Health Lifestyle: কিডনির পাথরও গলিয়ে দেবে! ঘরে বানানো এই ৫ পানীয়তেই গুরুতর রোগভোগ থেকে মুক্তি
Kidney-stones: কিডনিতে পাথর জমলে ভয় পাবেন না। জেনে নিন ৫টি ঘরোয়া পানীয় যা প্রাকৃতিক উপায়ে পাথর ভাঙতে ও কিডনি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। উপকার মিলবে সহজেই
Kidney-stones: কিডনিতে পাথর জমলে ভয় পাবেন না। জেনে নিন ৫টি ঘরোয়া পানীয় যা প্রাকৃতিক উপায়ে পাথর ভাঙতে ও কিডনি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। উপকার মিলবে সহজেই
Drinks to remove Kidney-stones: কিডনিতে পাথর গলাতে পারে এইসব ঘরোয়া পানীয়। (প্রতীকী ছবি)
Remove Kidney stones: আজকের দিনে কিডনিতে পাথরের সমস্যা অত্যন্ত সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে যাঁদের জল কম খাওয়ার অভ্যাস, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত, তাঁদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু ঘরোয়া কায়দাতেই এই সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এখানে এমন ৫টি ঘরে তৈরি করা যায়, এমন পানীয়র কথা তুলে ধরা হল, যা নিয়মিত খেলে প্রস্রাবের মাধ্যমে কিডনির ছোট পাথর ধীরে ধীরে শরীর থেকে বের হয়ে যেতে পারে।
Advertisment
কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণ
১. কম জলপান করা⏤ শরীরে জলাভাব হলে ইউরিন ঘন হয়ে যায়। এতে ইউরিনে থাকা খনিজ ও অ্যাসিড একসাথে জমে গিয়ে পাথর তৈরি করে।
২. অতিরিক্ত প্রোটিন ও লবণ খাওয়া⏤ বেশি পরিমাণে লবণ, প্রোটিন (বিশেষত: প্রাণিজ প্রোটিন), ও অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার (যেমন পালং শাক, বাদাম) ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোনের ঝুঁকি বাড়ায়।
Advertisment
৩. বংশগত বা জেনেটিক কারণ⏤ যদি পরিবারের সদস্যদের কিডনির পাথরের ইতিহাস থাকে, তাহলে আপনারও ঝুঁকি অনেক বেশি।
৪. প্রস্রাব আটকে রাখা বা নিয়মিত না হওয়া⏤ নিয়মিত প্রস্রাব না হলে ইউরিনে খনিজ পদার্থ জমে থাকে, যা ধীরে ধীরে পাথরে পরিণত হয়।
৫. অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা⏤ শরীরে মেটাবলিক ব্যালেন্স বিঘ্নিত হলে ইউরিক অ্যাসিড বা অন্যান্য খনিজ জমে কিডনিতে পাথর হয়।
৬. কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া⏤ কিছু অ্যান্টাসিড, ডিউরেটিক ওষুধ বা ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট দীর্ঘদিন সেবনে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
৭. খুব বেশি চা, সফট ড্রিংকস বা ক্যাফেইন জাতীয় পানীয়⏤ এই ধরনের পানীয়তে থাকা অক্সালেট এবং ফসফেট জাতীয় উপাদান ইউরিনের মাধ্যমে বের না হয়ে কিডনিতে জমে যেতে পারে।
৫টি ঘরোয়া পানীয় যা পাথর গলাতে সাহায্য করে
১. ডাবের জল (Coconut Water) কীভাবে সাহায্য করে?
ডাবের জল প্রাকৃতিক মূত্রবর্ধক। এতে প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ে। এই জল কিডনিকে বিষমুক্ত করে। প্রতিদিন ১-২ গ্লাস করে নারকেলের জল খেলে ছোট পাথর প্রস্রাবের মাধ্যমে বাইরে চলে যেতে পারে।
তুলসীতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহ বিরোধী উপাদান, যা কিডনির কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে। প্রতিদিন ১ কাপ গরম তুলসী চা খেলে কিডনিতে জমে থাকা ক্ষতিকর উপাদান সহজে বেরিয়ে যায়, এতে কিডনিতে পাথর তৈরি হওয়ার ঝুঁকিও কমে যায়।
লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড পাথর গলাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস গরম জলে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে পাথর গলে শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে পারে।
৪. আপেল সিডার ভিনেগার (Apple Cider Vinegar) কীভাবে সাহায্য করে?
আপেল সিডার ভিনেগারে থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড পাথর ভাঙতে পারে। ১ গ্লাস জলে ১ চা চামচ ভিনেগার মিশিয়ে দিনে দু’বার পান করলে ধীরে ধীরে আরাম পাওয়া যায়। তবে এটি খালি পেটে না খাওয়াই ভালো।
৫. গম ঘাসের রস (Wheatgrass Juice) কীভাবে সাহায্য করে?
গমের ঘাস কিডনি পরিষ্কারে কার্যকর। এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয় এবং প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়িয়ে কিডনির পাথর সহজে দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গমের ঘাসের রস পান করলেই ভালো ফল মিলতে পারে।
কিন্তু, মনে রাখতে হবে যে এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলি শুধুমাত্র প্রাথমিক পর্যায়ের জন্য উপকারী। যদি পাথরের আকার বড় হয় বা ব্যথা তীব্র হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে
কিডনিতে পাথর অনেক সময় ছোট থাকলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে বেরিয়ে যেতে পারে। তবে নীচের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি:
প্রস্রাবে তীব্র ব্যথা বা জ্বালাভাব
প্রস্রাবে রক্ত দেখা গেলে
পেট বা কোমরে অসম সহনীয় ব্যথা
জ্বর ও বমির ভাব
প্রস্রাব আটকে যাওয়া বা অনিয়মিত প্রস্রাব
ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ অথচ সামান্য প্রস্রাব
পাথরের আকার ৫ মিমি-র বেশি হলে
কিডনির পাথর গলাতে কতদিন লাগে?
পাথরের আকার ও অবস্থানের উপর নির্ভর করে। ছোট পাথর সাধারণত ১–৩ সপ্তাহে গলে বা বেরিয়ে যেতে পারে, তবে বড় পাথরের জন্য চিকিৎসা লাগে।