/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/16/kali-worshipper-2025-10-16-03-06-08.jpg)
Shakta Saints of Bengal: বাংলার তিন শক্তি সাধক।
Shakta Saints of Bengal: বাংলা সংস্কৃতিতে শাক্ত সাধকরা কালের পরিক্রমায় অসাধারণ প্রভাব ফেলেছেন। তাঁদের ভক্তিগীতি, সাধনা এবং কাহিনী শুধু ধর্মীয় নয়, বরং বাংলার লোকজ সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিশেষ করে রামপ্রসাদ সেন, কমলাকান্ত ভট্টাচার্য এবং রামকৃষ্ণ পরমহংস এই তিন প্রখ্যাত সাধক বাংলার কালীপূজাকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছেন।
রামপ্রসাদ সেন
১৮শ শতাব্দীর প্রখ্যাত শাক্ত কবি ও সাধক রামপ্রসাদ সেন কালীপূজার জন্য বিখ্যাত ভক্তিগীতি রচনা করেছিলেন। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের কুমারহট্ট গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বাল্যকাল থেকেই তাঁর কাব্যরচনার প্রতি আগ্রহ ছিল। পরবর্তীতে তিনি কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে তন্ত্রসাধনা ও কালীপূজার পদ্ধতি শিখেছিলেন। তাঁর লেখা 'রামপ্রসাদী' গান আজও বাংলার গ্রামীণ ও শহুরে লোকের কাছে সমান জনপ্রিয়। মৃত্যুর সময়, কালীপ্রতিমা নিয়ে গঙ্গার জলে বিসর্জন দেওয়ার পর তাঁর প্রয়াণের গল্প বাংলার অলৌকিক কিংবদন্তি হিসেবে প্রচলিত।
আরও পড়ুন- ধনতেরসেই কেনা হয় কেন, শাস্ত্রমতে ঝাড়ু রাখার নিয়মটা কী?
কমলাকান্ত ভট্টাচার্য
রামপ্রসাদের পরবর্তী প্রজন্মের শাক্ত কবি কমলাকান্ত ভট্টাচার্য ছিলেন ১৭৭২ সালে বর্ধমানে জন্মগ্রহণকারী একজন সাধক ও সভাকবি। মহারাজ তেজশ্চন্দ্রের পৃষ্ঠপোষকতায় তিনি রাজপ্রাসাদে শিক্ষক ও গুরুর ভূমিকায় ছিলেন। তিনি শতাধিক ভক্তিগীতি রচনা করেছেন, বিশেষ করে আগমনী ও বিজয়া পদে। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর আরাধ্য সক্রিয় হয়ে কমলাকান্তের প্রার্থনা অনুযায়ী মন্দিরের মাটিতে গঙ্গার জল উদ্ভূত করেছিলেন। এমনটাই দাবি ভক্তদের। কালীপূজায় সেই কুয়োর জলে আজও ভোগ রান্না করা হয়।
আরও পড়ুন- দীপাবলি কবে, ২০ না ২১ অক্টোবর? পুজোর আগেই ঘরে আনুন এই ৫ মূর্তি!
রামকৃষ্ণ পরমহংস
১৮৩৬ সালে জন্মগ্রহণকারী রামকৃষ্ণ পরমহংস ছিলেন বাংলার এক বিশিষ্ট যোগী, দার্শনিক ও ধর্মগুরু। কৃষ্ণনগরের গ্রামীণ পরিবেশে বড় হয়ে ওঠা রামকৃষ্ণ পরমহংস স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের উপভাষা ও জীবনযাপনের সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত ছিলেন। তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় ধারার সঙ্গে পরিচিত হয়ে 'যত মত, তত পথ' উপলব্ধি লাভ করেন। তাঁর প্রধান শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন, যা আজও ভারত ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় ও সমাজসেবায় অবদান রাখছে।
আরও পড়ুন- কালীপুজোর রাতে মহাসরস্বতীর পুজোয় মেতে ওঠে এই গ্রাম! জানেন কোথায়?
এই তিন সাধক শুধু ধর্মীয় ক্ষেত্রেই নয়, বাংলার সংগীত, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে এক অমোঘ প্রভাব রেখেছেন। কালীপূজা ও শ্যামা সংগীতের মাধ্যমে তাঁরা বাংলার প্রতিটি ঘরে আজও অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছেন। রামপ্রসাদ, কমলাকান্ত ও রামকৃষ্ণের জীবনী এবং তাঁদের গান বাংলার নবজাগরণ ও আধ্যাত্মিক চেতনার প্রতীক।