Bhai Phonta: তিলক নয়, কেন ভাইকে ফোঁটাই দেওয়া হয়, বোন না থাকলে নেবেন কার থেকে?

Bhai Phonta: কেন বাঙালি বোনেরা ভাইফোঁটা দিতে গিয়ে বলেন, 'ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা। যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা'?

Bhai Phonta: কেন বাঙালি বোনেরা ভাইফোঁটা দিতে গিয়ে বলেন, 'ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা। যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা'?

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Bhai Phonta: জেনে নিন ভাইফোঁটার শাস্ত্রীয় রীতি।

Bhai Phonta: জেনে নিন ভাইফোঁটার শাস্ত্রীয় রীতি।

Bhai Phonta 2025: হিন্দু সমাজে ভাইবোনের পবিত্র সম্পর্কের প্রতীকী উৎসব হল ভাইফোঁটা, যার সংস্কৃত নাম 'ভ্রাতৃদ্বিতীয়া' বা 'যমদ্বিতীয়া'। এই দিনটি পালিত হয় কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে, অর্থাৎ কালীপুজোর দুই দিন পরে। বোন ভাইয়ের কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করেন, আর ভাই বোনের সুরক্ষা ও মর্যাদা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন।

Advertisment

কেন চন্দনের ফোঁটা দেওয়া হয়?

মনে করা হয়, চন্দনের ফোঁটা হল সূর্যের প্রতীক। জীবনের আলো এবং উষ্ণতা দানকারী সূর্য। ফোঁটাও তাই। ধান, দূর্বা, চালের অন্নও সূর্যনির্ভর জীবনের প্রতীক। যম যেমন মৃত্যুর অন্ধকারের প্রতীক। সূর্য তেমন জীবনের প্রতীক। এইভাবে ভাইফোঁটা আসলে মৃত্যুর অন্ধকার থেকে জীবনের আলোয় নিয়ে আসার এক প্রার্থনা। এজন্যই ভাইফোঁটার সময় অনেক জায়গায় বোন ভাইকে নিমপাতা খাইয়ে বিপদ থেকে রক্ষার কামনা করেন। আর, চন্দনের ফোঁটা দেন।

আরও পড়ুন- কেন বাঁ হাতের কড়ে আঙুলেই দেওয়া হয় ফোঁটা, কোথা থেকে এল এই উৎসব?

Advertisment

কী বলা আছে শাস্ত্রে?

এব্যাপারে ভবিষ্যপুরাণে বলা আছে— 'কার্তিকে শুক্লপক্ষস্য দ্বিতীয়ায়াং যুধিষ্ঠির। যমো যমুনয়া পূর্বং ভোজিতঃ স্বগৃহে তদা।' 
(ভবিষ্যপুরাণ: উত্তরপর্ব, যমদ্বিতীয়াব্রত, ১১.১৮)। যমরাজ যমুনার বাড়িতে গিয়ে তাঁর হাতে ভোজন গ্রহণ করেন। যমুনা স্নেহভরে ভাইকে ফোঁটা দেন ও মঙ্গলকামনা করেন। তাতে যম আশীর্বাদ দিয়েছিলেন— যে বোন এই দিনে ভাইকে ফোঁটা দেবে, তাঁর ভাই দীর্ঘজীবী হবে। সেই থেকেই এই তিথি পরিচিত হয় যমদ্বিতীয়া নামে। আর, এই তিথিতেই ফোঁটা চালু হয়।

আরও পড়ুন- ফোঁটায় পাতে রাখুন এই কাটলেট, মন ভরবে ভাইয়ের!

ভবিষ্যপুরাণে আরও বলা হয়েছে— 'অস্যাং নিজগৃহে পার্থন ভোক্তব্যমতো বুধৈঃ। স্নেহেন ভগিনীহস্তাদ্ ভোক্তব্যং পুষ্টিবৰ্দ্ধনম্ 
(১১.২১)।' এই তিথিতে ভাই নিজের গৃহে ভোজন না করে, ভগিনীর হাতে ভালোবাসা ও স্নেহভরে তৈরি খাবার গ্রহণ করবেন। 
তেমনি, ভাইও বোনকে অলংকার, বস্ত্র ও ভোজনাদি দিয়ে আশীর্বাদ করবেন। এভাবেই ভাইবোনের সম্পর্ক দৃঢ় হয় স্নেহ, দান এবং প্রতিদানের মাধ্যমে।

আরও পড়ুন- পঞ্জিকায় ভাইফোঁটা দেওয়ার শুভ সময় কখন? জানুন বিস্তারিত

বোন না থাকলে কার থেকে নেওয়া যায় ফোঁটা?

শাস্ত্র অনুযায়ী, যদি নিজের ভগিনী না থাকে, তাহলে— কাকা বা জেঠার কন্যার কাছ থেকে দ্বিতীয়া তিথিতে, মামার কন্যার কাছ থেকেও দ্বিতীয়াতেই, পিসি বা মাসির কন্যার কাছ থেকে তৃতীয়া তিথিতে ভাইফোঁটা নেওয়া যায়। এই সব ভগিনীর হাতে ফোঁটা নেওয়া ভোজন আয়ু, যশ ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধিকারী বলে ভবিষ্যপুরাণে উল্লেখ আছে।

আরও পড়ুন- ভাইফোঁটায় ভাইয়ের পাতে কী দেবেন? দেখুন কলকাতার এই বিশেষ খাবার

পুরাণের এই সব কথাকেই বাংলার লোককবিরা ভাইফোঁটার দিন করে দিয়েছেন— 'ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা। যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা।' যে ছড়ার মধ্যে বাঙালির আবেগ, পারিবারিক ঐক্য এবং ভালোবাসার প্রকাশ ফুটে উঠেছে। আর, তা ছড়িয়ে পড়েছে বাঙালি বোনেদের মুখে, ফোঁটার এই দিনে। 

Bhai Phonta 2025