/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/20/kajal-on-diwali-2025-10-20-05-25-11.jpg)
Kajal on Diwali: দীপাবলিতে চোখে কাজল পরার চল আছে।
Importance of Kajal on Diwali 2005: দীপাবলি মানেই আলো, আনন্দ, সাজগোজ আর শুভ সূচনা। এই দিনটিতে যেমন ঘরবাড়ি সাজানো হয়, তেমনই শরীর এবং মনকেও পবিত্র করা হয় নানা আচার ও রীতি মেনে। এই সাজগোজের একটি অংশ হল চোখে কাজল পরা। তবে, সেটা কিন্তু শুধু সৌন্দর্যের অংশ নয়। এটি একটি শুভ প্রতীক বলেই মনে করা হয়। চলুন, এই ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
দীপাবলির রাতে কাজল পরার কারণ
ভারতীয় শাস্ত্র ও লোকাচারে বিশ্বাস করা হয়, দীপাবলির রাতে পৃথিবীতে দেবী লক্ষ্মী নেমে আসেন। এই সময় শুভ শক্তির সঙ্গে অশুভ শক্তিও সক্রিয় হয়। সেই কারণেই, চোখে কাজল লাগানো হয় 'নজর' বা 'দৃষ্টি দোষ' থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। বিশেষত শিশু ও নারীদের চোখে সামান্য কাজল লাগালে তাঁদের দিকে অশুভ দৃষ্টি পড়ে না। এই বিশ্বাস প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত।
আরও পড়ুন- পুজোয় দেবী লক্ষ্মীর মূর্তি রাখুন এই দিকেই, আসবে অগাধ সমৃদ্ধি!
দীপাবলিতে বাড়ির প্রতিটি কোণায় প্রদীপ জ্বালানো হয়, কারণ আলো অন্ধকার দূর করে। ঠিক তেমনই কাজলকে বলা হয় 'অন্ধকারের আলো', যা মানুষের মধ্যে শক্তি ও আত্মবিশ্বাস জাগায়। অনেকে বলেন, কাজল চোখের মাধ্যমে শরীরের 'অরা' বা শক্তিক্ষেত্রকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে এবং নেতিবাচক শক্তি প্রবেশ করতে দেয় না।
আরও পড়ুন- কালীঘাট থেকে তারাপীঠ, বঙ্গের মন্দিরে কালীপুজোয় কী থাকে ভোগে?
প্রাচীনকালে তাই ঘরে বানানো হত, 'দীপাবলির কাজল'। একটি তামার থালায় প্রদীপ জ্বেলে তার ওপরে একটি ছোট বাটি রেখে ধোঁয়ায় জমে ওঠা কালো অংশ সংগ্রহ করা হত। সেই কালোই ছিল পবিত্র 'কাজল'। এই কাজলকে চোখে লাগানো মানে শুভ শক্তিকে আহ্বান করা এবং অশুভ শক্তিকে দূরে রাখা। এই রীতিই আজও ভারতের বহু প্রদেশে 'দিওয়ালি কাজল রীতি' (Diwali Kajal Ritual) নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন- জাগ্রত ঘাঘরবুড়ি দেবীর আশীর্বাদে কাটে বিপদ, পূর্ণ হয় মনস্কামনা!
বাস্তুশাস্ত্র ও জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, দীপাবলির রাতে চোখে কাজল লাগানো 'শনি দৃষ্টি' ও 'অশুভ গ্রহ প্রভাব' কমায়। এটি এমন এক প্রতীকী প্রক্রিয়া, যা আলো (প্রদীপ) এবং অন্ধকার (কাজল) — দুইয়ের মিলনে ভারসাম্য আনে। অনেক পণ্ডিত বলেন, 'এটি মহাশক্তি মা কালী বা লক্ষ্মীর আরাধনার সময় একধরনের নেত্র-সুরক্ষা তন্ত্র হিসেবেও বিবেচিত।'
আরও পড়ুন- কালীপুজোর আনন্দে ভাসছেন আপনিও, কিন্তু জানেন কি দেবী কালীর কত রূপ?
দীপাবলি মানেই সাজগোজ, তবে সেই সাজে যখন ঐতিহ্যের ছোঁয়া থাকে, তখন তা হয়ে ওঠে আরও অর্থবহ। কাজল চোখকে শুধু সুন্দরই করে না, বরং মনকে শান্তও করে। অনেকে বলেন, 'দীপাবলির কাজল আত্মবিশ্বাস ও শক্তির প্রতীক, যা নারীদের মুখে এক অনন্য দীপ্তি আনে।' প্রচলিত মত অনুযায়ী, প্রদীপ জ্বালানোর পরে, লক্ষ্মী-গণেশের পুজো শেষে কাজল পরা শুভ। পুরুষ ও নারী উভয়েই কাজল পরতে পারেন। শিশুর চোখে সামান্য কাজল লাগালে শুভ শক্তি আকর্ষিত হয় বলে বিশ্বাস করা হয়।
পুজো ঘরের কাছে বা আয়নার টেবিলের ডানদিকে কাজল রাখলে মা লক্ষ্মীর কৃপা বৃদ্ধি পায়। ব্যবহার শেষে ঢেকে রাখলে নষ্ট হয় না। কখনও কাজলকে মেঝেতে ফেলে রাখবেন না, এটি অশুভ বলে মনে করা হয়। কারণ, কাজল এক রক্ষাকবচ।