Alauddin Khan: সংগীত সাধনার অনন্য গুরু, ১৬৩তম জন্মদিনে স্মরণে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ!

Alauddin Khan: আজ ৮ অক্টোবর ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ'র ১৬৩তম জন্মদিন। সুরসম্রাট উপাধিতে খ্যাত এই কিংবদন্তি সংগীত সাধক উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সংগীতকে বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দিয়েছিলেন।

Alauddin Khan: আজ ৮ অক্টোবর ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ'র ১৬৩তম জন্মদিন। সুরসম্রাট উপাধিতে খ্যাত এই কিংবদন্তি সংগীত সাধক উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সংগীতকে বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দিয়েছিলেন।

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Ustad Alauddin Khan 1

Ustad Alauddin Khan: ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ।

Ustad Alauddin Khan Birth Anniversary: আজ ৮ অক্টোবর, ২০২৫ — সংগীতজগতের কিংবদন্তি সাধক ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ'র ১৬৩ তম জন্মদিন। ১৮৬২ সালের এই দিনে তৎকালীন ত্রিপুরা প্রদেশের, বর্তমান বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে এক সংগীতপ্রেমী পরিবারে তাঁর জন্ম হয়। পিতা সদর হোসেন খাঁ (সদু খাঁ) নিজেও ছিলেন বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ। সেই সুরের ঐতিহ্যই পরবর্তীকালে আলাউদ্দিন খাঁ'কে বিশ্বের দরবারে 'সুরসম্রাট' উপাধি এনে দেয়।

Advertisment

ছোট থেকেই সুরের খোঁজে

মাত্র ১০ বছর বয়সে তিনি বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন সুরের (Music) খোঁজে। পথে পথে জারি, সারি, বাউল, ভাটিয়ালি, কীর্তন, পাঁচালি—এই সব লোকসংগীত শুনে তিনি নিজেকে সংগীতের মূলে ডুবিয়ে দেন। পরে কলকাতায় গিয়ে সংগীতগুরু গোপালকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের শিষ্য হন। সাত বছর কণ্ঠসংগীতের সাধনা করার পর তিনি সম্পূর্ণভাবে যন্ত্রসংগীতে মনোনিবেশ করেন। 

আরও পড়ুন- আর ওষুধ না, সিজন চেঞ্জে এই ঘরোয়া টোটকায় রোগভোগ থেকে বাঁচান নিজেকে!

Advertisment

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ অসংখ্য দেশি ও বিদেশি বাদ্যযন্ত্র বাজানো শিখেছিলেন—বাঁশি, সেতার, ম্যান্ডোলিন, বেহালা, তবলা, মৃদঙ্গ, এমনকী স্যাক্সোফোন এবং ট্রাম্পেটও তিনি বাজাতে পারতেন। পরবর্তীতে তিনি বিখ্যাত সরোদবাদক ওস্তাদ আহমেদ আলি খাঁ ও ওস্তাদ ওয়াজির খাঁ-র কাছে দীর্ঘদিন সরোদে তালিম নেন। প্রায় ৩০ বছর তিনি রামপুরে থেকে সংগীতের সূক্ষ্মতম দিকগুলো আয়ত্ত করেন।

আরও পড়ুন- চিতাবাঘের ছোপ মার্কা পোশাক, পরলে কী অর্থ দাঁড়ায় জানেন? শুনলে অবাক হয়ে যাবেন!

মাইহার ঘরানা

১৯১৮ সালে মাইহারের রাজা ব্রিজনাথ তাঁকে রাজসভার সংগীতগুরু হিসেবে নিয়োগ করেন। সেখানেই শুরু হয় ‘মাইহার ঘরানা’ – যা আজ ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের এক অমর অধ্যায়। তাঁর প্রবর্তিত ‘দারা দারা’ পদ্ধতি সরোদ বাদনে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনে। তাঁর ছাত্রদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিখ্যাত সংগীতজ্ঞ পণ্ডিত রবিশঙ্কর, আনন্দমণি দত্ত, নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর পুত্র আলি আকবর খাঁ। 

আরও পড়ুন- দিঘার পথেই দুর্গ! পশ্চিম মেদিনীপুরের রহস্যঘেরা কুরুম্বেরা ফোর্টের ইতিহাস শুনলে অবাক হয়ে যাবেন

১৯৩৫ সালে নৃত্যগুরু উদয় শংকর-এর সঙ্গে তিনি ইউরোপ সফরে যান। সেখানেই প্রথমবার পাশ্চাত্য শ্রোতাদের সামনে ভারতীয় রাগসংগীত উপস্থাপন করেন। তাঁর পরিচালিত সংগীতচিত্র ‘কল্পনা’ ভারতীয় চলচ্চিত্রে শাস্ত্রীয় সংগীতের এক মাইলফলক হয়ে ওঠে। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ শুধু বাজাতেন না—উদ্ভাবনও করতেন। তাঁর তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়েছিল কয়েকটি নতুন বাদ্যযন্ত্র যেমন— চন্দ্র সারং, সুর শৃঙ্খলা। তিনি বহু নতুন রাগও সৃষ্টি করেন—হেমন্ত, দুর্গেশ্বরী, মেঘবাহার, প্রভাতকেলী, মেহ-বেহাগ, ধবল শ্রী, রাজেশ্রী, মানঝ খাম্বাজ প্রভৃতি। 

রও পড়ুন- পুজোর ছুটিতে ঘুরে আসুন ঝান্ডি, মোহময়ী দৃশ্য আর কাঞ্চনজঙ্ঘা মন ভরাবেই

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ জীবদ্দশায় পেয়েছেন অসংখ্য স্বীকৃতি—সংগীত নাটক আকাদেমি ফেলো (১৯৫৪), পদ্মভূষণ (১৯৫৮), দেশিকোত্তম, বিশ্বভারতী (১৯৬১), পদ্মবিভূষণ (১৯৭১), তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা স্বরূপ দিল্লি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে আজীবন সদস্যপদে ভূষিত করেছিল। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ১৯৭২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের মাইহারে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুর পরেও মাইহার ঘরানার ঐতিহ্য সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর ছাত্রদের মাধ্যমে। 

birth anniversary Music