/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/26/hiralal-sen-2025-10-26-03-25-41.jpg)
Hiralal Sen: হীরালাল সেন।
Hiralal Sen & Cinema: হীরালাল সেন (২ আগস্ট ১৮৬৬ – ২৯ অক্টোবর ১৯১৭) ছিলেন ভারতের প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন। তিনি শুধু সিনেমা বানাননি, বরং চলচ্চিত্রকে একটি সচেতনতা ও রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার ব্যাপারে অগ্রদূত (pioneer) ছিলেন। ব্রিটিশ শাসনামলে হীরালাল সেন শহর ও গ্রামাঞ্চলে বায়োস্কোপ প্রদর্শনের মাধ্যমে জনগণকে আধুনিকতা, দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তবুও আজকের সাহিত্য-সংস্কৃতির জগৎ হীরালাল সেনকে প্রায় ভুলে গেছে।
চলচ্চিত্রে আগ্রহ
হীরালাল সেনের জন্ম মানিকগঞ্জের বগজুরি গ্রামে। তার পিতা ছিলেন চন্দ্রমোহন সেন, একজন আইনজীবী, আর মাতার নাম বিধুমুখী। আট সন্তানের মধ্যে হীরালাল ছিলেন দ্বিতীয়। প্রাথমিক শিক্ষা মানিকগঞ্জ মাইনর স্কুলে সম্পন্ন করলেও, তিনি বিদেশিদের প্রদর্শিত চলমান ছবি দেখে চলচ্চিত্রের প্রতি আকৃষ্ট হন। স্টার থিয়েটারের হ্যান্ডবিলে লেখা বিজ্ঞাপনটি পড়েই হীরালালের আগ্রহ জন্মায়।
আরও পড়ুন- পার্লারে যাওয়ার দরকার নেই, দুই কোয়া রসুনেই চুল হবে কালো!
চলচ্চিত্র নির্মাণ ও প্রদর্শন
হীরালাল ও তার ভাই মতিলাল সেন 'সেন ব্রাদার্স' নামে বায়োস্কোপ প্রদর্শনের উদ্যোগ নেন। ১৮৯৮ সালে ভাগ্নে কুমারশংকরকে নিয়ে তাঁরা রয়্যাল বায়োস্কোপ কোম্পানি তৈরি করেন। প্রথমে গ্রাম ও শহরের মানুষকে সিনেমা দেখান, পরে কলকাতার থিয়েটারে চলমান ছবি দেখাতে শুরু করেন। হীরালালের তোলা স্থিরচিত্র ১৮৯৮ সালে ভারতীয় শিল্প ও কৃষি প্রদর্শনীতে স্বর্ণপদক পায়।
আরও পড়ুন- প্রতিদিন রুই খেয়ে আর রুচছে না? এভাবে খান, মুখে লেগে থাকবে!
নাট্যচিত্র থেকে সিনেমা
হীরালাল সেন মূলত থিয়েটারের দৃশ্যধারণ করে সিনেমা বানাতেন। তাঁর প্রথম প্রদর্শিত নাট্যদৃশ্যগুলো হলো— ‘ভ্রমর’, ‘হরিরাজ’, ‘দোল লীলা’, ‘বুদ্ধ’, ‘সীতারাম’। ১৯০৩ সালে তিনি ‘অলিবাবা ও চল্লিশ চোর’ নামে একটি বড় দৈর্ঘ্যের ছবি বানান, যদিও সেটি কখনও প্রদর্শিত হয়নি।
আরও পড়ুন- অশীতিপর অপর্ণা! 'মিস ক্যালকাটা' যেন আজও সুইট ১৬
রাজনৈতিক চলচ্চিত্রের প্রথম প্রয়াস
১৯০৫ সালে হীরালাল সেন বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের দৃশ্য তোলেন, যা প্রথম রাজনৈতিক চলচ্চিত্র হিসেবে ইতিহাসে বিবেচিত হয়। একইসঙ্গে তিনি ভারতে বিজ্ঞাপন চলচ্চিত্রের পিতারূপে স্বীকৃত—জবা কুসুম তেল ও এডওয়ার্ডস টনিকের বিজ্ঞাপন বানিয়েছেন তিনিই।
আরও পড়ুন- ডায়রিয়া বেড়ে যাচ্ছে ইচ্ছেমত ORS খেয়েই! কী বলছেন চিকিৎসকরা?
শেষ জীবন ও আর্থিক সংকট
হীরালাল সেনের শেষ জীবন সুখের ছিল না। ১৯১৩ সালে মতিলালের সঙ্গে মতবৈষম্যের কারণে তিনি লন্ডন বায়োস্কোপ কোম্পানিতে যোগ দেন, পরে সিনেমা হল খোলার চেষ্টা করেন, কিন্তু প্রতারণার শিকার হন। তাঁর সমস্ত চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফ ১৯১৭ সালের ২৪ অক্টোবর এক অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংস হয়। চার দিন পরে ২৯ অক্টোবর তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
ব্যক্তিগত জীবন
হীরালালের স্ত্রী ছিলেন হেমাঙ্গিনী দেবী। সন্তানদের মধ্যে জানা যায়—সুরবালা দেবী, প্রফুল্লবালা দেবী, প্রতিভা দেবী ও বৈদ্যনাথ সেন। কোনও সন্তানই চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হননি।
স্মরণ ও উত্তরাধিকার
হীরালাল সেন ভারতের চলচ্চিত্র ইতিহাসের এক কিংবদন্তি। তাঁর কাজ ভারতীয় চলচ্চিত্রকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ করেছে।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us