Guptipara Temple Complex: বাংলার গুপ্ত বৃন্দাবন, টেরাকোটা আর ভক্তির মিলন! এর ইতিহাসটা কী?

Guptipara Temple Complex: হুগলির গুপ্তিপাড়ায় বৃন্দাবনচন্দ্র মঠ কমপ্লেক্স বা গুপ্ত বৃন্দাবন বাংলার অন্যতম প্রাচীন বৈষ্ণব স্থাপত্য। ইতিহাস, শিল্প ও ভক্তির অনন্য মিশ্রণ এই স্থান।

Guptipara Temple Complex: হুগলির গুপ্তিপাড়ায় বৃন্দাবনচন্দ্র মঠ কমপ্লেক্স বা গুপ্ত বৃন্দাবন বাংলার অন্যতম প্রাচীন বৈষ্ণব স্থাপত্য। ইতিহাস, শিল্প ও ভক্তির অনন্য মিশ্রণ এই স্থান।

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Guptipara Temple Complex: গুপ্তিপাড়া মন্দির চত্বর।

Guptipara Temple Complex: গুপ্তিপাড়া মন্দির চত্বর।

Guptipara Temple Complex: পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়া শুধু ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, ঐতিহাসিক এবং শৈল্পিক ঐতিহ্যের দিক থেকেও এক অনন্য স্থান। স্থানীয়ভাবে একে বলা হয় ‘গুপ্ত বৃন্দাবন’। কারণ এখানে কৃষ্ণভক্তি, বৃন্দাবনের আবহ আর বাংলার স্থাপত্যের সৌন্দর্য একসঙ্গে মিশে আছে।

Advertisment

ঐতিহাসিক পটভূমি

গুপ্তিপাড়ার বৃন্দাবনচন্দ্র মঠ চত্বরের ইতিহাস ১৭শ শতকে শুরু হয়েছিল। স্থানীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায় এই স্থানে চৈতন্য ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে মন্দির নির্মাণ করেছিল। পরে এই মঠ চত্বরই হয়ে ওঠে গুপ্তিপাড়ার ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।

আরও পড়ুন- মাত্র ১টা পরিক্রমা, তাতেই বদলে যেতে পারে ললাটলিখন, কীভাবে?

Guptipara Temple Complex 2

চারটি বৈষ্ণব মন্দিরের সমাহার

এই মঠ চত্বরের মধ্যে চারটি প্রধান মন্দির রয়েছে— ১) শ্রী চৈতন্যদেবের মন্দির (জোড়বাংলা), ২) শ্রীবৃন্দাবনচন্দ্র মন্দির (আটচালা), ৩) শ্রী রামচন্দ্র মন্দির (এক রত্ন), ৪) শ্রীকৃষ্ণচন্দ্র মন্দির (আটচালা)। মন্দিরগুলো এক উঁচু প্রাচীরের মধ্যে চতুষ্কোণ আকারে নির্মিত। প্রতিটি মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী আলাদা, যা বাংলার ঐতিহ্যবাহী নবদ্বীপ শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপত্যের দৃষ্টান্ত।

Advertisment

আরও পড়ুন- কীভাবে, কখন দেখবেন কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজো, জানুন অঞ্জলির সময়সূচি!

Guptipara Temple Complex 3

টেরাকোটার শিল্প

রামচন্দ্র মন্দির-সহ বেশ কয়েকটি মন্দিরের দেওয়ালে ১৭শ–১৮শ শতকের টেরাকোটা ফলকে রামায়ণ-মহাভারতের কাহিনি, কৃষ্ণলীলা এবং গ্রামীণ জীবনের চিত্র ফুটে উঠেছে। সূক্ষ্ম কারুকার্যের এই নিদর্শন বাংলার টেরাকোটা শিল্পের সোনালি যুগের প্রমাণ বহন করে।

আরও পড়ুন- ‘খুকু ও খোকা’-র কবি! প্রয়াণদিবসে স্মরণে অন্নদাশঙ্কর, জানেন কবির জীবনের এই দিকগুলোর কথা?

Guptipara Temple Complex 4

বিগ্রহ ও উপাসনা

বৃন্দাবনচন্দ্র মন্দিরে একসঙ্গে পূজিত হন শ্রী রাধিকা, শ্রী বৃন্দাবনচন্দ্র এবং জগন্নাথ–বলরাম–সুভদ্রা। পূজা-পার্বণ ও ভজনসংগীতের সময় পুরো এলাকা ভক্তিতে মুখর হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন- বাংলার এই অনন্য তান্ত্রিক কালীমূর্তি, যাঁর হাতের সংখ্যা কত, গোনা যায় না!

Guptipara Temple Complex 5

গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রা

বাংলার অন্যতম প্রাচীন গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রা এখানেই অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবকে ঘিরে চলে মেলা, কীর্তন, এবং হাজারো ভক্তের সমাগম। স্থানীয় বিশ্বাস, রথযাত্রায় অংশ নিলে পাপমোচন ও সৌভাগ্য লাভ হয়।

Guptipara Temple Complex 6

পুরাতাত্ত্বিক গুরুত্ব

এই মঠ চত্বরটি ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের (ASI) অধীনে সংরক্ষিত। সরকারিভাবে এটি সংরক্ষিত এলাকা (protected heritage site) হিসেবে স্বীকৃত। যা এই স্থানের সাংস্কৃতিক গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

Guptipara Temple Complex 7

কেন যাবেন গুপ্তিপাড়ায়?

যদি আপনি ইতিহাস, স্থাপত্য, বা বৈষ্ণব ভাবধারার অনুসারী হন, তবে গুপ্তিপাড়া আপনার জন্য এক আদর্শ গন্তব্য। এখানে পাবেন প্রাচীন মন্দির স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন, ধর্মীয় ভাবের প্রশান্তি, আর বাংলার ঐতিহ্যের এক জীবন্ত অধ্যায়।

কীভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে ট্রেনে হাওড়া–বর্ধমান মেন লাইনে পড়বে গুপ্তিপাড়া স্টেশন। সেখান থেকে রিকশা বা টোটোয় সহজেই পৌঁছে যান মঠ চত্বরে। ভ্রমণের সেরা সময়- শীতকাল (নভেম্বর–ফেব্রুয়ারি) বা রথযাত্রা উৎসবের সময়।

Guptipara Temple