর্থস্থান। বারদীতে তিনি সরল জীবনযাপন করতেন এবং সকল ধর্মের মানুষকে সমানভাবে কাছে টেনে নিতেন। 

১৮৯০ সালের ১লা জুন (১৯ জ্যৈষ্ঠ ১২৯৭ বঙ্গাব্দ) বারদী আশ্রমে লোকনাথ ব্রহ্মচারী দেহত্যাগ করেন। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ১৬০ বছর। এই দিনটি প্রতিবছর ভক্তরা 'তিরোধান দিবস' হিসেবে পালন করে থাকেন। লোকনাথ ব্রহ্মচারীর সবচেয়ে পরিচিত বাণী হল, 'রণে, বনে, জলে, জঙ্গলে যখনই বিপদে পড়বে, আমাকে স্মরণ কর, আমিই রক্ষা করব।'

এই বাণী আজও ভক্তদের মনে আশার আলো জ্বালায়। তিনি সরল জীবনযাপন করতেন, সাধারণ ভাত-ডাল ও খিচুড়ি খেতেন এবং আড়ম্বরপূর্ণ পূজা পছন্দ করতেন না। লোকনাথ ব্রহ্মচারীর জীবন শুধু আধ্যাত্মিক সাধনার উদাহরণ নয়, বরং মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আজও তাঁর ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে, বাবা লোকনাথ তাঁদের রক্ষাকর্তা।

Joy Baba Loknath