Shmashan Kali Temple of Srirampur: শ্রীরামপুরের বল্লভপুর শ্মশান কালী, এই দেবীর কাছে কেন বাড়ছে ভক্তদের ভিড়?

Shmashan Kali Temple of Srirampur: শ্রীরামপুর বল্লভপুরের ১৭৬ বছরের পুরোনো শ্মশান কালী মায়ের মন্দির আজও জাগ্রত। এই পবিত্র শক্তিক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ ভক্ত পুজো দিতে আসেন।

Shmashan Kali Temple of Srirampur: শ্রীরামপুর বল্লভপুরের ১৭৬ বছরের পুরোনো শ্মশান কালী মায়ের মন্দির আজও জাগ্রত। এই পবিত্র শক্তিক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ ভক্ত পুজো দিতে আসেন।

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Shmashan Kali Temple of Srirampur: শ্রীরামপুর শ্মশান কালী।

Shmashan Kali Temple of Srirampur: শ্রীরামপুর শ্মশান কালী।

Shmashan Kali Temple of Srirampur: হুগলির শ্রীরামপুর শহরের বল্লভপুর অঞ্চলে অবস্থিত এক প্রাচীন ও জাগ্রত তীর্থক্ষেত্র — বল্লভপুর শ্মশান কালী মন্দির। প্রায় ১৭৬ বছর ধরে এই মন্দিরে নিষ্ঠা এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে চলে আসছে মা শ্মশান কালীর আরাধনা। স্থানীয় মানুষদের বিশ্বাস, এই মায়ের কাছে যাঁরা একান্ত ভক্তি ও বিশ্বাস নিয়ে আসেন, তাঁদের মনস্কামনা পূর্ণ হয়।

Advertisment

শ্মশান মানেই মৃত্যুর পরের স্থান— যেখানে দেহ বিলীন হয়ে যায় কিন্তু আত্মা শান্তি খোঁজে। সেই শ্মশানেই যখন মা কালী জাগ্রত রূপে বিরাজমান, তখন সেখানে সৃষ্টি হয় এক ভিন্ন আধ্যাত্মিক আবহ। শ্রীরামপুরের এই শ্মশান কালী মন্দির সেই পবিত্র স্থানেরই প্রতীক।

আরও পড়ুন- রাজাদের ইতিহাস আর প্রকৃতির মিলনস্থল, ভারতের এই অতুলনীয় পর্যটনকেন্দ্রে দেখার মত কী আছে?

Advertisment

গঙ্গার তীরে জাগ্রত মা

মন্দিরটি অবস্থিত গঙ্গার তীরঘেঁষে শ্রীরামপুর শ্মশানঘাটের পাশে। শান্ত অথচ গম্ভীর এই পরিবেশে প্রতিদিনই ভক্তদের সমাগম ঘটে। বহু মানুষ বিশ্বাস করেন, গঙ্গার ধারে মা শ্মশান কালী রুদ্ররূপে বিরাজ করে আত্মাকে মুক্তি দেন। ভক্তদের মতে, এখানে পুজো দিলে শুধু মনস্কামনা পূর্ণ হয় না, জীবনের অশুভ প্রভাবও দূর হয়।

আরও পড়ুন- রাতের শুনশান রাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা, ভাইরাল পেঞ্চের যুবক!

মন্দিরের ইতিহাস

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৭৬ বছর আগে কয়েকজন সমাজসেবী ও ধর্মপ্রাণ মানুষ এই মন্দির স্থাপন করেন। ধীরে ধীরে এটি হয়ে ওঠে শ্রীরামপুরের অন্যতম আধ্যাত্মিক কেন্দ্র। প্রতিবছর শ্মশান কালী পুজোর সময় মন্দির প্রাঙ্গণ ভরে যায় ভক্তদের ভিড়ে। আজও ঐতিহ্য মেনে চলে পূজার আয়োজন।

আরও পড়ুন- পা ফাটা নিয়ে নাজেহাল? এই ঘরোয়া কায়দায় দূর করুন সমস্যা!

পুজোর নিয়ম ও অনুষ্ঠান

মায়ের পুজো শুরু হয় ভোরবেলায় নারকেল ফাটিয়ে। এরপর চলে চণ্ডীপাঠ, আরতি ও ভোগ নিবেদন। পুজো হয় তিন ভাগে ভাগ করে— সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যা। সারাদিনই পবিত্র মন্ত্রোচ্চারণ ও ধূপ-দীপে ভরে থাকে মন্দির এলাকা। স্থানীয় সর্বজনীন শ্মশান কালী পুজো কমিটি এই মন্দিরের দেখাশোনা করে। পুজোর সমস্ত আয়োজন, নিরাপত্তা ও সামাজিক কাজের দায়িত্বও তারাই বহন করে। এছাড়া সবুজ সংঘ ও সৌরভ সংঘের সদস্যরা প্রতি বছর স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যুক্ত হন।

আরও পড়ুন- বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথের মতই তিনি দশকের পর দশক বাংলার শিশুদের শিক্ষক!

ভোগ বিতরণ ও সামাজিক উদ্যোগ

বল্লভপুর শ্মশান কালী মায়ের পুজো শুধুমাত্র আচার বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি এক সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতীকও। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিবছর ভোগ শুধু ভক্তদের মধ্যেই নয়, শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতাল, টিবি হাসপাতাল, শ্রমজীবী হাসপাতাল এবং চেসারস হোমে বিতরণ করা হয়। এভাবেই মায়ের প্রসাদ পৌঁছে যায় অসহায় মানুষের কাছে— যা এই পুজোকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে।

জাগ্রত মায়ের মাহাত্ম্য

ভক্তদের বিশ্বাস, মা শ্মশান কালী এখানে আজও জাগ্রত। কারও সংসারে বিপদ এলে বা মনোবাসনা পূরণ না হলে তাঁরা মায়ের কাছে মানত করেন। অসংখ্য মানুষ জানিয়েছেন, মানত পূর্ণ হলে তাঁদের জীবনে পরিবর্তন এসেছে। তাই প্রতিবছর এই দেবীর পুজোর সময় দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তদের ভিড় জমে যায় এখানে।

শ্মশান কালী মানেই মৃত্যুর পরেও জীবনের সত্য উপলব্ধি। এখানে আসলে মানুষ মৃত্যুভয় থেকে মুক্ত হতে শেখে। শ্রীরামপুরের এই মন্দির তাই শুধু ধর্মীয় নয়, আধ্যাত্মিক শান্তিরও কেন্দ্র। এখানকার পরিবেশে এক ধরনের নীরব অথচ শক্তিশালী স্পন্দন অনুভূত হয়, যা ভক্তদের অন্তরে গভীর ভক্তিভাব জাগিয়ে তোলে।

Kali Temple