/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/19/ghagar-buri-1-2025-10-19-20-33-22.jpg)
Ghagharburi: জাগ্রত দেবী ঘাঘরবুড়ি!
Ghagharburi Temple and Kali Puja 2025: আসানসোল শহরের উত্তরে নুনিয়া নদীর তীরে ঘাঘরবুড়ির চণ্ডীমন্দির রাঢ় বাংলার অন্যতম প্রাচীন ও জাগ্রত শক্তিক্ষেত্র। স্থানীয় বিশ্বাস, প্রায় ৫০০ বছর আগে দেবী চণ্ডী নিজেই এই স্থানে প্রকাশিত হন এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ কাঙালিচরণ চক্রবর্তীর স্বপ্নে।
কথিত আছে, এক শীতের দিনে যজমানের বাড়ি থেকে ফেরার সময় ক্ষুধা ও ক্লান্তিতে কাঙালীচরণ নুনিয়া নদীর ধারে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। ঘুমের মধ্যেই দেখা দেন এক ঘাঘরা পরিহিত দেবী চণ্ডী। তিনি বলেন, 'তোর কোলে তিনটি শিলা রেখেছি। মাঝখানে আমি, বাঁ পাশে মা অন্নপূর্ণা, ডাইনে পঞ্চানন মহাদেব।' সেই নির্দেশ অনুযায়ী কাঙালীচরণ ১৬২০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন এই মন্দির। যা পরবর্তীতে ঘাঘরবুড়ি চণ্ডীমন্দির নামে পরিচিতি পায়।
আরও পড়ুন- কালীপুজোর আনন্দে ভাসছেন আপনিও, কিন্তু জানেন কি দেবী কালীর কত রূপ?
কেন 'ঘাঘরবুড়ি' নাম?
আরও পড়ুন- দেবী যেন জ্যান্ত! প্রতিমার পায়ে কাঁটা ফুটিয়ে রক্ত বের করে এনেছিলেন এই সাধক
'ঘাঘর' শব্দের অর্থ ঝাঁজ বা বাদ্যযন্ত্র। আবার এর মানে নদীও। কারও মতে, দেবীর পুজো নাচ, গান আর বাদ্যসহকারে হত বলে এই নাম। আবার অনেকে মনে করেন, নুনিয়া নদীর দক্ষিণ তীরে অধিষ্ঠিত বলে দেবীর নাম 'ঘাঘরবুড়ি'। ১৬২০ সালের ১লা মাঘে মন্দির প্রতিষ্ঠার স্মরণে আজও প্রতিবছর এই দিনে ঘাঘরবুড়ির মেলা বসে। আসানসোল, বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা আসেন এই মেলায়।
আরও পড়ুন- কালী যেখানে ধন্বন্তরী! 'রোগহারিণী কালী'র কাহিনি জানেন?
আসানসোল কয়লা, ইস্পাত ও শিল্পনগরী হিসেবে পরিচিত হলেও, ঘাঘরবুড়ি চণ্ডীমন্দির এই শহরকে দিয়েছে ধর্মীয় এবং আধ্যাত্মিক পরিচিতি। এখানে দেবী চণ্ডীর সঙ্গে অন্নপূর্ণা ও মহাদেবের প্রতীকী উপস্থিতি রাঢ় বাংলার দেবশক্তির এক অনন্য নিদর্শন। বর্তমানে একটি সুন্দর স্থায়ী মন্দির রয়েছে। তবে আজও দেবীর প্রতীক তিনটি শিলা।
আরও পড়ুন- অ্যান্টনিই কি কলকাতার ফিরিঙ্গি কালীবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা?
ভক্তরা ফুল, রুপোর গয়না ও প্রদীপ দিয়ে সেগুলো সাজিয়ে পুজো করেন। ঘাঘরবুড়ি চণ্ডীমন্দির শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়। এটি রাঢ় বাংলার সংস্কৃতি, লোককাহিনি এবং বিশ্বাসের এক জীবন্ত প্রতীক। ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে এই মন্দিরে এসে প্রার্থনা করলে বিপদ কাটে। মনস্কামনা পূরণ হয়। কাঙালিচরণ চক্রবর্তীর দেখা স্বপ্ন এভাবে আজও প্রতিদিন ভক্তদের মনে জাগিয়ে রাখছে অদ্ভুত এক অলৌকিক বিশ্বাস।