Migraine trigger due to oversleep: মাইগ্রেন শুধুমাত্র একটি সাধারণ মাথাব্যথা নয়। এটি একটি জটিল নিউরোলজিক্যাল অবস্থার নাম, যা কেবল মাথাব্যথা নয়, সঙ্গে বমি বমি ভাব, বমি, আলো ও শব্দের কারণে সমস্যা এবং মাথা ঘোরার মতো লক্ষণ সৃষ্টি করে। অনেকেই জানেন না যে, এই সমস্যার পিছনে নানা কিছু থাকতে পারে— যেমন মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, খাবারের অনিয়ম। কিন্তু আপনি কি জানেন, অতিরিক্ত বিশ্রাম বা হঠাৎ বিশ্রামও হতে পারে মাইগ্রেনের অন্যতম কারণ?
শিথিলতার মধ্যেও লুকিয়ে থাকতে পারে ঝুঁকি
ব্যাঙ্গালোরের অ্যাস্টার হোয়াইটফিল্ড হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের পরামর্শদাতা ডা. বাসভরাজ এস কুম্বার জানিয়েছেন, 'বিশ্রামের ফলে মাইগ্রেন বাড়ে না, কিন্তু অনিয়মিত বিশ্রাম বা হঠাৎ দীর্ঘ বিশ্রামের ফলে মাইগ্রেন বাড়তে পারে।'
আরও পড়ুন- ওজন বাড়ায় এমন ৬ অভ্যাস, যা অজান্তেই বাড়াচ্ছে আপনার পেটের মেদ, শুনলে চমকে উঠবেন!
অনেক সময় দেখা যায়, কেউ খুব ব্যস্ত ও চাপের মধ্যে কাজ করার পর হঠাৎ করেই অনেকক্ষণ ধরে বিশ্রাম নিয়ে নিচ্ছেন। এই আচমকা পরিবর্তন মস্তিষ্কে নিউরোকেমিক্যাল ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে, যার ফলে মাইগ্রেনের লক্ষণ দেখা দেয়।
কতটা বিশ্রাম নিরাপদ?
বিশ্রাম অবশ্যই দরকার, কিন্তু 'পরিমাণমত এবং নিয়মিত' বিশ্রামই শরীরের জন্য উপকারী। এই ইস্যুতে ডা. কুম্বার পরামর্শ দিয়েছেন, 'প্রতিদিনের ক্লান্তি দূর করতে ৪০ থেকে ৫০ মিনিটের বিশ্রামই যথেষ্ট। একঘন্টার বেশি বিশ্রাম মস্তিষ্কের অস্থিরতাকে বাড়িয়ে দিতে পারে এবং মাইগ্রেন বাড়াতে পারে।'
আরও পড়ুন- বেশি ব্যায়ামে কি রক্তে শর্করা বেড়ে যায়? কতটা বিপদে ডায়াবেটিস রোগীরা? জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ
এছাড়াও, যাঁরা সপ্তাহের পাঁচ-ছয় দিন প্রচণ্ড কাজের চাপ সামলান, তাঁরা ছুটির দিনে হঠাৎ করে অতিরিক্ত ঘুমিয়ে নেন — যেটা 'weekend migraine' হিসেবেও পরিচিত।
অন্যান্য মাইগ্রেনের সমস্যা
বিশ্রাম ছাড়াও মাইগ্রেনের কিছু প্রচলিত কারণের মধ্যে রয়েছে:
-
চাপ বা মানসিক টেনশন
-
অনিয়মিত খাবার খাওয়া বা দীর্ঘক্ষণ না খাওয়া
-
অতিরিক্ত ক্যাফেইন খাওয়া বা হঠাৎ ক্যাফেইন খাওয়া বন্ধ করা
-
অ্যালকোহল সেবন
-
তীব্র আলো বা জোরালো শব্দ
-
হরমোনাল পরিবর্তন (বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে)
আরও পড়ুন- কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন? এই ৫টি খাবার দূর করতে পারে সমস্যার শিকড়, বলছেন বিশেষজ্ঞরা
কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন?
-
নিয়মিত ঘুমের রুটিন মেনে চলুন, সপ্তাহান্তেও ঘুম বা বিশ্রামে হঠাৎ রুটিন পরিবর্তন এড়িয়ে চলুন
-
দৈনন্দিন কাজের মধ্যে ৪০-৫০ মিনিটের বিশ্রাম নিন
-
মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান, যোগব্যায়াম বা হালকা ব্যায়াম করুন
-
অতিরিক্ত ক্যাফেইন ও প্রসেসড ফুড এড়িয়ে চলুন
-
নিজের সমস্যা চিহ্নিত করুন এবং তা নথিবদ্ধ রাখুন (Migraine Diary)
আরও পড়ুন- সকালে খালিপেটে কতটা জল খাবেন? ২ গ্লাসের বেশি নয়, কিডনি বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন জেনে নিন
বিশেষজ্ঞ বলছেন
ডা. কুম্বার আরও বলেন, 'প্রতিটি মাইগ্রেনের রোগীর সমস্যা আলাদা হতে পারে। কারও ক্ষেত্রে দীর্ঘ ঘুম সমস্যার কারণ হতে পারে, আবার কারও ক্ষেত্রে কাজের ক্লান্তি হতে পারে সমস্যার কারণ। তাই কারণ শনাক্ত করাই মাইগ্রেন দূর করার প্রধান চাবিকাঠি।'
তাই মাইগ্রেনের পিছনের কারণ কেবলমাত্র চাপ নয়, অতিরিক্ত বিশ্রাম বা বিশ্রামের অনিয়মও হতে পারে মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। সেকথা মাথায় রেখেই নিয়ম মেনে চলুন এবং নিজের শরীরের প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করুন। মোদ্দা কথাটা মাথায় রাখবেন, কারণ চিহ্নিত করে তা নিয়ন্ত্রণ করলেই মাইগ্রেন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।