Okra Water with Honey: সকালে (morning) ঢেঁড়স ও মধু জলে মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা বিরাট। এতে শরীর ভিতর থেকে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। ঢেঁড়সকে আমরা সাধারণত তরকারি হিসেবেই চিনি। কিন্তু ভেষজ চিকিৎসার জগতে এর অসাধারণ এক ভূমিকা আছে। যদি এটি সকালে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে পান করেন, তাহলে কয়েকগুণ বেশি উপকার পাবেন। অনেকেই নিয়ম করে খালিপেটে ঢেঁড়শ-জল পান করেন। তাঁরা আর অন্য কোনও কিছু ট্রাই করেন না।
কেন এই পানীয় এত উপকারী?
গোটা বিশ্বে এই স্বাস্থ্যকর পানীয় ইতিমধ্য়েই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষ করে যাঁরা ওজন কমাতে চান। হজমশক্তি বাড়াতে চান আর ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষা করতে চান, তাঁদের কাছে এই জলের গুরুত্ব বিরাট। পুষ্টিবিদ ঈশা লাল তো সোজাসুজি বলেছেন, 'ঢেঁড়স জল আর মধু একটি আয়ুর্বেদিক উপাদান। আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত পথ্য। এটা শরীরকে ভিতর থেকে পরিষ্কার করে।'
আরও পড়ুন- আবহাওয়া বদলাচ্ছে, রোদ-বৃষ্টির খেলায় বাড়ছে রোগ! এই সময়ে কী করবেন?
ঢেঁড়স ও মধু জলের ৬টি আশ্চর্য উপকারিতা
১. হজম শক্তি ও অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
ঢেঁড়সে থাকা মিউসিলেজ ও দ্রবণীয় ফাইবার অন্ত্রের আস্তরণ পিচ্ছিল করে ও সহজে মলত্যাগে সাহায্য করে। যাঁরা কোষ্ঠকাঠিন্য বা অম্বলে ভুগছেন, তাদের জন্য তো এটা বিরাট উপকারী।
২. রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
ঢেঁড়সে থাকা ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়াতে সাহায্য করে। মাইরিসেটিন ও ফ্ল্যাভোনয়েডের মতো যৌগগুলি রক্তে গ্লুকোজ হঠাৎ বেড়ে যাওয়াকে রুখে দেয়।
৩. ত্বক উজ্জ্বল করে ও বার্ধক্য প্রতিরোধ করে
ঢেঁড়সের মধ্যে আছে প্রচুর ভিটামিন C ও পলিফেনল, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে ত্বককে সতেজ রাখে। মধু ত্বককে ভিতর থেকে আর্দ্র রাখে, ফলে একটা প্রাকৃতিক গ্লো আসে।
আরও পড়ুন- রাস্তায় আখের রস দেখে লোভ হয়, ক্ষতি হবে জেনেও খান? নিজেকে বাঁচিয়ে কীভাবে খাবেন, জেনে নিন
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
ঢেঁড়স ফাইবার সমৃদ্ধ, যা দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমে। মধু সকালে খেলে বিপাক হার বাড়ে।
৫. হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করে
ঢেঁড়সের মিউসিলেজ খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL) সঙ্গে বাঁধা পড়ে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, যা হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
৬. প্রদাহ কমায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ঢেঁড়স ও মধু দুটোতেই আছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল গুণ। ঢেঁড়সের কোয়ারসেটিন ও মধুর প্রাকৃতিক গুণ রোগ প্রতিরোধ করে, বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তনের সময় তো বটেই।
আরও পড়ুন- বাজারে যেটা আমপানা বলে বিক্রি হচ্ছে, সেটা কি আদৌ নিরাপদ? জানুন আসল সত্যিটা
সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
-
অতিরিক্ত মিউসিলেজ হজমে সমস্যা আনতে পারে
-
যাদের ঢেঁড়স বা মধুতে অ্যালার্জি আছে, তাঁদের জন্য কিন্তু, আবার এটা বিপজ্জনক
-
ডায়াবেটিসের ওষুধের সঙ্গে একসঙ্গে খেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে
-
যাদের সর্দি বা কফজনিত সমস্যা বেশি, তাঁদের জন্য প্রতিদিন ঢেঁড়স-মধু খাওয়াটাও ঠিক না
আরও পড়ুন- তাড়াহুড়োর মধ্যে গবগবিয়ে খেলে পেটের ভিতর কী হয় জানেন? শুনলে একেবারে অবাক হয়ে যাবেন
পুষ্টিবিদ ঈশা লাল পরামর্শে বলেছেন, 'প্রতিদিন না খেয়ে ২-৩ সপ্তাহ খেয়ে কিছুদিন বিরতি দিয়ে শরীরের প্রতিক্রিয়া দেখে নিন। কারণ, ঢেঁড়স ঠান্ডা প্রকৃতির হওয়ায় এটি সবার জন্য মানানসই না-ও হতে পারে।'