New Virus in China: চিনের দক্ষিণ-পশ্চিমের ইউনান প্রদেশে বিজ্ঞানীরা ফলের বাগানে থাকা বাদুড়দের কিডনি পরীক্ষা করে জানিয়েছেন, ওই বাদুড়দের শরীরে ২০টি অজানা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে দুটি ভাইরাসের সঙ্গে নিপা ও হেন্দ্রা ভাইরাস পরিবারের মিল রয়েছে। যদিও এই ভাইরাসগুলো এখনও মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়েনি, কিন্তু তারপরও বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়েছেন।
গবেষণার বিস্তারিত: কী হয়েছে?
-
ইউনান ইনস্টিটিউট ও দালি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ২০১৭–২০২১ সালের মধ্যে ১৪২টি বাদুড়ের কিডনি পরীক্ষা করেছেন, যেগুলো ১০টি প্রজাতির ।
-
উন্নত জেনেটিক সিকোয়েন্সিং থেকে জানা গিয়েছে, এর মধ্যে ২২টি ভাইরাস পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ২০টি পুরো নতুন।
-
তবে বিশেষভাবে উদ্বেগের কারণ হল, এই মধ্যে দুটি ভাইরাস হল, 'হেনিপাভাইরাস'। যার সঙ্গে নিপা এবং হেন্দ্রা ভাইরাসের মিল রয়েছে।
আরও পড়ুন- মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এই ৩টি ব্রেন এক্সারসাইজ করুন, কাজ দেবে দুর্দান্ত! দাবি নিউরোলজিস্টের
মারাত্মক ভাইরাস নিপা এবং হেন্দ্রা
-
নিপা ভাইরাস: 'মস্তিষ্কে প্রদাহ ও শ্বাসযন্ত্রে সমস্যা' তৈরি করতে পারে, মৃত্যুহার ৪০–৭০% ।
-
হেন্দ্রা ভাইরাস: অস্ট্রেলিয়ায় বাদুড় থেকে ঘোড়ায়, তারপর মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে এই ভাইরাস। আক্রান্তদের মধ্যে ৭ জন মারা গিয়েছেন, মৃত্যুহার ৫০–৬০% ।
-
এই দুই ভাইরাসই 'হেনিপাভাইরাস' (henipavirus) শ্রেণির। যা ইতিমধ্যেই ভয়ংকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।
আরও পড়ুন- মাত্র ৯০ দিনের জন্য চিনি ছাড়ুন, আপনার শরীরে ঘটবে এগুলো! অবাক হয়ে যাবেন নিজেই
পাওয়া গিয়েছে কিডনিতে? তাতে বেড়েছে চিন্তা
অধিকাংশ বাদুড় ভাইরাসের গবেষণা হয় তাদের বিষ্ঠা পরীক্ষার মাধ্যমে। কিন্তু, এই গবেষণায় কিডনির টিসু নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ, কিডনি প্রস্রাব নির্গমনের মাধ্যম, এই প্রস্রাব ফল এবং জল দূষণ ঘটাতে পারে । এই ব্যাপারে মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভায়রোলজিস্ট বিনোদ বালাসুব্রামনিয়াম বলেন, 'এই ভাইরাসগুলি কিডনিতে পাওয়া গেছে। ফলে এটির প্রস্রাবের মাধ্যমে ফল বা জলের সাহায্যে মানুষের সংস্পর্শে আসার আশঙ্কা আছে।'
আরও পড়ুন- জিভে জল আনা রেসিপি! লুচির সঙ্গে দুর্দান্ত এই আলুর তরকারি! রেসিপি দেখে মাত্র ১০ মিনিটেই ফেলুন বানিয়ে
পরিস্থিতি কি ভয়াবহ?
-
হয়তো, কিন্তু এখনও নিশ্চিত নয়। জেনেটিক মিল আছে। কিন্তু মানব কোষে ইনফেকশন করার ক্ষমতা এখনও প্রমাণিত হওয়া বাকি ।
-
ইউনান অঞ্চলে বাদুড় ও মানুষের সরাসরি সংস্পর্শ কম, তাই এখনও এই ভাইরাস মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েনি ।
-
বেশ কিছু ভাইরোলজিস্ট উদ্বেগ প্রকাশ করলেও একথা বলছেন যে, 'জিনগত মিল থাকলেই সেটা প্রচণ্ড সংক্রমণ ঘটাবে, এমনটা মনে করার কোনও কারণ নেই।'
আরও পড়ুন- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই সোনালি জলই যথেষ্ট! ভাইরাল চিকিৎসকের টিপস
ভবিষ্যতে কী হবে?
-
আরও ল্যাবভিত্তিক গবেষণা প্রয়োজন, বিশেষ করে ভাইরাসের মানুষের কোষে ইনফেকশনের শক্তি পরীক্ষা করা দরকার।
-
জ্বরের মত ঘটনায় সতর্ক নজরদারি বাড়ানো জরুরি। বিশেষ করে ফল, জলের ওপর এবং গ্রামাঞ্চলে বেশি নজরদারি দরকার।
-
বাদুড়দের বাসস্থান রক্ষা, খাবার সরবরাহ বজায় রেখে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে সংক্রমণের আশঙ্কা কমানো দরকার।
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, চিনে পাওয়া ভাইরাসগুলো নিয়ে মানুষের আপাতত খুব বেশি ভয়ের কিছু নেই। তবে অদূর ভবিষ্যতে অন্যরকম কিছুও ঘটতে পারে। তাই সতর্কতা এবং বিস্তারিত গবেষণা দরকার। ফলের বাগানে থাকা বাদুড় থেকে তৈরি এইসব ভাইরাসের আবিষ্কার আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে প্রকৃতি এবং মানুষের মধ্যে সীমারেখা থাকা প্রয়োজন।