/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/30/sukumar-roy-2025-10-30-12-25-09.jpg)
Sukumar Roy: সুকুমার রায়।
Sukumar Ray Birthday: 'মাথায় কত প্রশ্ন আসে, দিচ্ছে না কেউ জবাব তার…' — ছোটবেলা থেকে সাহিত্যপ্রেমী বাঙালি এই পংক্তিগুলোর সঙ্গে পরিচিত। আজ যার জন্মদিন, তিনিই সেই ছন্দের জাদুকর — সুকুমার রায়।
এক বিরল প্রতিভা
১৮৮৭ সালের ৩০ অক্টোবর, তিনি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, মা বিধুমুখী দেবী। তাঁর সন্তান হলেন সত্যজিৎ রায়। সাহিত্য, প্রযুক্তি ও শিল্প—সব ক্ষেত্রেই সুকুমার রায় ছিলেন এক বিরল প্রতিভা।
সিটি স্কুল থেকে প্রবেশিকা পাস করে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে রসায়নে অনার্স নিয়ে বিএসসি করেন (১৯১১)। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ নিয়ে বিলেত যান প্রিন্টিং টেকনোলজি ও ফটোগ্রাফিতে উচ্চশিক্ষার জন্য।
ম্যাঞ্চেস্টারের স্কুল অফ টেকনোলজিতে তিনি তাঁর পিতার উদ্ভাবিত হাফটোন প্রিন্টিং পদ্ধতির কার্যকারিতা প্রমাণ করে সকলের প্রশংসা অর্জন করেন।
লন্ডনে থাকাকালীন তিনি 'East and West Society'-তে 'Spirit of Rabindranath' প্রবন্ধ পাঠ করেন। যা পরে 'The Quest' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তিনি রয়্যাল ফোটোগ্রাফিক সোসাইটি (Royal Photographic Society)-র ফেলো হন। এই ফেলোশিপ প্রাপ্তি ছিল সেই সময়ের এক বিরল সম্মান।
আরও পড়ুন- বৃহস্পতিবারই জগদ্ধাত্রী নবমী! এই টোটকা মানলে জীবনে মিলবে চূড়ান্ত সফলতা
১৯১৩ সালে দেশে ফিরে তিনি 'ইউ রায় অ্যান্ড সন্স'-এ যোগ দেন এবং পিতার মৃত্যুর পর 'সন্দেশ' পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব নেন। 'ননসেন্স ক্লাব' ও 'মানডে ক্লাব'-এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি বুদ্ধিজীবীদের জন্য মুক্ত চিন্তার এক মঞ্চ তৈরি করেন, যা ছিল তাঁর সময়ের থেকে অনেক এগিয়ে।
আরও পড়ুন- শ্রীরামপুরের বল্লভপুর শ্মশান কালী, এই দেবীর কাছে কেন বাড়ছে ভক্তদের ভিড়?
সুকুমার রায় শুধু ছড়া লিখতেন না, তিনি ছন্দের মধ্যে যুক্তি, ব্যঙ্গ ও সমাজচেতনাকে মিশিয়ে এক নতুন ধারার সাহিত্য গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থগুলি হল— আবোল তাবোল (১৯২৩), হযবরল (১৯২৪), পাগলা দাশু (১৯৪০), বহুরূপী (১৯৪৪), খাই খাই (১৯৫০)। কেবল শিশুদেরই নয়, এসব লেখায় তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত হাস্যরস এবং ভাষার জাদু প্রাপ্তবয়স্কদেরও ভাবায়।
আরও পড়ুন- রাজাদের ইতিহাস আর প্রকৃতির মিলনস্থল, ভারতের এই অতুলনীয় পর্যটনকেন্দ্রে দেখার মত ঠিক কী আছে?
তিনি ছিলেন একাধারে লেখক, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী ও প্রযুক্তিবিদ। তাঁর লেখায় ফুটে উঠত জীবনের হাস্যরস, আবার ফুটে উঠত সমাজের প্রতি সূক্ষ্ম কটাক্ষও। স্বল্পায়ু জীবনে তিনি যা সৃষ্টি করে গিয়েছেন, তা আজও বাংলা সাহিত্যের এক অপরিহার্য সম্পদ।
আরও পড়ুন- রাতের শুনশান রাস্তায় মদ খাওয়ানোর চেষ্টা বাঘকে, ভাইরাল পেঞ্চের যুবক!
১৯২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মাত্র ৩৬ বছর বয়সে কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু মৃত্যুর পরও তিনি তাঁর লেখায় জীবিত থেকে গিয়েছেন। 'বলবে সবাই, মুখ্যু ছেলে, বলবে আমায় গো গর্ধভ!'— তাঁর এই লাইনগুলো আজও আমাদের হাসায়, ভাবায়, শেখায় যে কৌতূহল আর প্রশ্ন করাকে ভুলে যাওয়া কখনও উচিত নয়।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us