Jhum Cultivation in Tripura: ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি এলাকায় জুম চাষ (agriculture) বা শিফটিং কাল্টিভেশন একটি প্রাচীন কৃষি পদ্ধতি, যা মূলত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। বিশেষত রিয়াং, চাকমা, লুসাই, মিজো ও অন্যান্য উপজাতি জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই চাষের প্রচলন রয়েছে।
বর্তমান অবস্থা
বর্তমানে ত্রিপুরায় জুম চাষ (Jhum cultivation) ধীরে ধীরে কমছে। একদিকে আধুনিক কৃষি পদ্ধতির প্রসার, অন্যদিকে বন সংরক্ষণের আইনগত নিয়মে অনেক কৃষক বাধ্য হচ্ছেন বিকল্প পথে যেতে। তবুও, রাজ্যের ধলাই, উত্তর ত্রিপুরা ও গোমতী জেলায় এখনও এই পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে। সাধারণত ফেব্রুয়ারি-মার্চে জমি পরিষ্কার করে এপ্রিল-মে মাসে বীজ বপন করা হয়।
এই চাষে ধান, কচু, ঝিঙে, শিম, কুমড়া, লঙ্কা, করলার মত ফসল একত্রে চাষ করা হয়, যা খাদ্য বৈচিত্র্য নিশ্চিত করে। তবে মাটির উর্বরতা হ্রাস, খরার প্রভাব এবং বনজ সম্পদের ক্ষতির কারণে উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন- এবারের বুদ্ধ পূর্ণিমা, যুদ্ধের আবহে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসম ও বাংলাদেশে কীভাবে উদযাপিত হবে?
চ্যালেঞ্জ
১. পরিবেশগত চাপ: একে একে বিভিন্ন স্থানে বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে, যা প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে।
২. অর্থনৈতিক অসন্তোষ: জুম চাষ অর্থনৈতিকভাবে টেকসই নয় বলে অনেক তরুণ অন্য পেশায় ঝুঁকছেন।
৩. প্রযুক্তির অভাব: আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার কম, ফলে উৎপাদন ব্যয় বেশি।
৪. পরিকল্পনার অভাব: সরকারের পর্যাপ্ত পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণের ঘাটতি রয়েছে।
আরও পড়ুন- আজকের দিনে ইতিহাসে, ১০ মে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক ঘটনা
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
যদিও সমস্যাগুলো জ্বলন্ত, তবে জুম চাষের ভবিষ্যৎ এখনও শেষ হয়ে যায়নি। কিছু প্রস্তাবিত উন্নয়নের পথ এখনও রয়েছে, যেমন:
- টেকসই জুম ব্যবস্থাপনা: কৃষকদের পরিবেশবান্ধব ও ধাপে ধাপে জমি ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিলে চাষটিকে টেকসই করা সম্ভব।
আরও পড়ুন- গরমে ত্বক রাখুন ব্রণ ও ধুলোমুক্ত, ঘরে বানানো এই মিশ্রণেই মিলবে ফ্রেশ লুক!
-
মিশ্র কৃষি ও বাগান চাষ: জুমের সঙ্গে ফল ও মসলার চাষ সংযুক্ত করলে আয় বাড়বে।
-
বাজার সংযোগ: গ্রামীণ হাট ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চাষিদের পণ্যের সঠিক মূল্য নিশ্চিত করা যেতে পারে।
-
সরকারি সহায়তা ও ঋণ: সহজ শর্তে ঋণ ও সাবসিডি দিয়ে জুম চাষে নতুন প্রজন্মকে আগ্রহী করা যায়।
আরও পড়ুন- পায়ের কড়ার যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছেন? কোথাও ছুটতে হবে না, দেখে নিন কীভাবে ঘরোয়া কায়দায় মিলবে দ্রুত আরাম!
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক
জুম কেবল একটি চাষ পদ্ধতি নয়, এটি একটি জীবনদর্শন। উৎসব, ঐতিহ্য এবং পারিবারিক বন্ধনের প্রতীক হিসেবেও জুম গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই চাষের টেকসই উন্নয়ন শুধু অর্থনৈতিক নয়, সামাজিক উন্নয়নের দিক থেকেও অপরিহার্য।