/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/02/nandan-2025-09-02-16-19-21.jpg)
Nandan Kolkata: নন্দন প্রেক্ষাগৃহ।
Nandan Kolkata: কলকাতা এ দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী। আর এই শহরের কথা উঠলেই এক নিঃশ্বাসে যে জায়গাগুলোর নাম উঠে আসে তার মধ্যে অন্যতম ‘নন্দন’। এটি শুধু একটি সিনেমা হল নয়, বরং পূর্ব ভারতের চলচ্চিত্রচর্চার কেন্দ্রবিন্দু।
নন্দনের জন্মবৃত্তান্ত
১৯৮০ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার চলচ্চিত্র চর্চা এবং প্রদর্শনের জন্য একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়। সেই উদ্যোগেই জন্ম নেয় নন্দন কলকাতা (Nandan Kolkata)। ১৯৮৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর এই প্রেক্ষাগৃহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন চলচ্চিত্র জগতের মহারথী সত্যজিৎ রায়, সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। নন্দনের নামকরণও করেছিলেন স্বয়ং সত্যজিৎ রায়। প্রেক্ষাগৃহের বাইরে ‘নন্দন’ লেখা ক্যালিগ্রাফিটিও তাঁর সৃষ্টি।
আরও পড়ুন- কামড়ে মৃত্যুও হতে পারে! আশপাশে এই বোলতা দেখলেই সাবধান হোন
প্রথম দিনে নন্দন ১-এর পরদায় প্রদর্শিত হয়েছিল ঋত্বিক ঘটকের বিখ্যাত চলচ্চিত্র 'যুক্তি তক্কো আর গপ্পো'। এভাবেই শুরু হয় নন্দনের সোনালি যাত্রা।
আরও পড়ুন- সন্ধ্যায় টিফিনের জন্য কীভাবে বানাবেন দোকানের মত নিরামিষ মোচার চপ? জানুন বিস্তারিত
১৯৯৫ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে এখানে শুরু হয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সময় নন্দন চত্বর রঙিন হয়ে ওঠে নানা দেশের সিনেমা, শিল্পী এবং সংস্কৃতির মিলনমেলায়। ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের আসর বহু বছর নন্দনকে কেন্দ্র করেই জমে উঠত।
আরও পড়ুন- ঘুমানোর আগে লাগান এই কোরিয়ান ফেসমাস্ক, রাতারাতি পান উজ্জ্বল ত্বক
নন্দনে রয়েছে তিনটি অডিটোরিয়াম। নন্দন ১-এ আসন সংখ্যা ৯৩১। নন্দন ২-এ ২০০। নন্দন ৩-এ ১০০। স্থপতি ছিলেন অমিতাভ সেনগুপ্ত। নন্দনের স্থাপত্যশৈলী যেমন অনন্য, তেমনই এর পরিবেশও আজ সাংস্কৃতিক মঞ্চের প্রতীক। প্রথম থেকেই নন্দনে মূলত শিল্পধর্মী এবং সমান্তরাল সিনেমাই প্রদর্শিত হত। বানিজ্যিক ছবির থেকে আলাদা হয়ে উঠেছিল এই প্রেক্ষাগৃহ। তবে আর্থিক কারণে পরবর্তীতে বানিজ্যিক সিনেমার জন্য দরজা খুলে দেওয়া হয়। তবুও নন্দনের আসল রূপ চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে এখনও সাংস্কৃতিক আড্ডার জায়গা।
আরও পড়ুন- তিনি যেন গেঁয়ো যোগী, কলকাতা সেভাবে গ্রহণ না করলেও লুফে নিয়েছিল বিশ্ব
আজকের দিনে যখন মাল্টিপ্লেক্স একের পর এক গজিয়ে উঠছে, তখনও নন্দন বাঙালির হৃদয়ে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। এখানে সিনেমা মানেই শুধু বিনোদন নয়, বরং আড্ডা, তর্ক, রাজনীতি আর প্রেমেরও কেন্দ্র। নন্দন কলকাতার জন্য শুধু গর্ব নয়, গোটা বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে জন্ম নেওয়া এই চলচ্চিত্র কেন্দ্র আজও উজ্জ্বল, আজও তা বাঙালির প্রাণস্পন্দনই হয়ে রয়েছে।