/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/25/chhath-puja-prasad-2025-10-25-18-40-06.jpg)
Chhath Puja Prasad: ছট পুজোতে কী ভোগ দেওয়া হয় দেবতাকে?
Chhath Puja Prasad: ছট পুজো উত্তর ভারতের অন্যতম প্রাচীন এবং আধ্যাত্মিক উৎসব। এটি সূর্যদেব ও ছটি মাইয়ের উদ্দেশ্যে পালন করা হয়। এই উৎসবে ভক্তরা সূর্যকে ধন্যবাদ জানান আলো, শক্তি ও জীবনের জন্য। ছট পুজোর বিশেষ আকর্ষণ হল, এর ভোগ বা প্রসাদ। যা সম্পূর্ণ নিরামিষ এবং বিশুদ্ধ। আর, তা হাতে তৈরি হয়।
ভোগ বা প্রসাদের তাৎপর্য
ছট পুজোর ভোগ কেবল খাবার নয়, এটি শুদ্ধতার প্রতীক। ভোগ তৈরি করা হয় মাটি বা পিতলের পাত্রে। এই ভোগ তৈরিতে কোনও রকম রসুন-পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয় না। এটি শরীর ও মনকে পবিত্র রাখার প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। ভোগ তৈরির সময় গৃহিণীরা স্নান করে নতুন পোশাক পরেন এবং একেবারে শুদ্ধ পরিবেশে রান্না করেন। বিশ্বাস করা হয়, যদি ভোগ বিশুদ্ধ মনে ও হাতে তৈরি হয়, সূর্যদেব ও ছটি মাই তাতে বিশেষ কৃপা বর্ষণ করেন।
আরও পড়ুন- ছট পুজো কী, কেন আর কীভাবে পালিত হয় এই উৎসব?
ছট পুজোর প্রধান ভোগের তালিকা
১. থেকুয়া (Thekua): ঠেকুয়া ছট পুজোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোগ। এটি গমের আটা, গুড় ও ঘি দিয়ে তৈরি হয়। কেউ কেউ নারকেল কুচিও মেশান। ছোট গোল বা ফুলের আকৃতিতে বানিয়ে তেলে ভাজা হয়। এটি মিষ্টি, খাস্তা এবং দীর্ঘদিন রেখে দেওয়া যায়। ২. নারকেল ও কলা: এই প্রসাদের অপরিহার্য উপাদান হল নারকেল এবং কলা। কলা সূর্যশক্তির প্রতীক, আর নারকেল পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। প্রতিটি অর্ঘ্যে এই দুটি ফল থাকবেই। ৩. চিঁড়া ও গুড়: চিঁড়া (অভ্রি) ও গুড়কে শুভ ধরা হয়। এটি সহজে হজমযোগ্য এবং পূজার পর উপবাস ভঙ্গের সময় খাওয়া হয়। ৪. অন্যান্য ফলমূল: আপেল, পেয়ারা, আখ, লাউ, লেবু, খেজুর, চালতা— সব মরশুমি ফলই প্রসাদে ব্যবহৃত হয়। প্রতিটি ফলকে প্রকৃতির উপহার হিসেবে দেখা হয়। ৫. ক্ষীর বা পায়েস: কিছু অঞ্চলে ছট পুজোর দ্বিতীয় দিনে (খরনা) বা বিশেষ ক্ষীর তৈরি করা হয়। এটি দুধ, গুড় ও চাল দিয়ে রান্না করা হয় এবং সন্ধ্যায় সূর্যদেবকে নিবেদন করা হয়। ৬. রুটি ও চালের পিঠা: গমের আটা দিয়ে তৈরি রুটি বা ছোট পিঠা (যা ঠেকুয়ার সঙ্গে দেওয়া হয়) ছটের অর্ঘ্যে ব্যবহৃত হয়। এটি কঠিন উপবাসের পরে শরীরের শক্তি ফেরাতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন- সাবধান! কথার জালে ভোলানো, এই রাশির জাতক-জাতিকাদের কাছে বাঁ হাতের খেল
অর্ঘ্যের প্রস্তুতি ও প্রদর্শন
ভোগ সাধারণত বাঁশের তৈরি সুপ বা ডালা-তে সাজানো হয়। এতে ফল, ফুল, প্রদীপ, নারকেল ও ঠেকুয়া থাকে। এই ডালাগুলি নদীর ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় জলে দাঁড়িয়ে সূর্যদেবকে অর্ঘ্য দেওয়া হয়। অর্ঘ্য দেওয়ার সময় ভক্তরা বলেন, 'সূর্য দেবতা, আপনি আমাদের জীবন দিন, আলো দান করুন।'
আরও পড়ুন- বেলুড় মঠের রহস্য! কেন আজও ভয়ে, ভক্তিতে এই কৌটোর পুজো করেন সন্ন্যাসীরা?
প্রসাদের পবিত্রতা
ছট পুজোর ভোগ কোনওভাবেই বাজারের তৈরি নয়। সবকিছু বাড়িতে হাতে তৈরি হয়। রান্না হয় কাঠের চুলায় বা গ্যাস ছাড়া আগুনে। রান্নার সময় কেউ কথা বলেন না। উদ্দেশ্য একটাই, যাতে পবিত্রতা নষ্ট না হয়। ভোগ তৈরি করার সময় বাড়িতে সুরেলা ছট গীত গাওয়া হয়— 'কাঁহে দেলু দূর ভবন, উষা মে লেলু আরঘ।'
আরও পড়ুন- দেবী হতাশ করেন না, বিশ্বাস গোকর্ণের শ্যামারায় কালীর ভক্তদের!
ছট পূজার ভোগ (Chhath Puja Prasad) কেবল সূর্যদেবকে নিবেদন নয়, এটি প্রকৃতি, শুদ্ধতা ও বিশ্বাসের প্রতীক। প্রতিটি ঠেকুয়া বা ফল সূর্যকে ধন্যবাদ জানানোর একেকটি রূপ। এই উৎসব আমাদের শেখায়— জীবন যতই কঠিন হোক, কৃতজ্ঞতা ও সংযমই হল আসল পূজা।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us