Summer Curd Tips: গরমকাল এলেই শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য আমরা দইকে বেছে নিই। তবে জানেন কি, সঠিক নিয়মে দই না খেলে তা হতে পারে বিপদের কারণও? আয়ুর্বেদ বলছে—দই যতটা ঠান্ডা মনে হয়, ততটা নয়।
দই কি সত্যিই ঠান্ডা?
আমরা দইকে সাধারণত ঠান্ডা খাবার হিসেবেই দেখি, কারণ এটি ফ্রিজ থেকে খাওয়া হয় এবং স্বাদে মৃদু ও প্রশান্তিকর। তবে আয়ুর্বেদের মতে, দই শরীরে প্রবেশের পর পিত্ত ও কফ বাড়াতে পারে, অর্থাৎ শরীরের ভিতরে এটি উষ্ণ প্রকৃতির মত আচরণ করতে পারে। ডা. প্রতাপ চৌহান এই প্রসঙ্গে বলেন, 'দই হজমের পর তাপ উৎপন্ন করে এবং ভুল সময়ে খেলে এটি অ্যাসিডিটি, গ্যাস, এবং শ্লেষ্মা সৃষ্টি করতে পারে।'
আরও পড়ুন- এই প্রাণীর সারা শরীরে শত শত চোখ! চেনেন এই প্রাণীকে?
গ্রীষ্মকালে দই খাওয়ার আদর্শ সময়
গরমকালে দই খাওয়ার সেরা সময় হল দুপুরবেলা (Lunch time)। কারণ, সেই সময় হজম শক্তি সবচেয়ে বেশি থাকে। রাতে খাবেন না। কারণ এটি ভারী, শ্লেষ্মা সৃষ্টি করতে পারে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
আরও পড়ুন- লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য এড়িয়ে চলুন এই ৩ খাবার, নাম শুনলে অবাক হয়ে যাবেন!
কীভাবে খাবেন দই?
শুধু দই খাওয়া ঠিক নয়। পেঁয়াজ, মাছ, বা ভারী মাংসজাত খাবারের সঙ্গে দই খাওয়াও ঠিক নয়। বরং এক চিমটি ভাজা জিরা ও গোলমরিচ মিশিয়ে দই খান। দইকে চাস/বাটারমিল্কে রূপান্তর করে খান। এতে হজম ভালো হয়। মাথায় রাখবেন, বাটারমিল্ক বানাতে গেলে ১ কাপ দইয়ের সঙ্গে ২ কাপ জল কিছুটা জিরার গুঁড়ো এবং হালকা লবণ মিশিয়ে নেবেন। তাহলেই পারফেক্ট বাটারমিল্ক বা ঘোলের মত তৈরি হবে।
আরও পড়ুন- রান্নাঘরের ভেষজ, তা দিয়েই ঘাড়ের কালো দাগ দূর করুন চিরতরে!
কারা দই খাবেন না
যাঁদের অ্যাসিডিটি, কাশি, ফুসকুড়ি বা সাইনাসের সমস্যা আছে, যাঁদের ত্বকে ব্রণ বা প্রদাহ আছে, যাঁদের শরীরে তাপ ও শ্লেষ্মা বেশি জমে, তাঁরা খাবেন না। এই গ্রীষ্মে প্রতিদিনের রুটিনে দই বাদ দিয়ে জিরা মেশানো বাটারমিল্ক খেতে পারেন। আয়ুর্বেদ মতে, গ্রীষ্মকালে পিত্ত দোষ বাড়ে, যা শরীরকে সহজেই উত্তপ্ত করে তোলে। দই যদিও স্বাস্থ্যকর, কিন্তু তা পিত্তদোষকে আরও উসকে দিতে পারে যদি তা ভুল সময়ে ও ভুল পদ্ধতিতে খাওয়া হয়।
আরও পড়ুন- যদি আপনার ঘরে এই জিনিসগুলো থাকে, ঘর ভরবে সুবাসে!
পুষ্টিবিদদের মতামত
ডায়েটিশিয়ান কণিকা মালহোত্রা বলেন, 'দইয়ের মধ্যে প্রোবায়োটিক এবং জলীয় উপাদান থাকলেও, এটি সরাসরি শরীর ঠান্ডা করে এমন কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। তবে এর হাইড্রেটিং প্রভাব শরীরকে স্বস্তি দিতে পারে।' দই খাওয়ার ক্ষেত্রে 'সময়' ও 'পদ্ধতি' অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রীষ্মকালে, দুপুরে ভাজা মশলা মিশিয়ে বা বাটারমিল্কের আকারে দই খান। এতে হজমও ভালো হবে, আবার শরীর থাকবে সতেজ এবং হালকা। তবে আপনার যদি আগে থেকেই পেটের সমস্যা, কাশি বা ত্বকের সমস্যা থাকে, তাহলে এই গরমে দই না খাওয়াই ভালো। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবান থাকতে দই খান, কিন্তু সেটা আয়ুর্বেদের নিয়ম মেনে খান। এমনটাই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।