Snake Facts: সাপ নিয়ে আমাদের ভয়, কৌতূহল এবং ভুল ধারণা কম নেই। কেউ ভাবে সব সাপই বিষাক্ত। কেউ ভাবে তারা কেবল পোকামাকড় খায়। কিন্তু বাস্তবতা হল যে সাপ প্রকৃতির এক চমকপ্রদ সৃষ্টি। আজ আমরা জানব সাপের এমন ৮টি অজানা ও অবাক করা তথ্য যা জানলে আপনি নিশ্চিতভাবেই অবাক হবেন।
১. নিজের মাথার চেয়ে ১০ গুণ বড় শিকার গিলে ফেলে!
সাপের চোয়াল বিশেষভাবে তৈরি—তাদের চোয়াল আলাদা হয়ে যায় এবং লম্বালম্বি বড় হতে পারে। এর ফলে একটি অজগর বা কিং কোবরা সহজেই ছোট হরিণ, শূকর এমনকি ছোট কুমির পর্যন্ত গিলে ফেলতে পারে।
আরও পড়ুন- মাত্র ১৫ মিনিটে বানিয়ে ফেলুন পুদিনার চাটনি, একবার খেলে বারবার চাইবেন!
২. সাপের খাবারের তালিকায় শুধু পোকামাকড় নয়
বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন যে সাপ কেবল পোকা বা কীটপতঙ্গ খায়। বাস্তবে তারা খায়—
-
ব্যাঙ ও কাঁকড়া
-
ইঁদুর, টিকটিকি
-
ছোট পাখি, ডিম
-
অন্য সাপ!
অজগর, র্যাট স্নেক বা কিং কোবরা প্রায়শই অন্য সাপও শিকার করে।
আরও পড়ুন- মাত্র ২০ মিনিটে তৈরি করুন সুস্বাদু কুইনোয়া পোলাও, পেট ভরবে, বাড়বে স্বাস্থ্যও
৩. শুধু বিষ নয়, সংকোচনও শিকারের কৌশল
সাপ দুই রকম পদ্ধতিতে শিকার করে:
-
বিষ: ভাইপার, কোবরা, ক্রেইট শিকারকে দংশন করে বিষ ঢুকিয়ে পঙ্গু করে ফেলে।
-
সংকোচন: অজগর ও বোয়া সাপ তাদের শিকারকে শরীর দিয়ে চেপে দম বন্ধ করে মেরে ফেলে।
৪. কেন কিছু সাপ অন্য সাপ খায়?
কিং কোবরা, ব্যান্ডেড ক্রেইটের মতো কিছু সাপ 'ওফিওফেজ'— অর্থাৎ তারা অন্য সাপ খেয়ে বেঁচে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, চাপের সময় কিছু সাপ আত্মরক্ষার অংশ হিসেবেও এই আচরণ করে।
আরও পড়ুন- ইউনেস্কোর সর্বাধিক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে কোন ১০ দেশে? ভারত আছে কত নম্বরে?
৫. তাপমাত্রায় শিকার শনাক্ত!
সাপের বিশেষ হিট-সেন্সিং পিট অর্গান রয়েছে যা রাতেও শিকার চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। ভাইপার, বোয়া এবং পাইথন এই পদ্ধতিতে হোমিওথার্মিক প্রাণী খুঁজে বের করে।
আরও পড়ুন- 'জেনারেশন জেড'-এর জন্য ফিরছে শক্তিমান, মোবাইল ফোনই ১ম ভিলেন! জানালেন মুকেশ খান্না
৬. জিভ দিয়ে গন্ধ শোঁকে!
সাপের 'জ্যাকবসনের অঙ্গ' তাদের কাঁটাযুক্ত জিভের মাধ্যমে বাতাসে থাকা গন্ধের কণা শনাক্ত করে। এটি তাদেরকে রাস্তা চিনে নিতে এবং শিকার চিনে নিতে সাহায্য করে।
৭. মাস নয়, বছরও কাটিয়ে দিতে পারে না খেয়ে!
সাপের বিপাক হার (metabolic rate) অত্যন্ত কম, এবং তারা ঠান্ডা রক্তবিশিষ্ট প্রাণী। তাই একবার বড় শিকার খেলে অনেক সাপ মাসের পর মাস এমনকী বছরের বেশি সময় না খেয়ে থাকতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, অজগর একবারে বড় শিকার গিলে নিয়ে ৬-১২ মাস পর্যন্ত কিছু না খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে।
৮. সাপ একসময় ডাইনোসরের বাচ্চাও খেত!
ভারতের গুজরাটে পাওয়া এক জীবাশ্ম থেকে জানা গিয়েছে, প্রাচীন সাপেরা একসময় ডাইনোসরের ডিম বা শিশু ডাইনোসর খেত। এটি প্রমাণ করে যে সাপ বহু প্রজাতির ওপর নির্ভর করে খাদ্য সংগ্রহ করত এবং আশ্চর্য অভিযোজন ক্ষমতা ছিল তাদের।
তাহলে আমরা সাপকে কি ভুল বুঝি?
হ্যাঁ। বেশিরভাগ সাপই বিষাক্ত নয় এবং বিনা প্ররোচনায় আক্রমণও করে না। সাপ সাধারণত লাজুক, নিরীহ এবং আত্মরক্ষার জন্যই হিংস্র হয়ে ওঠে। তারা প্রকৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং শিকারের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে।
সাপের আচরণ, খাদ্যাভ্যাস ও শিকারের ধরন সত্যিই অবাক করার মতো। প্রকৃতির এই নীরব শিকারি সম্পর্কে জানলে ভয় নয়, বরং বিস্ময় এবং শ্রদ্ধাই জাগে। তাই, সাপ দেখলেই আতঙ্ক নয়, সচেতনতা এবং বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিভঙ্গিই হওয়া উচিত আমাদের প্রতিক্রিয়া।