Blood Sugar Control: রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে শুধু ডায়েটই নয়, বরং শারীরিক সক্রিয়তা—বিশেষ করে ব্যায়ামের ধরনও গুরুত্বপূর্ণ। হাঁটা এবং যোগব্যায়াম – উভয়ই টাইপ ২ ডায়াবেটিস বা প্রি-ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত কাজের। তবে প্রশ্ন হল, এই দুটি অভ্যাসের মধ্যে কোনটি রক্তে শর্করার ওপর বেশি প্রভাব ফেলে?
হাঁটার উপকারিতা: সরাসরি গ্লুকোজ খরচ
হাঁটা একটি সহজ, অ্যারোবিক ব্যায়াম যা শরীরের পেশীগুলিকে সক্রিয় করে এবং খাবারের পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, খাবারের ৩০-৪৫ মিনিট পরে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা রক্তে শর্করার সর্বোচ্চ মাত্রা কমাতে কার্যকর।
আরও পড়ুন- প্রতিদিন গরম জল পান করলে শরীর থেকে দূর হয়ে যায় অর্ধেক বিষাক্ত পদার্থ, জানালেন সেলিব্রিটি শেফ!
হাঁটা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সহায়তা করে, এমনকী ব্যায়ামের ২৪ ঘণ্টা পরেও তার প্রভাব শরীরে থেকে যায়। প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও সহায়ক।
আরও পড়ুন- এই ১০টি জিনিস ছাড়ুন, ৩ মাসে ২০ কেজি ওজন কমবে সহজেই!
যোগব্যায়ামের উপকারিতা: মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাস
যোগব্যায়াম শুধুমাত্র শারীরিক কসরত নয়, বরং এটি মানসিক প্রশান্তি, শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণ ও হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে। যোগব্যায়াম ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে এবং অগ্ন্যাশয়ের কার্যক্ষমতা উন্নত করতে পারে, যার ফলে দেহ গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে আরও দক্ষ হয়।
আরও পড়ুন- গ্লিসারিন দিয়ে বানানো এই শ্যাম্পু এবং স্প্রে, চুল পড়া, খুশকি আর রুক্ষতা দূর করতে জাদুর মতো কাজ করে
বিশেষজ্ঞ কণিকা মালহোত্রা বলেন, 'যোগব্যায়ামের মাধ্যমে স্ট্রেস হরমোন যেমন কর্টিসল হ্রাস পায়, যা রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে। নিয়মিত যোগব্যায়াম HbA1c কমাতেও কার্যকর।'
আরও পড়ুন- পেটের চর্বি ক্রনিক রোগের গোপন কারণ, মহিলাদের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক! সাবধানবাণী চিকিৎসকদের
বিজ্ঞান কী বলছে?
গবেষণায় দেখা গেছে, শুধুমাত্র হাঁটা নয়, যোগব্যায়ামও HbA1c, ফাস্টিং ইনসুলিন ও ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্সের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে খাবারের পর যোগব্যায়াম করলে তা রক্তে শর্করার দ্রুত বৃদ্ধি ঠেকাতে সাহায্য করে।
কোনটি বেশি কার্যকর?
হাঁটা রক্তে গ্লুকোজ দ্রুত কমাতে সাহায্য করে – বিশেষত খাবারের পর। অন্যদিকে, যোগব্যায়াম দীর্ঘমেয়াদি নিয়ন্ত্রণে, স্ট্রেস হ্রাসে এবং হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক।
যদি প্রশ্ন ওঠে—যোগব্যায়াম নাকি হাঁটা, তাহলে উত্তর হবে—উভয়েরই যৌথ অভ্যাস সবচেয়ে ভালো ফল দেয়।
সাপ্তাহিক রুটিন: কীভাবে ভারসাম্য রাখবেন?
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পরামর্শ:
-
সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ৩০ মিনিট হাঁটা।
-
সপ্তাহে ৩-৪ দিন ২০-২৫ মিনিট হালকা যোগাসন (যেমন তাড়াসন, ভুজঙ্গাসন, শবাসন)।
-
খাবারের পর হালকা হাঁটা এবং সকালে যোগব্যায়াম রাখলে প্রভাব আরও ভালো পড়ে।
আপনার রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে শুধু একটি নয়, বরং হাঁটা এবং যোগব্যায়াম—এই দুটি অভ্যাসকেই সাপ্তাহিক রুটিনে জায়গা দিন। হাঁটা শরীরের গ্লুকোজ গ্রহণ বাড়ায়, আর যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমিয়ে দীর্ঘমেয়াদে সুস্থতার ভিত গড়ে তোলে। মনে রাখবেন, নিয়মিত ব্যায়াম মানে শুধু রক্তে শর্করা কমানো নয়, বরং জীবনধারাকে আরও স্থিতিশীল ও সুস্থ রাখা। তাই আজ থেকেই শুরু করুন—একটি স্বাস্থ্যকর রুটিন।