/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/13/anukul-thakur-2025-09-13-19-30-14.jpg)
Anukul Thakur: অনুকূল ঠাকুর।
SatSang Anukul Thakur: ১৪ সেপ্টেম্বর ১৮৮৮ সালে পাবনা জেলার হিমায়তপুর গ্রামে জন্ম নেন অনুকূলচন্দ্র চক্রবর্তী, যিনি পরবর্তীতে ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র নামে পরিচিত হন। ছোটবেলা থেকেই তিনি মানবসেবামূলক কাজ এবং আধ্যাত্মিক চর্চায় আগ্রহী ছিলেন। তাঁর পিতা শিবচন্দ্র চক্রবর্তী এবং মাতা মনমোহিনী দেবী ছিলেন ধর্মপরায়ণ।
শিক্ষা এবং চিকিৎসক জীবন
১৮৯৩ সালে তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাবনা ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা শেষে কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল স্কুলে ভর্তি হয়ে হোমিওপ্যাথিতে ডিগ্রি অর্জন করেন। চিকিৎসক জীবনে তিনি দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সেবায় নিয়োজিত হন।
আরও পড়ুন- মহালয়া থেকে লক্ষ্মীপুজো, জানুন এবার কোন তিথি কখন শুরু আর শেষ!
ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের আধ্যাত্মিক জীবন শুরু হয় তাঁর শিষ্যদের মধ্যে অনুপ্রেরণা ছড়িয়ে দিয়ে। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সৎসঙ্গ আশ্রম, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষ গড়ে তোলা। সৎসঙ্গের চারটি স্তম্ভ – শিক্ষা, কৃষি, শিল্প, সুবিবাহ। এর মাধ্যমে সমাজে নৈতিকতা, উন্নতি এবং ঐক্যের বীজ বপন করেছিলেন তিনি। 'ইষ্টভৃতি' নামে এক বিশেষ প্রথার মাধ্যমে সৎসঙ্গ আশ্রমে অর্থ সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, যা সেই সময়ে এক অভিনব উদ্যোগ হিসেবে পরিচিতি পায়।
আরও পড়ুন- বিদেশে যাবেন, মাত্র ৩০ সেকেন্ডে চেকিংয়ের ঝামেলা শেষ, জেনে নিন কায়দা
অনুকূলচন্দ্র দেওঘরে তপোবন বিদ্যালয়, দাতব্য চিকিৎসালয়, ছাপাখানা, প্রকাশনা সংস্থা ও ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ প্রতিষ্ঠা করেন। আশ্রমটি হয়ে ওঠে আধুনিক আধ্যাত্মিক ও সামাজিক উন্নয়নের কেন্দ্র। এখানে ব্রহ্মচর্য্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ ও সন্ন্যাস – এই চার জীবনধারার সুন্দর সমন্বয় ঘটানো হয়েছিল। ফলে প্রাচীন ঋষিদের তপোবনের আধুনিক রূপ তৈরি হয়েছিল সৎসঙ্গ আশ্রমে।
আরও পড়ুন- চাউমিন তো অনেক খেয়েছেন, কখনও এভাবে ট্রাই করেছেন? মুখে লেগে থাকবে!
ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন ভারতের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব- সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিপ্লবী নেতা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধীজি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, গুলজারিলাল নন্দা- এঁরা সকলেই সৎসঙ্গ আশ্রম দর্শন করে গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রায় ৪৬টি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল– সত্যানুসরণ, অনুশ্রুতি (৬ খণ্ড), শাশ্বতী (৩ খণ্ড), পুণ্যপুথি, চলার সাথী, বিবাহ বিধায়না, সমাজ সন্দীপন। এই রচনাগুলোতে ধর্ম, সমাজসংস্কার, মানবগঠন এবং নৈতিক আদর্শের দিশা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন- এই ভারতীয় খাবারগুলো স্বাস্থ্যকর! আপনিও খেতে পারেন, দেখুন সেগুলো কী কী
২৬ জানুয়ারি ১৯৬৯ সালে দেওঘরে তিনি পরলোকগমন করেন। তাঁর রেখে যাওয়া আশ্রম, ভাবনা ও দর্শন আজও লক্ষ লক্ষ ভক্তকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। সৎসঙ্গ আশ্রম আজও আধ্যাত্মিক সাধনা, শিক্ষা ও সমাজসেবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র শুধু এক আধ্যাত্মিক গুরুই নন, তিনি ছিলেন একজন সমাজসংস্কারক, শিক্ষাবিদ ও মানবতার পথপ্রদর্শক। তাঁর সৎসঙ্গ দর্শন আজও প্রাসঙ্গিক এবং মানবগঠনের মূলমন্ত্র হিসেবে বিবেচিত।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us