Durgaprasanna Paramhansa Dev: ভারতের অধ্যাত্ম সাধনার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক দুর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেব। বাংলাদেশের বরিশাল জেলার রাজাপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম ছিল উমাচরণ চক্রবর্তী, মায়ের নাম চিন্তামণি দেবী। দুর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেব ছিলেন তাঁর মা-বাবার দ্বিতীয় সন্তান।
আরও পড়ুন- চ্যাটজিপিটিতে বুদ্ধিনাশ? অভিভাবকদের সতর্কবার্তা MIT-র গবেষকদের
কথিত আছে, কাশীতে গিয়ে বিশ্বনাথের তপস্যার (pujo) পর দুর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেবের জন্ম হয়েছিল। তাঁর জন্মের দিনটি ছিল রাসপূর্ণিমা। কথিত আছে তিনি কুমিল্লার মেহের কালীমন্দিরে পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে সাধনা করেন। তাঁর বাবাও ছিলেন কালীসাধক। কথিত আছে, কুমিল্লার ওই মেহের কালীমন্দিরেই দেবী কালীর দর্শন পেয়েছিলেন দুর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেব।
আরও পড়ুন- বয়স ৬০ পেরিয়েছে, ঘুম আসছে না? আয়ুর্বেদিক টিপসেই ঘুমোন প্রাণভরে
ছোট থেকেই তিনি স্কুলের সহপাঠীদের মধ্যে শিক্ষাসামগ্রী বিক্রি করতেন। আর, সেই সামগ্রী বিক্রির টাকা তুলে দিতেন বাবার হাতে। তবে, দরিদ্র সহপাঠীদের সেই সব সামগ্রী দিতেন বিনামূল্যে। ছোট থেকেই গরিব ও দুঃখীদের প্রতি তাঁর ছিল বিশেষ নজর। বাবার কাছ থেকেই তিনি আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরি এবং মন্ত্রের সাহায্যে রোগ সারানোর কায়দা শিখেছিলেন। সদগুরু হিসেবে পেয়েছিলেন নিগমানন্দ পরমহংসকে। তিনি বহুরকম সাধনা করেছিলেন। সব সাধনাতেই সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। দেশভাগের সময় ১৯৪৭ সালে তিনি কলকাতায় চলে আসেন।
আরও পড়ুন- কেন ৩ দিন বন্ধ থাকে কামাখ্যা মন্দির? অম্বুবাচী সম্পর্কে জানুন না জানা সবকিছু
জীবের কল্যাণের জন্য ১৩৫২ বঙ্গাব্দের ১৩ ভাদ্র তিনি শ্রীগুরু সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা করেন। পঞ্চশূনা পাপ ও অন্নকষ্ট দূর করার জন্য তিনি ১৩৫৪ বঙ্গাব্দে মঙ্গলঘটের প্রবর্তন করেন। ১৩৫৭ বঙ্গাব্দে পলাশিতে তৈরি করেন 'শ্রী গুরু সঙ্ঘ ব্রহ্মচর্যাশ্রম'। পরে যার নামকরণ করা হয় শ্রীশ্রী গিরিধারী আশ্রম। ১৩৬০ বঙ্গাব্দে কাশীধামে কালিকানন্দ পরমহংসদেব ও অন্যান্য সাধকরা মিলে দুর্গাপ্রসন্নকে পরমহংস উপাধি দন করেন।
আরও পড়ুন- সাধক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ, শ্মশানের দেবী কালীকে যিনি বাঙালির ঘরের মেয়ে বানিয়েছেন
১৩৬৭ বঙ্গাব্দে নাকতলায় তৈরি হয় দুর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেবের কেন্দ্রীয় আশ্রম। এছাড়াও ভুবনেশ্বর, কাশী, বৃন্দাবন, হরিদ্বার, পুরীতে রয়েছে শাখা আশ্রম। নদিয়ার পলাশিতে রয়েছে আচার্য দুর্গাপ্রসন্ন জুনিয়র হাইস্কুল-সহ আরও অন্যান্য বিদ্যালয়। ১৩৮২ বঙ্গাব্দের ৩০ শ্রাবণ, শুক্লা দশমী তিথিতে দুপুর ১২টা ৩৫ নাগাদ আচার্য দুর্গাপ্রসন্ন পরমহংস দেহত্যাগ করেন।