Jagannath Rath Yatra 2025: প্রতিবছর আষাঢ় মাসে ওড়িশার পুরীতে অনুষ্ঠিত হয় জগন্নাথের রথযাত্রা। এই একটি মহোৎসব। যা শুধু ধর্মীয় নয়, বরং এক বিশাল সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক সমাবেশ। লক্ষ লক্ষ ভক্ত এই রথযাত্রায় অংশ নিতে ছুটে আসেন দেশ-বিদেশ থেকে। ২০২৫ সালে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে ২৭ জুন। ভগবান জগন্নাথ, ভাই বলরাম এবং বোন সুভদ্রা তিনটি রথে চড়ে যাবেন তাঁদের মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দিরে। সাত দিন পরে তাঁরা ফিরবেন নিজ মন্দিরে।
এই রথযাত্রার সময় যেমন আনন্দ ও ভক্তির আবহ তৈরি হয়, তেমনি একটি প্রাচীন নিষেধাজ্ঞাও আজও কঠোরভাবে মেনে চলা হয়— অবিবাহিত বা বাগদানকৃত দম্পতিরা পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন না।
আরও পড়ুন- দাঁত ব্যথার পিছনে কি সাইলেন্ট অ্যাসিড রিফ্লাক্স? বড় আশঙ্কা চিকিৎসকদের
এই নিষেধাজ্ঞার পিছনে কী কারণ?
এই নিয়মের পিছনে কোনও সামাজিক বা প্রশাসনিক কারণ নেই, বরং এর উৎস রয়েছে এক পুরাণঘটিত কাহিনিতে, যা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধার সঙ্গে তাঁর অনন্ত প্রেমের বিষয়ে জড়িত।
আরও পড়ুন- একমুঠো লবঙ্গেই চুল হবে কালো, রাসায়নিক রঙের প্রয়োজনই পড়বে না!
রাধার অভিশাপ: পৌরাণিক কাহিনি
পুরাণ অনুসারে, একবার রাধারানি পুরীতে আসেন ভগবান কৃষ্ণের জগন্নাথ রূপ দর্শন করতে। কিন্তু যখন তিনি মন্দিরে প্রবেশ করতে যান, তখন সেখানকার পুরোহিতরা তাঁকে আটকে দেন। কারণ জিজ্ঞেস করলে পুরোহিতরা জানান যে, তিনি ভগবানের স্ত্রী নন, প্রেমিকা। এবং এই মন্দিরে ভগবানের স্ত্রীও প্রবেশ করতে পারেন না, প্রেমিকা তো নয়ই।
আরও পড়ুন- গাজরের টুকরোতেই তৈরি করুন স্কিন টোনার, ত্বক হবে উজ্জ্বল!
এই কথায় রাধা রানি প্রচণ্ড অপমানিত বোধ করেন এবং ক্রোধে অভিশাপ দেন— 'আজ থেকে কোনও অবিবাহিত প্রেমিক-প্রেমিকা বা বাগদানকারী দম্পতি এই মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবে না। যদি তাঁরা প্রবেশ করে, তবে তাদের প্রেম কোনওদিন পূর্ণতা পাবে না।'
আরও পড়ুন- মুহূর্তে পাকা চুল হবে ঘন কালো, এই বীজ-চা প্যাকেই মিলবে ম্যাজিক!
আজও সেই রীতি মানা হয়
রাধার এই অভিশাপের পর থেকেই, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে একটি কঠোর নিয়ম প্রচলিত হয়—কেবলমাত্র বৈধভাবে বিবাহিত দম্পতিরাই মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন। অবিবাহিত প্রেমিক যুগল বা এমনকি বাগদান হওয়া দম্পতিকেও মন্দিরে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- বগলে কি প্রায়ই ব্রণ হয়? কেন হয়, কী করবেন আর করবেন না জেনে নিন
মন্দির কর্তৃপক্ষ এই রীতি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে। অনেক পর্যটক ও ভক্ত এই নিয়ম শুনে অবাক হন, কিন্তু ধর্মীয় ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই সবাই তা মেনে চলেন।
রথযাত্রার মাহাত্ম্য
বিশ্বাস করা হয়, রথযাত্রায় অংশগ্রহণ করলে ১০০টি অগ্নিযজ্ঞ করার সমান পুণ্য লাভ হয়। এই যাত্রার সময় যদি কেউ ভগবান জগন্নাথের রথ স্পর্শ করতে পারে, তবে সে জীবনের সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পায় এবং মোক্ষ লাভ করে।
আরও পড়ুন- ফ্যাটি লিভার! নীরব ঘাতককে চিনুন, জেনে নিন রোগ প্রতিরোধের উপায়
জগন্নাথের রথযাত্রা কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি ভারতীয় সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের অন্যতম প্রতীক। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাধার অভিশাপের মতো পৌরাণিক কাহিনি। যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, বিশ্বাস ও ভক্তির শক্তি কত গভীর হতে পারে। কখনও কখনও, এই বিশ্বাসই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে জীবিত থাকে মন্দিরের প্রতিটি নিয়ম এবং রীতিতে।