Heat Resistant Species: আমরা গরম পড়লেই এসির কাছে ছুটে যাই বা ঠান্ডা পানীয় খাই। কিন্তু প্রকৃতির এমন কিছু প্রাণী আছে যারা ফ্রাইং প্যানের থেকেও গরম জায়গায় দিব্যি টিকে থাকে! চলুন, এমন ৫টি তাপপ্রতিরোধী প্রাণী সম্পর্কে জেনে নিই, কারা তারা, যারা ফুটন্ত গরমেও বেঁচে থাকে অনায়াসে?
১. পম্পেই কৃমি (Pompeii Worm)
সমুদ্রের গভীরের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের (hydrothermal vents) ধারে বসবাস করে এই অদ্ভুত প্রাণীটি। এখানকার তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ১০৫°C পর্যন্ত – যা জল ফুটে যাওয়ার চেয়েও বেশি! এই কৃমির পিঠে থাকে তাপপ্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া, যারা তাদের শরীরকে উত্তাপ থেকে রক্ষা করে। একে বলে প্রকৃতির আশ্চর্য সিমবায়োটিক সম্পর্ক।
আরও পড়ুন- কাঁচা হলুদ বা হলুদ গুঁড়ো খাওয়া কি ভালো? এসব খেয়ে কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি ৫৭ বছরের এক মহিলা
২. টার্ডিগ্রেড (Tardigrade / Water Bear)
এই ছোট্ট অণুজীব হল পৃথিবীর সবচেয়ে কষ্টসহিষ্ণু জীবদের একজন। এরা সহ্য করতে পারে – হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রা, ১৫০°C পর্যন্ত উষ্ণতা, বিকিরণ, এমনকী মহাকাশের ভ্যাকুয়ামেও এরা জীবন্ত থাকে! টার্ডিগ্রেড এতটাই চটপটে যে বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যতে চাঁদে বা অন্য গ্রহে প্রাণী পাঠালে এরাই প্রথম যেতে পারে।
আরও পড়ুন- অতিরিক্ত বিশ্রামে হতে পারে মাইগ্রেন, সময়সীমা মানা জরুরি, বলছেন বিশেষজ্ঞ
৩. সাহারান রূপালি পিঁপড়া (Saharan Silver Ant)
এই পিঁপড়াগুলি কাজ করে দিনের সবচেয়ে গরম সময়ে, যখন সাহারার তাপমাত্রা প্রায় ৬০°C ছুঁয়ে যায়। তাদের শরীর ঢেকে রাখে তাপপ্রতিরোধী চুল। যা দিয়ে তারা সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে। এছাড়াও, তারা অসম্ভব দ্রুত দৌড়তে পারে। প্রতি সেকেন্ডে নিজের শরীরের দৈর্ঘ্যের প্রায় ৮৫ গুণ দূরত্বে তারা দৌড়তে পারে!
আরও পড়ুন- ওজন বাড়ায় এমন ৬ অভ্যাস, যা অজান্তেই বাড়াচ্ছে আপনার পেটের মেদ, শুনলে চমকে উঠবেন!
৪. থার্মোফিলিক জীবাণু (Thermophiles)
যদিও এরা প্রাণী নয়, এরা Thermophilic bacteria, যেমনটা Strain 121। এরাও অটোক্লেভের মতো ১২১°C তাপমাত্রায় দিব্যি বেঁচে থাকে। এই তাপমাত্রা কিন্তু হাসপাতালের স্টেরিলাইজেশন প্রসেসেও ব্যবহার হয়! এই জীবাণুগুলোর তাপপ্রতিরোধী প্রোটিন আছে, যা অন্য যে কোনও জীবের তুলনায় একেবারে অনন্য।
আরও পড়ুন- বেশি ব্যায়ামে কি রক্তে শর্করা বেড়ে যায়? কতটা বিপদে ডায়াবেটিস রোগীরা? জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ
৫. ফেনেক শিয়াল (Fennec Fox)
এই ছোট মরুভূমির শিয়ালটি তার বড় কান দিয়েই নিজের শরীরের তাপ বের করে দেয়। এছাড়াও, তারা দিনের সবচেয়ে গরম সময়ে বিশ্রাম নেয় এবং রাতের ঠান্ডায় সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাদের খাদ্যাভ্যাসও এমনভাবে গঠিত যে, জল ছাড়াও দীর্ঘদিন বাঁচতে পারে।
কেন এই প্রাণীরা এতটা তাপ সহ্য করতে পারে?
-
এদের মধ্যে রয়েছে বিশেষ প্রোটিন, যা উচ্চতাপেও বিকল হয় না
-
এদের শরীরের গঠনটা একটু অন্যরকম। যেমন ফেনেক শিয়ালের বড় কান বা রূপালি পিঁপড়ার চুল রীতিমতো আকর্ষণীয়
-
এই সব প্রাণীদের আচরণগত অভিযোজন দেখার মত, যেমন এরা ছায়ায় লুকিয়ে থাকা, আর কোন সময় সক্রিয় হবে, সেটা আলাদা করে বেছে নেয়।
-
এদের সিমবায়োটিক সম্পর্কও গবেষণার বিষয়
এই প্রাণীরা প্রমাণ করে দিয়েছে যে প্রকৃতি কেবল কঠিন পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে শেখায় না, বরং সেগুলিকে আপন করে নেওয়ার কায়দাও শিখিয়ে দেয়। তীব্র গরমে যখন আমরা ধুঁকি, তখন এই সব প্রাণীরা টিকে থাকে অনায়াসে। তাদের থেকে আমাদের তাই অনেক কিছু শেখার আছে। তাদের সহ্যশক্তি, অভিযোজন এবং সৃজনশীলতা দেখার মত, শেখার মত।