Joy Kali Temple: দেবীর ভোগ ডিম! জানুন ৪৫০ বছরের প্রাচীন কালীমন্দিরের এক আশ্চর্য কাহিনি!

Joy Kali Temple: কলকাতার ৪৫০ বছরের পুরনো জয়কালী মন্দিরে একবার দেবীকে ডিম ভোগ দেওয়া হয়েছিল বলে জনশ্রুতি রয়েছে। সেই কাহিনি আজও ভক্তদের মুখে ফেরে। জানুন বিস্তারিত।

Joy Kali Temple: কলকাতার ৪৫০ বছরের পুরনো জয়কালী মন্দিরে একবার দেবীকে ডিম ভোগ দেওয়া হয়েছিল বলে জনশ্রুতি রয়েছে। সেই কাহিনি আজও ভক্তদের মুখে ফেরে। জানুন বিস্তারিত।

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Joy Kali Temple

Joy Kali Temple: শহর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী কালী মন্দির।

Joy Kali Temple: উত্তর কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত মোড়— শ্যামবাজার। আজকের শহুরে কোলাহলের মাঝেও ইতিহাসের এক টুকরো নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শ্যামবাজার জয়কালী মন্দির। আনুমানিক ৪৫০ বছরেরও বেশি পুরনো এই মন্দিরকে ঘিরে আজও ঘুরে বেড়ায় বহু কাহিনি। যার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়, দেবীর ভোগ। আর, সেই ভোগে নাকি দেবীকে দেওয়া হয়েছিল, 'ডিম'।

Advertisment

ইতিহাসের ঝলক

জনশ্রুতি অনুযায়ী, যশোহরের সন্ন্যাসী লক্ষীনারায়ণ ব্রহ্মচারী এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তখনকার দিনে এই অঞ্চল জুড়ে ছিল ঘন জঙ্গল, নির্জন শ্মশান আর বয়ে চলা আদি গঙ্গা। সেই সময় থেকেই নাকি জয়কালী দেবীর পুজো শুরু হয়েছিল এই স্থানে। ক্রমে গড়ে ওঠে শ্যামবাজার অঞ্চল। কিন্তু, এই প্রাচীন মন্দির আজও স্থানীয় মানুষের ভরসা এবং বিশ্বাসের কেন্দ্রস্থল।

আরও পড়ুন- রঘুর নামে দক্ষিণবঙ্গের নানা প্রান্তে কালীমন্দির! কোনটা সত্যি আর গল্প, বোঝা দায়

Advertisment

হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, মুরগির ডিমকে অশুভ বলে মনে করা হয় এবং পুজোতে এর ব্যবহার একপ্রকার নিষিদ্ধ। কিন্তু একবার নাকি এই মন্দিরে দেবীকে ডিম ভোগ দেওয়া হয়েছিল — এবং সেটিই পরবর্তীতে জল্পনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। শোনা যায়, বহু বছর আগে একদুপুরে এক ডিম ব্যবসায়ী ব্যবসার মঙ্গলের আশায় দেবীর কাছে উপস্থিত হয়েছিলেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল দেবীর উদ্দেশ্যে একটি মুরগির ডিম নিবেদন করবেন। মন্দির কর্তৃপক্ষ বিষয়টি শুনে আপত্তি জানালেও, ব্যবসায়ী অনড় ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'মা যদি সত্যিই সবার প্রার্থনা শোনেন, তবে আমার ডিমই হবে আমার ভোগ।'

আরও পড়ুন- কেন দেবীকে দক্ষিণা কালী বলা হয়? জানুন এর আসল রহস্য

শেষমেশ তিনি মন্দিরের বাইরে থেকে সেই একটি ডিম মা কালীর উদ্দেশ্যে নিবেদন করেছিলেন। আশ্চর্যের বিষয়, জনশ্রুতি অনুযায়ী, কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর ব্যবসার ব্যাপক উন্নতি ঘটে! স্থানীয়রা তখন থেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেন, দেবী জয়কালী ডিম ভোগ গ্রহণ করেছিলেন। তবে বর্তমান মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয় — এই কাহিনি মূলত একটি লোকগাথা বা গল্প, এর কোনও ভিত্তি নেই। মন্দিরে নিয়মিতভাবে প্রচলিত শুদ্ধ নিরামিষ ভোগ-ই আজও দেবীকে নিবেদন করা হয়।

আরও পড়ুন- দেবী এখানে অমর প্রেমকাহিনির সাক্ষী! প্রেমিক যুগলের নামেই পরিচিত

তবুও, ভক্তদের মুখে এই 'ডিম ভোগের কাহিনি' আজও বেঁচে আছে। ধর্মবিশ্বাস আর লোককথার এক অদ্ভুত মেলবন্ধন হিসেবে তা রয়ে গিয়েছে। শ্যামবাজার জয়কালী মন্দিরের স্থাপত্য মোগল আমলের ছোঁয়া বহন করে। ছোট অথচ শৈব-শাক্ত মিলিত ধাঁচে নির্মিত এই মন্দিরে প্রতিদিন শতাধিক ভক্ত আসেন। 

আরও পড়ুন- দেবী জাগ্রত, আজও নিশুতি রাতে বন্ধ মন্দির থেকে ভেসে আসে চণ্ডীপাঠের শব্দ!

অমাবস্যা, কালীপুজো ও শনিবারে এখানে দর্শনার্থীর সংখ্যা বিপুল বেড়ে যায়। ভক্তদের বিশ্বাস, যিনি অন্তর থেকে দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন, তাঁকে মা নিরাশ করেন না। প্রতিদিন সকালে অফিসগামী মানুষ, দোকানদার কিংবা ছাত্রছাত্রী— সকলে একটু সময়ের জন্য থেমে মাথা ঝুঁকিয়ে নেন এই জয়কালী মন্দিরের সামনে। 'ডিম ভোগ' সত্য না কিংবদন্তি, তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, শ্যামবাজার জয়কালী মন্দির আজও কলকাতার একটি জীবন্ত ঐতিহ্য।

Kali Temple